ad
ad

Breaking News

Weather

আর্দ্র নয় শুষ্ক গরমে নাজেহাল বাংলা, মঙ্গলবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের দাপুটে ব্যাটিং, নিস্তার নেই এখনই

এবছর বাংলায় গরমের চরিত্র একদম আলাদা। গরমে দক্ষিণবঙ্গে বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা জলীয় বাষ্পভরা বাতাসই বেশি পরিচিত। এই হাওয়ার ফলে আর্দ্রতা বাড়ে, ঘাম বেশি হয়

Not wet, not dry, Bengal is in trouble, batting due to heat wave until Tuesday, no relief now.

Bangla Jago Desk , Mou Basu : এখনই হাঁসফাঁস গরমের হাত থেকে রেহাই নেই। এপ্রিলের শেষদিন অর্থাৎ আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত দাপটে ব্যাটিং করবে তাপপ্রবাহ। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের ৭ জেলা, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম ও উত্তরবঙ্গের ৩ জেলা, মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে তীব্র তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি চলবে।

গোটা বাংলার বাকি জেলাতেও চলবে অসহনীয় গরমের পরিস্থিতি। এবছর বাংলায় গরমের চরিত্র একদম আলাদা। গরমে দক্ষিণবঙ্গে বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা জলীয় বাষ্পভরা বাতাসই বেশি পরিচিত। এই হাওয়ার ফলে আর্দ্রতা বাড়ে, ঘাম বেশি হয়। কিন্তু তাপমাত্রা কম থাকে। কিন্তু এবার হচ্ছে উলটোটা। পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলীয় অঞ্চল বাদ দিয়ে দিনের বেলায় কোথাও সেই দখিনা হাওয়া ঢুকতেই পারছে না। এর ফলে মধ্য ভারতের চূড়ান্ত গরম হাওয়া উত্তরপশ্চিম দিক দিয়ে ঢুকে পড়ছে পশ্চিমবঙ্গের বায়ুমণ্ডলে। যার ফলে এই রকম শুকনো গরমের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী আপাতত এই শুকনো গরম হাওয়া থেকে কোনো নিস্তার নেই। গরমে শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকতে তাই প্রয়োজন ছাড়া সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। হালকা ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। মাথাও কাপড়, ছাতা বা টুপি দিয়ে ঢাকতে পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তাররা। পর্যাপ্ত জল খেতে বলা হচ্ছে। জলশূন্যতা আটকাতে নুন চিনির জল, ওআরএস, লেবুর শরবত, ঘোল বাড়িতে তৈরি এসব খেতে বলা হচ্ছে। রোদে বেরোলে হিটস্ট্রোকের পাশাপাশি হিটক্র্যাম্প, হিটর্যাশ হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, আগামী সপ্তাহের বুধবার পর্যন্ত কলকাতার তাপমাত্রা চল্লিশের ওপরে থাকবে। কিন্তু তার মধ্যেও রেকর্ডভাঙা গরমের আশঙ্কা করা হচ্ছে রবিবার থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তীব্র তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি চলবে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। এছাড়াও তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি চলবে দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাতেও। শুক্র থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তীব্র তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি চলবে উত্তরবঙ্গের ৩ জেলা-মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। এছাড়াও জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলায় গরম অস্বস্তিকর আবহাওয়া বজায় থাকবে।
রাজ্যের বাকি জেলার মতোই এবার কলকাতাতেও অসহনীয় গরমের পরিস্থিতি। এবছর পরিবেশ দূষণ, জলাশয় ভরাট, গাছ কাটা, এদিকে ওদিকে গজিয়ে ওঠা বহুতলের মতো নানাবিধ কারণের জন্য কলকাতায় গরমের চরিত্র একদম আলাদা। হিট আইল্যান্ডে পরিণত হচ্ছে কল্লোলিনী তিলোত্তমা। আরবান হিট আইল্যান্ড’-এর কারণে কলকাতায় গরমের অনুভূতি অন্যান্য জেলার থেকে অনেকটাই বেশি। তাপ বায়ুমণ্ডলেই আটকে পড়ছে। বেরিয়ে যেতে পাচ্ছে না। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতার ইতিহাসে উষ্ণতম দিন ছিল ১৯৫৮ সালের ২৮ মে। সে দিন পারদ উঠেছিল ৪৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এপ্রিলে কলকাতার উষ্ণতম দিন ছিল ১৯৪৫ সালের ১৯ এপ্রিল। পারদ উঠেছিল ৪৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এছাড়া কলকাতায় ১৯৭৮ সালের ৩ জুন তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ২০০২ সালের ২০ মে কলকাতায় তাপমাত্রা ৪৩.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। শেষবার কলকাতার পারদ ৪২ পেরিয়েছিল ২০০৯ সালের ৯ মে। সে দিন তাপমাত্রা ছিল ৪২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ১০ বছরের মধ্যে এপ্রিলে সব থেকে বেশি গরম রেকর্ড করা হয় ২০১৬ সালের ১১ এপ্রিল (৪১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ২০১৪ সালের ২৬ এপ্রিলে (৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।