ad
ad

Breaking News

Prabhu Jagannath

বিচিত্র পোশাকে ফ্যাশন দুরস্ত প্রভু জগন্নাথ

এক কথায় পুরুষোত্তম হলেন আপাদমস্তক ফ্যাশন দুরস্ত। তাঁর বসন-ভূষনও লীলাময় বিচিত্র ও ব্যাপক।

Prabhu Jagannath is fashionable in different clothes

Bangla Jago Desk, Mou Basu: পুরীধাম বা শ্রীক্ষেত্র প্রভু জগন্নাথদেবের প্রিয় বাসগৃহ। বছরভর তাঁর টানে যেমন তীর্থযাত্রীদের ভিড় হয় পুরীতে তেমনই হরেক কাণ্ডে সরগরম থাকে ‘বড়ো দেউল’ প্রাঙ্গন। ভোর থেকে রাত, বছরের প্রতিটি দিনই প্রভুর বাসগৃহ যেন এক কর্মব্যস্ত নগরী। শ্রীবিষ্ণুর আরও এক অবতার প্রভু জগন্নাথ এখানে পরিচিত দারুব্রহ্ম হিসাবে। বলরাম ও সুভদ্রার সঙ্গে তাঁর এখানে চিরায়ত অধিষ্ঠান। জগতের নাথ তিনি, তাই তাঁর লীলা অপার। তাঁর লীলার মতোই সারা বছর ধরে প্রতিটি দিনক্ষণ, প্রাক ঊষা থেকে শয়নকাল পর্যন্ত প্রভু জগন্নাথের বেশভূষা, আহার সবই পরিবর্তিত হয় সময়-ঋতুভেদে। এক কথায় পুরুষোত্তম হলেন আপাদমস্তক ফ্যাশন দুরস্ত। তাঁর বসন-ভূষনও লীলাময় বিচিত্র ও ব্যাপক। আসুন দেখে নিই প্রভুর বেশ বৈচিত্র্যের কিছু কথা—-
প্রভু জগন্নাথের মোট বেশের সংখ্যা ৩৬। এরমধ্যে ২০টি প্রধান বেশ। ২টি বেশ হয় মন্দিরের বাইরে। বাকি বেশ হয় মন্দিরের গর্ভগৃহে রত্নবেদীর ওপর। দিনের নির্দিষ্ট সময় নির্দিষ্ট নিয়মে প্রভুকে সাজানো হয়। বহু যুগ ধরে এই প্রাচীন প্রথা চলে আসছে। এই বেশের অনেকগুলোই বেশ প্রাচীন, আদি শঙ্করাচার্যের তৈরি।
ভোরে মঙ্গলারতীর পর ৩ বিগ্রহকে কমলা রঙের পাড় বসানো সুতির পাতলা পোশাক পরানো হয়। খুব হালকা, ঘরোয়া বিশ্রামের উপযুক্ত এই পোশাককে বলা হয় ‘অবকাশ বেশ’। এসময় ফুল, মালা, অলঙ্কার থাকে না। এসময় ৩ বিগ্রহের মুখ ধোয়ানো, দাঁত মাজানো, স্নান করানোর মতো সব অনুষ্ঠান চলে। ২১টি ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে আরতী করা হয়। এরপর প্রভু জগন্নাথ, প্রভু বলরাম ও সুভদ্রা দেবীকে সিল্কের কাপড়, সোনার অলঙ্কার ও ফুলমালা দিয়ে সাজানো হয়। দিনের মধ্যে বিশেষ বেশ ‘বড় শৃঙ্গার’ বেশ হয়। এসময় বেশ কিছু আচার অনুষ্ঠান হয়। সন্ধ্যারতীর পর বিগ্রহদের ১২ ফুট লম্বা লাল রঙের বিশেষ পোশাক ‘খাণ্ডুয়া’ পরানো হয়। ৮ রকমের ফুলের অলঙ্কার পরানো হয়। অলঙ্কারের নামও বেশ সুন্দর—–অলকাপান্তি, পুষ্পতিলক, করপল্লব, মকরকুন্দল, পড়াকা, গুণা, ঝুম্পা, পুষ্পমালা ও তুলসীমালা।
এছাড়াও সপ্তাহের প্রতিটি দিনের বেশভূষা আলাদা ও রঙও নির্দিষ্ট। যেমন সূর্যের প্রতীক হিসাবে রবিবারে লাল রঙের পোশাক, সোমবার চন্দ্রের প্রতীক হিসাবে সাদা রঙের পোশাক পরানো হয়। বুধবার বুধ গ্রহের প্রতীক হিসাবে সবুজ রঙের পোশাক, বৃহস্পতিবার হলুদ রঙের পোশাক পরানো হয়। বৃহস্পতি গ্রহের পছন্দের রঙ হলুদ। শুক্রবার সাদা রঙের পোশাকে সাজানো হয়। শনিবার শনি গ্রহের পছন্দের রঙ নীল রঙের পোশাকে সেজে ওঠেন ৩ দেবদেবী।