Bengla Jago Desk: আজ থেকে প্রায় সাড়ে ৩০০ বছর আগে শুরু হয়েছিল পুজো। কালের বিবর্তনে রাজবাড়ির সেই পুজো আজ হয়ে উঠেছে স্থানীয়দের পুজো। সম্প্রীতির সুরে মালদা চাঁচল রাজবাড়ির পুজোয় মেতে ওঠে মানুষ। রাজবাড়ির একটি অংশে তৈরি হয়েছে মহকুমা আদালত। আর একটি অংশে আছে কলেজ। তখন সতেরো শতকের শেষভাগ। সেই সময় উত্তর মালদার বিস্তীর্ণ এলাকার রাজা ছিলেন রামচন্দ্র রায়চৌধুরি। শুধু বাংলা নয়, বিহারের কিছু অংশও তাঁর রাজত্বের অন্তর্ভুক্ত ছিল। দোর্দণ্ডপ্রতাপ কিন্তু প্রজাদরদি এবং ধর্মপ্রাণ হিসেবে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়েছিল পূর্ব ভারত জুড়ে। কথিত আছে, একবার রাজা স্বপ্নাদেশ পান দেবী চণ্ডীর।
সেই স্বপ্নাদেশে মহানন্দার ঘাটে স্নান করতে যান তিনি। সেই সময় তাঁর হাতে চতুর্ভুজা অষ্টধাতুনির্মিত মূর্তি উঠে আসে। দেবী চণ্ডীর অষ্টধাতুর মূর্তি সতীঘাটা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে রাজবাড়িতে এনে প্রতিষ্ঠা করেন চাঁচলের রাজা রামচন্দ্র। সেদিন থেকেই রাজবাড়িতে শুরু হয় দেবীর নিত্যপুজো। তবে প্রথমে মহানন্দা নদীর পাড়ে মাটির ঘর ও খড়ের ছাউনি দিয়ে মন্দির তৈরি করে পুজো শুরু করা হয়েছিল। সময়ের সঙ্গে তা পরিবর্তন হয়েছে। পরবর্তীতে রাজপরিবারে পাকা দুর্গাদালান নির্মিত হয়। ততদিনে জায়গাটির নাম পরিবর্তিত হয়ে পাহাড়পুর হয়েছে।
প্রতিবছর এখানেই রাজবাড়ির দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত কথিত আছে, একসময় সতীঘাটায় মহানন্দার পশ্চিম পাড়ে মহামারী দেখা দিয়েছিল। তখন দেবী সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেছিলেন, গোধূলিলগ্নে বিসর্জনের সময় তাঁরা যেন মাকে আলো হাতে পথ দেখান। মাকে আলো দেখানোর পর থেকেই মহামারি দূর হয়। তখন থেকে প্রতিবছরই বিসর্জনের সময় সেখানকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ লণ্ঠন নিয়ে পথ দেখান মাকে। সেই রীতি আজও চলে আসছে। এই সম্প্রীতির সুরে আজও অটুট রাজবাড়ির পুজো।
Free Access