BANGLA JAGO DESK : বাঙ্গালির কাছে ভ্রমণ মানেই পাহাড় আর সমুদ্র। কিন্তু কেউ কেউ আবার জঙ্গল সাফারি খুব পচ্ছন্দ করে । শহরের এই ভিড়ে আর এক মুহূর্ত থাকতে দম বন্ধ হয়ে আসে সকলেরই। তাই পরিবার বা বন্ধু বান্ধব মিলে দু একদিন ছুটি কাটিয়ে আসুন উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সের কাঠামবাড়ি জঙ্গলে। অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত হল এই জঙ্গল সাফারির আদর্শ ডুয়ার্সের জঙ্গলের কথা বলতেই প্রথমে মনে আসে গরুমারা ফরেস্ট বা জলদাপাড়া অভয়ারণ্য। অথবা বক্সারের জঙ্গল। কিন্তু এগুলি ভ্রমণপিপাসু বাঙালির কাছে অত্যন্ত পরিচিত স্থান। কিন্তু আজ আমরা পাড়ি দেব ডুয়ার্সের এক অফবিট জঙ্গলের উদ্যেশ্যে। আজ আমাদের গন্তব্য কাঠামবাড়ি ফরেস্ট। নিউজলপাইগুড়ি থেকে প্রায় ৩৫ কিমি দূরে অবস্থিত এই বনরাজ্য। এই গহীন বনাঞ্চলটি মূলত বনজ উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগতে সমৃদ্ধ। দুপাশে সারি ঘন জঙ্গল মাঝ খান দিয়ে চলে গিয়েছে পথ। চারপাশে তাকালে দেখতে পাওয়া যায় শাল, সেগুন, পলাশ, গাছের সারি।
এই জঙ্গলের গভীরতা এতটা গভীর যে কোনও কোনও স্থানে সূর্যের আলো ঠিকমত পৌঁছোয় না। এই জঙ্গল সাফারি তাই ভীষণই অ্যাডভেঞ্চারাস। তবে কেবল জঙ্গলের সৌন্দর্য না সৌভাগ্য থাকলে দেখতে পাবেন জঙ্গলের মধ্যে বিচরণ করছে চিতাবাঘ। এছাড়াও বন্য হাতি, নেকড়ে , শিয়াল, বন্য শুয়োর প্রভৃতি বন্যপ্রাণীর মাঝে মধ্যে দেখা মেলে এই ঘন জঙ্গলে। ভোর বেলা হলেই শুনতে পাবেন নানা পাখির কলতান। সকালের চিত্রটা মনোরম হলেও রাতের ছবিটা একেবারেই আলাদা। এই জঙ্গলে রাত কাটাতে হলে আপনাকে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের অনুমতি নিতে হয়। তাই, এই নিরিবিলে জঙ্গল এখনও পর্যন্ত যাঁরা দেখেননি তাঁরা অবশ্যই একবার ঘুরে আসুন উত্তরবঙ্গের এই অফবিট জঙ্গলে। কাঠামবাড়ির চারপাশের ল্যান্ডস্কেপ ভিরিড টি গার্ডেন দিয়ে সমৃদ্ধ।
তবে, বন্য প্রকৃতির সমস্ত উপাদান থাকা সত্ত্বেও কিছু অজানা কারণে কাঠামবাড়ি ফরেস্ট পর্যটকদের কাছে খুব একটা পরিচিত হয়ে উঠতে পারে নি। তবুও, এই জঙ্গলকে কেন্দ্র করেই ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের বাংলোগুলি দীর্ঘ বছর ধরেই পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। এছাড়াও বেশকিছু কটেজ ও বাংলো রয়েছে পর্যটকদের রাত্রিবাস করার জন্য। সব মিলিয়ে আপনি যদি আপনার শহুরে জীবনের চাপ থেকে বিরতি চান তবে কয়েকদিনের ছুটিতে অবশ্যই ঘুরে আসুন ডুয়ার্সের কাঠামবাড়ির জঙ্গলে।