Bangla Jago Desk: মহালয়ার ভোরে চণ্ডীপাঠ ও মহিষাসুরমর্দিনীর সুর ভেসে আসা মানেই দুর্গাপুজো শুরু। এখন তো প্রায় সব বড় পুজোর উদ্বোধন হয়ে যায় মহালয়াতেই। কিন্তু এই শুভ অনুষ্ঠানের সঙ্গে প্রয়াত পিতৃপুরুষের তর্পণ কেন জড়িয়ে সে প্রশ্ন অনেকের মনে উঠতে পারে। পণ্ডিতদের অনেকের মতে তর্পণ এবং পার্বণ শ্রাদ্ধের প্রশস্ত দিন হিসেবে মহালয়া পারলৌকিক ক্রিয়াকর্মের তিথি বলে নির্দিষ্ট হওয়ায় একে ‘শুভ’ বলে গ্রাহ্য না করাই ভালো। জানাযায়- ত্রেতা যুগে ভগবান শ্রীরামচন্দ্র অকালে দেবিকে আরাধনা করেছিলেন লঙ্কা জয় করে সীতাকে উদ্ধারের জন্য। আর সে সময় ছিলও বসন্ত কাল। তাই এই সময়ের দুর্গা পূজাকে বাসন্তি পূজা বলা হয়।
শ্রীরামচন্দ্র অকালে-অসময়ে পূজা করেছিলেন বলে এই শরতের পূজাকে দেবির অকাল-বোধনও বলা হয়।সনাতন ধর্মে বলা হয়- কোন শুভ কাজ করতে গেলে, যেমন- বিবাহ করতে গেলে প্র্রয়াত পূর্ব পুরুষদের, সাথে সমগ্র জীব-জগতের জন্য তর্পণ করতে হয়, কার্যাদি-অঞ্জলি প্রদান করতে হয় । এক্ষেত্রে তর্পণ মানে খুশি করা । ভগবান শ্রীরাম লঙ্কা বিজয়ের আগে এমনটাই করেছিলেন ।আবার মহাভারতে অন্য ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। মহাভারত অনুযায়ী, মৃত্যুর পর কর্ণের আত্মা পরলোকে গমন করলে তাঁকে খাদ্য হিসেবে স্বর্ণ ও রত্ন দেওয়া হয়।
দেবরাজ ইন্দ্রকে কর্ণ এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে ইন্দ্র বলেন যে দানবীর কর্ণ সারা জীবন স্বর্ণ ও রত্ন দান করেছেন, কিন্তু প্রয়াত পিতৃগণের উদ্দেশ্যে কখনও খাদ্য বা পানীয় দান করেননি। তাই স্বর্গে খাদ্য হিসেবে তাঁকে সোনাই দেওয়া হয়েছে। তখন কর্ণ জানান, যেহেতু নিজের পিতৃপুরুষ সম্পর্কে তিনি অবহিত ছিলেন না, তাই ইচ্ছাকৃত ভাবেই পিতৃগণের উদ্দেশ্যে খাদ্য দান করেননি। এই কারণে কর্ণকে ১৬ দিনের জন্য মর্ত্যে ফিরে পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করার অনুমতি দেওয়া হয়। এই পক্ষই পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত হয়।
Free Access