ad
ad

Breaking News

Basanti Puja

বাসন্তী পুজোর কি মাহাত্ম্য রয়েছে জানেন ?

পুরান মতে বিবাহের পর শিব পার্বতী সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের জেরে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। দু’জনের মধ্যে মতবিরোধে দেবী পার্বতী কৈলাশত্যাগ করে চলে আসেন।

Do you know the significance of Basanti Puja?

Bangla Jago Desk,Mou Basu : ভারতচন্দ্র দেবী অন্নপূর্ণার কথা উল্লেখ করে অন্নদামঙ্গল কাব্য রচনা করেছিলেন, যেখানে মা অন্নপূর্ণার মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে। মাইকেল মধুসূদন দত্তও দেবী অন্নপূর্ণা ও অন্নদামঙ্গল কাব্যের প্রশস্তি করেছেন তাঁর “অন্নপূর্ণার ঝাঁপি”কবিতায়। মার্কণ্ডেয় পুরাণের কাশীখণ্ড, দেবী ভাগবত পুরাণ ও অন্যান্য পুরাণ এবং কাশীপরিক্রমা ইত্যাদি গ্রন্থে দেবী অন্নপূর্ণা সংক্রান্ত নানা কাহিনি রয়েছে। অন্নপূর্ণা পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আর এক পৌরাণিক কাহিনী।

পুরান মতে বিবাহের পর শিব পার্বতী সুখী দাম্পত্য জীবন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের জেরে শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। দু’জনের মধ্যে মতবিরোধে দেবী পার্বতী কৈলাশত্যাগ করে চলে আসেন। সেই সময় দেখা যায় মহামারি, খাদ্য কষ্ট। ভক্তরা আকুল হয়ে পড়ে, তারা দেবাদীদেবকে ডাকতে থাকে। সেই সময় ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন মহাদেব। কিন্তু দেবীর মায়ায় কোথাও ভিক্ষা জোটে না তাঁর। তখন শোনা যায় কাশিতে এক নারী সকলকে অন্ন দান করছেন। ভোলানাথ সেখানে উপস্থিত হলে, ভোলেনাথের কিন্তু দেবীকে চিনতে একটুও অসুবিধা হয় না। মহাদেব মায়ের কাছে ভিক্ষা প্রার্থনা করেন। সেই ভিক্ষা গ্রহণ করে মহামারী এবং খাদ্য ভাব থেকে ভক্তকুলকে রক্ষা করেন তিনি। এরপর কাশিতে মা অন্নপূর্ণার মন্দিরের স্থাপন করা হয়।চৈত্র মাসে শুক্লা অষ্টমী তিথিতে কাশীতে আভির্ভূতা হয়েছিলেন দেবী অন্নপূর্ণা।আশ্বিন মাসে দুর্গা পুজো হয়ে থাকে। কিন্তু শরৎকালে যে দুর্গাপুজো হয় তা অকালবোধন বলে পরিচিত।লঙ্কারাজ রাবণকে বধের উদ্দেশে শ্রীরামচন্দ্র অকাল বোধন করেন এবং তখন থেকে দুর্গাপুজো শরৎকালে শুরু হয়।

আদি দুর্গাপুজো কিন্তু চৈত্র মাসে হয়, যা বাসন্তী পুজো নামে আমাদের কাছে পরিচিত। দেবী দুর্গার প্রথম পুরোহিত হিসাবে পুরাণে রাজা সুরথের কথা উল্লেখ রয়েছে। যোদ্ধা হিসাবে রাজা সুরথ ছিলেন খুব দক্ষ। রাজা সুরথকে চিত্রগুপ্তবংশী রাজা (চিত্রগুপ্তের বংশধর) হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে দুর্গা সপ্তশতী দেবী মাহাত্ম্য এবং মার্কণ্ডেয় পুরাণে। সুরথ সুশাসক ও যোদ্ধা হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন। কোন যুদ্ধে নাকি তিনি কখনও হেরে যাননি। একবার প্রতিবেশী রাজ্যের রাজা তাঁকে আক্রমণ করলে তিনি পরাজিত হন, এই সুযোগে তাঁর সভাসদরা লুঠপাঠ চালায়। নিজের কাছের লোকেদের এমন আচারনে তিনি অবাক হয়ে যান। এই সময় তিনি ঘুরতে ঘুরতে ঋষি মেধসের আশ্রমে পৌঁছান। ঋষি তাঁকে সেখানেই থাকতে বলেন। কিন্তু রাজা মনের শান্তি পান না। এর মধ্যে একদিন তাঁর সঙ্গে সমাধি বলে একজনের দেখা হয়। তিনি জানতে পারেন সমাধিকে তার স্ত্রী ও ছেলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে, তবুও তিনি বউ ছেলের ভালো-মন্দ এখনও ভেবে চলেছেন। তাঁরা দুজনেই বিস্মিত হলেন যে, যাদের কারণে তাঁরা আজ সব হারিয়েছে, এখনও তাঁরা তাদের ভালো চেয়ে যাচ্ছেন। ঋষিকে একথা জানাতে তিনি বলেন যে এসবই মহামায়ার ইচ্ছা। এরপর ঋষি মহামায়ার কাহিনী বর্ণনা করেন। ঋষির পরামর্শ মতই রাজা সুরথ কঠিন তপস্যা শুরু করে। পরে মহামায়ার আশীর্বাদ পেতেই রাজা বসন্তকালের শুক্লপক্ষে দেবী দুর্গার পুজো শুরু করেন সেই সময় থেকে শুরু হয় বাসন্তী পুজো।