ad
ad

Breaking News

বিজেপি

NDA নাকি INDIA! অদ্ভুত আঁধার বিজেপি শিবিরে

Bangla Jago Desk: চব্বিশের সাধারণ নির্বাচনে কী হবে? বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার কি ফের একবার ক্ষমতায় আসবে? নাকি INDIA জোট এবার কেন্দ্রের মসনদ দখল করেই ফেলবে। আমরা নিরপেক্ষা সংবাদ মাধ্য হিসেবে কোনও মন্তব্য করবো না, কিন্তু কিছু ইতিহাস ও ফ্যাক্ট তুলে ধরবো, যা নিয়ে আপনারা বিশ্লেষণ করবেন এবং উত্তরটা পেয়ে যাবেন। তবে একটা কথা না […]

NDA vs INDIA: %%title%% %%page%% %%sep%% %%sitename%%

Bangla Jago Desk: চব্বিশের সাধারণ নির্বাচনে কী হবে? বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার কি ফের একবার ক্ষমতায় আসবে? নাকি INDIA জোট এবার কেন্দ্রের মসনদ দখল করেই ফেলবে। আমরা নিরপেক্ষা সংবাদ মাধ্য হিসেবে কোনও মন্তব্য করবো না, কিন্তু কিছু ইতিহাস ও ফ্যাক্ট তুলে ধরবো, যা নিয়ে আপনারা বিশ্লেষণ করবেন এবং উত্তরটা পেয়ে যাবেন। তবে একটা কথা না বলেই পারছি না, সেটা হল INDIA জোটকে কিন্তু ভয় পাচ্ছে বিজেপি। তার অন্যতম কারণ, বেজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব যে নীতিতে বিশ্বাস করে না, সেই নীতিই নিতে শুরু করে। হালের উদাহরণ যদি ধরেন সেটি হল, গ্যাসের দাম কমানো। রাখিবন্ধন উৎসবে দেশবাসীকে উপহার দেওয়া হয়েছে। এক ধাক্কায় দুশো টাকা কমানো হয়েছে। এখানে প্রশ্ন উঠতেই পারে, যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ফ্রি রেওড়ি বণ্টনের জন্য অরবিন্দ কেজরিওয়াল থেকে শুরু করে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেসসহ একাধিক দলকে তুলোধনা করেছে, তিনি আচমকা এমন একটা সিদ্ধান্ত নিতে গেলেন কেন? হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন, বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের ভয়। আর তার আঁচ পেয়েছেন, কর্ণাটকে।

এমন কী চলতি বছরে পাঁচ রাজ্যের ভোটেও, সেখানে গ্রামীণ স্তরে প্রবল বিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে বিজেপি নেতৃত্ব। তাই গ্যাসের দাম ২০০ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আপনারা হয়তো ভাবছেন, কাহিনী এখানেই শেষ, তাহলে ভুল ভাবছেন। মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গ্যাসের দাম কমানোর আগে থেকেই কর ছাড় দিয়ে গ্যাসের দাম কমিয়েছিল। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রেওড়ি সংস্কৃতির বিরোধিতা করলেও, রাজ্যস্তরে সেই বার্তাকে পাত্তাই দেওয়া হয়নি। আর এই পাত্তা না দেওয়ার বড় কারণ, ২০০৪ সালের ইতিহাসের ভূত তাড়া করে বেড়াচ্ছে। সেই সময় ইন্ডিয়া সাইনিং ক্যাম্পেন যেভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছিল, এবারেও সেটা পড়বে নাতো? শীর্ষ নেতৃত্ব টের পেয়েছে, চন্দ্রযান ৩ আন্তর্জাতিক স্তরে বাহবা কুড়লেও, বা এলিট ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে গর্বের হলেও, দেশের একটা বড় সংখ্যক গরিব মানুষের কাছে, তার কোনও প্রভাব পড়েনি। শুনতে খারাপ লাগলেও, এটাই অপ্রিয় সত্যি।

২০২৪। দেশের সাধারণ নির্বাচন। বিজেপি বিরোধী শিবির যতটা আত্মবিশ্বাসী হচ্ছে, ঠিক ততটাই ভঙ্গুর অবস্থায় পৌঁছচ্ছে বিজেপি নেতৃত্ব। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যে রাজ্যগুলিতে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে, সেই রাজ্যগুলিতে পায়ের তলায় মাটি সরতে শুরু করেছে। পাশাপাশি আগামী পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সেই ভর্তুকি ব্যবস্থার পথেই হাঁটতে হচ্ছে। যে ভর্তুকি ব্যবস্থাকে তীব্র আপত্তি জানিয়ে এসেছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব, অবশেষে সেই ব্যবস্থাকেই আপন করতে হচ্ছে। কিন্তু কারণটা কী?

উত্তর লুকিয়ে আছে ইতিহাসে। ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় এসেছিল এনডিএ সরকার। সেবার একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। জোট সরকার হলেও, একাধিক মাইল ফলক প্রকল্প নিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। তার মধ্যে অন্যতম, সোনালি চতুর্ভুজ প্রকল্প এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা। সেই প্রথম ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিল পাকা রাস্তা। শহরের সঙ্গে ভারতের বহু প্রত্যন্ত গ্রামের সংযোগ ঘটেছিল। সর্বশিক্ষা অভিযানেও ছাপ রেখেছিল যথেষ্ট। পাশাপাশি বিদেশনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হয়েছিল। তারপরেই শুরু হয়েছিল, ফিল গুড ফ্যাক্টর এবং ইন্ডিয়া সাইনিং ক্যাম্পেন। আশা ছিল, ২০০৪ সালে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। কিন্তু হল না, মুখ থুবড়ে পড়ল এনডিএ। ক্ষমতায় এলো কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন প্রথম ইউপিএ সরকার। ২০০৫ সালে নেওয়া হয়, জনমুখী এক প্রকল্প মহাত্মা গান্ধী জাতীয় কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্প। ইউপিএ সরকারকে এক নয়া উড়ান দিল। তার ডিভিডেন্ট মিলেছিল  ইউপিএ টু সরকারের ক্ষেত্রে। দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসে ইউপিএ। কিন্তু যে ভুলটি করেছিল বিজেপি, ইন্ডিয়া শাইনিং ক্যাম্পেনে, সেই একই ভুল হয়েছিল, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দরিদ্র মানুষের কাছে, সামাজিক প্রকল্পগুলি যে পৌঁছছিল না, তা আঁচ করতে পারেনি। সেই সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছিল দুর্নীতি। ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে সেই ছাই চাপা আগুন আরও একবার জেগে উঠতে শুরু করেছে।

বিদেশনীতিতে ভারত যতটা শক্তিশালী হয়েছে, মেক ইন ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে যতটা স্বাক্ষর রেখেছে, অর্থনীতির ক্ষেত্রে যে নয়া দিশা দেখিয়েছে, তা এক বাক্যে প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু মুদ্রার অন্যপীঠ যে ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে, সেদিকে নজরই দিতে পারেনি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তার বড় উদাহরণ, উজ্জ্বলা প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্নের প্রকল্প। পরিসংখ্যান বলছে, নরেন্দ্র মোদি এই প্রকল্প ঘোষণার পরেই ৯ কোটি ৫৮ লক্ষ গরিব নাগরিক এই প্রকল্পের আওতায় এসেছিলেন। কিন্তু এক বছরের মধ্যেই যে রিপোর্ট সামনে এসেছে, তা ভয়ঙ্কর। ২০২১-২২ সালের পরিসংখ্যান বলছে প্রায় এক কোটি মানুষ, উজ্জ্বলা প্রকল্পের গ্যাস রিফিলই করাননি। অর্থাৎ, তাঁরা ফের ফিরে গিয়েছে, প্রাচীন চুলা পদ্ধতিতে।

কাহিনী এখানেই শেষ নয়, একই চিত্র আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ক্ষেত্রেও। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের আর এক প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারত। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পারিবারিক বীমা। যদিও বাস্তব ছিত্র বলছে, বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে বহু মানুষ এই প্রকল্পের তেমন কোনও সুবিধাই পাননি। বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে কেন্দ্রের স্বাস্থ্য বীমার কোনও গুরুত্ব নেই। মোদ্দা কথা হল, বিজেপি সরকারের আমলে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গরিব মানুষদের জন্য যে জনমুখী প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে।  অন্যদিকে, রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রার পর যে নয়া কৌশল নিয়েছে, তা আর পাঁচটা জনপ্রিয় ইউটিউবারদের মতো। তাঁকে দেখা যাচ্ছে, ট্রাক ড্রাইভারদের সঙ্গে কথা বলতে, গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে, কোনওবা মোটরবাইক মেকানিকদের সঙ্গে কথা বলতে। তিনি চুপিসারে দেশের সেই স্তরে মেলামেশা শুরু করেছেন, যাদের আঙুলের জোরেই ক্ষমতার সমীকরণ বদলে যায়।  আর এই অঙ্কই এখন বড় কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপির কাছে। ২০০৪ সালের ইতিহাস ২০২৪ সালেও হবে কিনা তা হয়তো সময়ই বলবে। কিন্তু অশনি সঙ্কেতের কালো ছায়া যে বিজেপির শীর্ষনেতৃত্বকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তা বলাই যায়।