Bangla Jago Desk , তমলুক : তমলুকের চক্রেশ্বর শিবমন্দিরে ভক্তিভরে পুজোপাঠের প্রস্তুতি চলছে। মহাভারতে এই শিবের কথা রয়েছে।অজানা নানা কাহিনী লুকিয়ে রয়েছে এই মন্দিরকে ঘিরে। হর-হর মহাদেবকে বেলপাতা দিয়ে পুজো করলেই তিনি সন্তুষ্ট হন।আর ভোলেবাবার আর্শীবাদ নিতে অনেকেই ছুটে যান তারকেশ্বরে।বাবার মাথায় দুধ-গঙ্গাজল দিয়ে নিবেদন করেন।তারকেশ্বরের মতোই রাজ্যের নানা প্রান্তে রয়েছে অসংখ্য শিবের মূর্তি।যারমধ্যে অন্যতম তমলুকের চক্রেশ্বর শিবমন্দির।
যার মাহাত্ম্যের কথা উল্লেখ রয়েছে মহাভারতে। যা শুনলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন,যাঁরা এখনও এই শিবমন্দিরে যাননি তাঁরাও আগ্রহী হয়ে উঠবেন। কথিত আছে, পান্ডবদের অজ্ঞাতবাসের সময় পঞ্চপান্ডব সহ কুন্তী ও দৌপ্রদি এই শিব মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন ।এই মন্দিরে মোট চারটির শিবলিঙ্গ রয়েছে। একটি শিব স্বয়ং আর্বিভূতহন। অন্য তিনটি প্রথম ৩ পাণ্ডব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বর্তমানে প্রতিদিন নিত্য পূজো হয়, এর পাশাপাশি প্রতি সোমবার বিশেষ পুজো পাঠ চলে। শিবরাত্রি ও চৈত্র মাসের নীল সংক্রান্তির পূজো হয় এই মন্দিরে।জগৎসংসার জুড়ে পুরুষপ্রকৃতির লীলাখেলা। পুরুষ নিষ্ক্রিয়। সেই নিষ্ক্রিয় পুরুষের ক্রিয়াশীল শক্তিই হল প্রকৃতি। প্রকৃতি – তিনিই যে মহামায়া – এই মহাবিশ্বকে মায়ায় আচ্ছন্ন করে রেখেছেন। পুরুষ ও প্রকৃতি এই দুইয়ে মিলে জগৎ। একটি ছাড়া অপরটি অর্থহীন। এই শিবসাধনার পিছনে রয়েছে গভীর ভক্তি।
‘মন্দিরের নামকরণের পেছনে গান্ধারীর শিব পুজো দিতে না পারার আক্ষেপ। মহাদেবের ছলনায় কৌরব সহ গান্ধারী তাম্রলিপ্ত নগরীতে শিবের পূজা দিতে পারেনি। মহাদেবের চক্রান্তের কারণেই গান্ধারী পূজা দিতে পারেনি। তাই গান্ধারী নাম রাখেন চক্রেশ্বর। মহাভারতের অজ্ঞাতবাস পর্বে এই মন্দিরের উল্লেখ পাওয়া যায়। এখানে দ্রৌপদী সহ পঞ্চপান্ডব পুজে দিয়েছিলেন বলে আজও ভক্তরা মনের বাসনা পূরণ করতে বা শিবরূপী ভগবানের আর্শীবাদ নিতে আসেন,একনিষ্ঠভাবে।
মহাভারতের কাহিনী বা কথিত কাহিনী যাই থাক না কেন এই মন্দিরে ভগবান শিবের পুজো আজও হয়ে আসছে। প্রতিদিন সকালে শিবের পুজো হয়। প্রতি সোমবার মহাদেবের বিশেষ পুজো হয়। এছাড়াও শিবচতুর্দশী তিথিতে বিশেষ পুজো পাঠ হয়। প্রতি বছর চৈত্র মাসে গাজন ও চৈত্র সংক্রান্তির দিন চড়ক পুজো হয়। এখন বসন্তকালে দেবাদিদেবের আরাধনাকে কেন্দ্র করে ভক্ত সমাগম কার্যত এই এলাকার পর্যটনের গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলছে।