Bangla Jago Desk, Exclusive: দুয়ারে ১৮তম লোকসভা নির্বাচন। প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ভোট দেওয়ার আগে আঙুলে বিশেষ কালি লাগানো হয়। জানেন কি কোথায় তৈরি হয় এই বিশেষ কালি?
ভোটের এই বিশেষ কালি তৈরি করেন কলম্বিয়ায় রসায়নবিদ হোস ভিনসেন্ট আজকুয়েনাগা চাকোন। ১৯৫৭ সালে কলম্বিয়ায় ভোটে সেই কালি ব্যবহারও করা হয়। তবে ভারতের নির্বাচনে তার আগেই ব্যবহার করা হয়। কালির পেটেন্ট চেয়ে ১৯৫০ সালে আবেদন করে ন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (এনআরডিসি)। কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)-এর অধীনস্থ সংস্থা ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরি প্রথম ভোটের কালি তৈরি করে। এখন মাইসুরুর ছোট্ট সংস্থা মাইসোর পেইন্টস অ্যান্ড ভার্নিশ লিমিটেডের একমাত্র লাইসেন্স রয়েছে ভোটের কালি তৈরির।
মাইসোর পেইন্টসের আগের নাম ছিল মাইসোর লাক অ্যান্ড পেইন্ট ওয়ার্কস লিমিটেড। সংস্থাটি ১৯৩৭ সালে তৈরি করেন মাইসুরুর তৎকালীন মহারাজা মহারাজা চতুর্থ কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার। ১৯৬২ সালে স্বাধীন ভারতের তৃতীয় লোকসভা নির্বাচনে প্রথম বার ভোটের কালি ব্যবহার করা হয়। তবে সেটা গোটা দেশে নয় শুধু মাইসুরুতে।
এখনো ভোটের কালি তৈরি করে শুধু মাইসোর পেইন্টসই। ২৫টি দেশে এই কালি সরবরাহ করা হয়। ভোটার সংখ্যা দেখে কালি তৈরির বরাত দেয় নির্বাচন কমিশন। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ৩০ লাখ ভায়াল লাগবে। খরচ পড়বে প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। ৫ মিলিলিটারের ভায়াল ৩০০ বার ব্যবহার করা যায়। প্রায় ৩০টি দেশে ভোটে ভোটের কালি ব্যবহার করা হয়। ভোটদাতার বাঁহাতের তর্জনীতে ভোটের কালি লাগানো হয়। বাঁহাতের তর্জনী না থাকলে তা ডান হাতের তর্জনীতে লাগানো হয়। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী আঙুল না থাকলে ডান বা বাম বাহুর শেষ প্রান্তে লাগানো থাকবে কালি।
গাঢ় বেগুনি রঙের হয় কালি। সাধারণত কয়েক সপ্তাহ থাকে আঙুলে ভোটের কালি। কালির মূল উপাদান সিলভার নাইট্রেট, একসঙ্গে জল ও বেগুনি রঙ মেশানো হয়। এছাড়াও চতুর্থ একটি গোপন উপাদান থাকে যার জন্য কালি দীর্ঘস্থায়ী হয়। এছাড়াও ত্বকের সংক্রমণ আটকাতে বায়োসিড ব্যবহার করা হয়। ত্বকের সংস্পর্শে আসতেই সিলভার নাইট্রেট সিলভার ক্লোরাইডে বিক্রিয়া হয়ে পরিণত হয়। করোনা পরিস্থিতিতে হোম কোয়ারান্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে কালি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।