Bangla Jago Desk : ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধের জন্য বিশ্বজুড়ে শোরগোল।এবার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাঁধল তুলকালাম কাণ্ড। প্যালেস্তাইনপন্থী পড়ুয়ারা ক্যাম্পাসে ঢুকে তাণ্ডব শুরু করে বলে অভিযোগ।কিছুতেই তারা ক্যাম্পাস ছাড়তে নারাজ ছিল।নাছোড় বিক্ষোভকারীদের হঠাতে অবশেষে ডাকা হয় পুলিশ।নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে ১০০জনকে গ্রেফতার করেছে।তাদের বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়। লাইভ স্ট্রিমিংয়েও দেখা যায়,হ্যামিলটন হলে মার্কিন পুলিশের তত্পরতা।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবৃতি-ক্যাম্পাস বিশৃ্ঙ্খলা নিয়ে
৩০এপ্রিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জারি করা হয় একটি বিবৃতি।বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যামিলটন হলে বিক্ষোভকারীরা দখলের চেষ্টা করে।তাঁদের হঠিয়ে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় ছিল না। তাই কর্তৃপক্ষের হাতে এই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া কোনও পথ খোলা ছিল না।কারণ প্রথমেই প্যালেস্তাইনপন্থী বিক্ষোভকারীরা কলম্বিয়া জন নিরাপত্তা আধিকারিদের হঠিয়ে দেয়।এমনকি তাঁদের হুমকিও দিতে থাকে। মূলতঃ গাজায় প্যালেস্তাইনের বাসিন্দাদের ওপর ইজরায়েলের বোমা বর্ষণও ও হামলার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ চরম আকার নেয়।
নিউইয়র্ক পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে,তাঁরা রাত ৯টায় ক্যাম্পাসে ঢোকে এবং ১১টায় সমস্ত বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেয়।প্রসঙ্গতঃ হ্যামিলটন হলে প্রবেশও প্রস্থানের জন্য একটাই পথ রয়েছে।যেহেতু বিক্ষোভকারীরা মূল প্রবেশপথ রুদ্ধ করে দাঁড়িয়ে ছিল তাই বিকল্প জানলা দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে পুলিশ।প্রকাণ্ড গাড়ি নিয়ে এসে ভেঙে ফেলা হয় সেই জানলা,যাতে তাঁরা বিক্ষোভের মূল জায়গায় গিয়ে আইন রক্ষার রাশ নিজেদের হাতে নিতে পারে।শুধু ফাস্ট ফ্লোর থেকেই ৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।স্নাতক ডিগ্রি প্রদানের অনুষ্ঠানের কথা মাথায় রেখে অভিযান জোরদার করা হয়। ১৭মে এই অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা গেছে
যদিও নিউইয়র্ক পুলিশের কর্তাদের একাংশের মতে,বহিরাগত বিক্ষোভকারীদের একাংশ আগেভাগেই তাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস করে।
অভিযানের সময় বাড়তি সতর্কতা
অভিযানের সময় পড়ুয়াদের বাড়তি সতর্ক করা হয়।ক্যাম্পাসের মধ্যে যাঁরা ছিলেন তাঁদের সতর্ক থাকার নির্দেশ জারি করা হয়। ক্যাম্পাসের মধ্যেই রয়েছে রাগেলস হল,সেখানে থাকা পড়ুয়াদের বাইরে বেরুতে কড়াভাবে নিষধ করা হয়।নির্দেশ মান্য না করলে গ্রেফতারেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
🚨#BREAKING: Police have begun entering the Hamilton Hall building through a second-floor window, deploying tear gas inside. Reports indicate there is an unconscious student in front of Hamilton Hall pic.twitter.com/IgoXOi6ZI6
— R A W S A L E R T S (@rawsalerts) May 1, 2024
হাউস স্পিকারের মন্তব্যঃ তাণ্ডবকারীরা সাধারণ অপরাধী
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাউস স্পিকার মাইক জনসন,বিক্ষোভকারীদের সাধারণ অপরাধী বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে,যাঁরা উন্মত্ত নাবালাকের মতো আচরণ করেছে তাঁদের অপরাধী বলেই গণ্য করা দরকার।হাউসের মেজর হুইপ টম এমার এই পুলিশি কড়া ব্যবস্থার দরাজ প্রশংসা করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এমার আরও লিখেছেন,যদি কেউ ক্যাম্পাসে ঢুকে বিশৃ্ঙ্খলা করে,তাহলে কী তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে,যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁদের মনে রাখা উচিত বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরকে কখনই তাঁদের হাতে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।আইনশৃ্ঙ্খলার মতোই শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ যে পদক্ষেপ করেছে তা দেখে বলা যায়,এনাফ ইজ এনাফ,অর্থাত্ যথেষ্ট হয়েছে আর নয়।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দায়বদ্ধ,সুশৃঙ্খল আবহ বজায় রাখতে প্রশাসন যে কুণ্ঠা করবে না সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে।হাউস রিপাবলিকানরা আরও জানিয়েছেন,বহিরাগত পড়ুয়াদের ভিসার ব্যাপারে কড়াকড়ি করা হবে।যাতে কোনও গোঁড়া,কট্টরপন্থী, বিশৃ্ঙ্খলাকারী ক্যাম্পাসে ঢুকে অশান্তি আর ছড়াতে না পারে।সেজন্য কংগ্রেসে শুনানির ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
হ্যামিলটন হলে জবরদখল ৪০ বিক্ষোভকারীর
নিউইয়র্ক পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে,হ্যামিলটন হলে অন্ততঃ ৪০জন বিক্ষোভকারী প্রবেশ করে।তাঁরা সকলেই প্যালেস্তাইনের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিল।কেন গাজায় জবরদখল করা হয়েছে,তা নিয়ে ইজরায়েল ও তাঁর বন্ধু দেশগুলোকে দায়ী করে স্লোগানও দেওয়া হয়।
পুলিশি অভিযানে কেউ আহত হননি
নিউইয়র্ক পুলিশের তরফে স্পষ্টতই জানানো হয়েছে,এই প্যালেস্তাইনপন্থী বিক্ষোভকারীদের হঠাতে গিয়ে যে ৪০জনকে আটক করা হয়,তাতে ধ্বস্তাধ্বস্তি হলেও কেউ আহত হয়নি।