ad
ad

Breaking News

সাবর্ণ রায়চৌধুরী নাকি কোচবিহারের বড়দেবী! কোনটি প্রাচীনতম দুর্গাপুজো বাংলার ইতিহাসে?

Bangla Jago Desk: বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত মানুষের ঢল থাকবে শহরের রাজপথে। সবমিলিয়ে মহানগরের প্রতিটি প্রান্তে পুজোর আমেজ। তবে বর্তমানে থিমপুজো বা সার্বজনীন পুজোর ভিড়েও বনেদি বাড়ির পুজোগুলির জৌলুস এখনও বর্তমান। অনেকেই বলে এই জৌলুস কমে গিয়েছে বলে আক্ষেপ করেন। হয়তো বনেদি বাড়ির পুজোর সংখ্যা কমেছে ঠিকই, কিন্তু তাই বলে সেই […]

Bangla Jago Desk: বাতাসে পুজো পুজো গন্ধ। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত মানুষের ঢল থাকবে শহরের রাজপথে। সবমিলিয়ে মহানগরের প্রতিটি প্রান্তে পুজোর আমেজ। তবে বর্তমানে থিমপুজো বা সার্বজনীন পুজোর ভিড়েও বনেদি বাড়ির পুজোগুলির জৌলুস এখনও বর্তমান। অনেকেই বলে এই জৌলুস কমে গিয়েছে বলে আক্ষেপ করেন। হয়তো বনেদি বাড়ির পুজোর সংখ্যা কমেছে ঠিকই, কিন্তু তাই বলে সেই ঐতিহ্যের ভাটা কিন্তু কমেনি। মল্লিকবাড়ি, লাটুবাবু ছাতুবাবু, শীলবাড়ি কিংবা শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো আজও স্বমহিমায় চলছে।

তবে আপনি কী জানেন এই পুজোগুলির মধ্যে সবথেকে প্রাচীন দূর্গাপুজো কোনটি?  কলকাতার কোন বনেদি বাড়িতে প্রথম শুরু হয়েছিল দূর্গাপুজো। ১৬১০ সালে বরিশার সাবর্ণ রায়চৌধুরির বাড়িতে প্রথম দূর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়। এই পুজোর বয়স ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছে ৪০০ বছরের গণ্ডি। প্রথমে গোলপাতা এবং মাটি দিয়ে আটচালা মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর কালক্রমে সেটা পাল্টে সিমেন্টের তৈরি আটচালা হয়।  বর্তমানে এই পুজো ৮ জন উত্তরসূরির মধ্যে বিভক্ত হয়েছে। আটচালা বাড়ি, বড় বাড়ি, বেনাকি বাড়ি , মেজো বাড়ি, কালীকিঙ্কর ভবন, মাঝের বাড়ি পুজো। এছাড়াও বিরাটি ও নিমতার বাড়িতেও পুজো হয়। এখানে বিদ্যাপতি রচিত দুর্গাভক্তিতরঙ্গিনী রীতি-নিয়ম মেনে আজও পূজিত হচ্ছেন দশভূজা।

তবে কলকাতার মধ্যে এই পুজো সর্বপ্রথম হলেও রাজ্যস্তরে এই একই দাবি নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে। কারণ, কোচবিহারের বড়দেবীর পুজোও প্রাচীনকালের।  মহারাজা বিশ্বসিংহের পরিবারের দাবি, ১৫৩৩ সাল থেকে তাঁরা দূর্গাপুজো চালু করেছেন। অর্থাৎ বড়িশার জমিদারবাড়ির পুজো শুরু হওয়ার ৭৭ বছর আগে। তবে এই পুজোর দেবীর রূপ একটু অন্যরকমের। তত্কালীন সময়ে ময়না গাছের ডাল পুঁতে দেবীপুজো শুরু করেন রাজবাড়ির দুই ভাই বিশু এবং শিশু। এই পুজোর বিশেষত্ব হল দেবীর রূপ। মহিষাসুরমর্দিনীর গাত্রবর্ণ লাল, অসুরের গাত্রবর্ণ সবুজ। দেবীর বাহন সিংহ অসুরের এক পায়ে কামড়ে ধরেছে, অসুরের অপর দিকে হাত কামড়ে ধরেছে বাঘ। দেবীর দুই পাশে কার্তিক গনেশ, লক্ষ্মী সরস্বতীর বদলে দুই সখী জয়া ও বিজয়া। তাদের হাতে থাকে জ্বলন্ত মশাল। এই রণংদেহী রূপ দেখতে বিভিন্ন জ়ায়গা থেকে অগণিত মানুষ ভিড় জমান কোচবিহারে।

কথিত রয়েছে, একদা এই মন্দিরে নিয়মিত নরবলি হত। মহারাজা নরনারায়ণের আমলে এই নরবলি চালু হয়। পরবর্তীকালে নরবলির বীভৎসতা দেখে কোচবিহারের ১৯ তম মহারাজা নরেন্দ্রনারায়ণ পন্ডিতদের সঙ্গে আলোচনা করে নরবলি বন্ধ করে দেন। কিন্তু কোচবিহার রাজবংশের বড়দেবী দুর্গা নররক্ত না পেলে কুপিত হন। তাই প্রতি বছর মহাঅষ্টমীর রাতে এখানে এক বিশেষ ধরনের বলির ব্যবস্থা করা হয়। মহাষ্টমী ও মহানবমীর সন্ধিলগ্নে বড়দেবীর মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় ‘গুপ্তপূজা’। সেই সময় বাইরের লোকের প্রবেশ নিষিদ্ধ আছে। পুরোহিত এবং রাজবংশের প্রতিনিধিরাই মূলত থাকেন এই সময়ে। এখানে একজনকে তাঁর আঙুল কেটে কয়েক ফোঁটা রক্ত দিতে হয় দেবীর পদতলে। বলি দেওয়া হয় চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরী মানুষরূপী একটি পুতুলকে। বলির সময় প্রবল শব্দে  ঢাক বাজানো হয়। আজও এই ঐতিহ্য বহন করে চলেছে কোচবিহার।