নিজস্ব চিত্র
Bangla Jago Desk: শনিবার সন্ধ্যায় যাদবপুর ৮বি চত্বরে এক উত্তাল দৃশ্যের সাক্ষী থাকল শহর। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সরব যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ ছাত্র, কিন্তু শেষমেশ জনতার চাপে অবরোধ তুলতে বাধ্য হলেন তাঁরা।
শনিবার সকাল থেকেই উত্তেজনার পারদ চড়ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সভাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করে এসএফআই ও অন্যান্য বাম ছাত্র সংগঠন। তাঁদের মূল দাবি ছিল ছাত্র সংসদ নির্বাচন। অভিযোগ, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সভা চলাকালীন বিক্ষোভকারীদের একাংশ সেখানে ঢুকে চেয়ার ভাঙচুর করেন।
অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী যখন বেরোচ্ছিলেন, তখনই তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। অভিযোগ, ইট ছোড়া হয়, যার আঘাতে গাড়ির কাচ ভেঙে যায় এবং এক নিরাপত্তারক্ষী আহত হন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও চোট পান। এই পরিস্থিতিতে গাড়ি এগিয়ে নিতে গেলে একজন রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যান, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে।
এই ঘটনার পর সন্ধ্যায় যাদবপুরের ছাত্ররা রাস্তায় বসে অবরোধ শুরু করেন। ফলে যাদবপুর-ঢাকুরিয়া ও গড়িয়া-গড়িয়াহাট রুটে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে নিত্যযাত্রী ও সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়েন। শুরুতে আন্দোলনকারীরা সরতে রাজি ছিলেন না, কিন্তু যাত্রীরা একত্রিত হয়ে চাপ দিলে শেষমেশ বাধ্য হয়ে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা।
এদিকে, শিক্ষামন্ত্রীর ওপর হামলার প্রতিবাদে সন্ধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসও পথে নামে। যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষের নেতৃত্বে সুকান্ত সেতু থেকে মিছিল এগিয়ে যায় যাদবপুর ৮বি-র দিকে। মিছিলে অংশ নেন টালিগঞ্জের বিধায়ক অরূপ বিশ্বাস সহ অন্যান্য নেতা-কর্মীরা। সায়নী ঘোষ বলেন, “শান্ত বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এতে কিছু হবে না। আমরা রুখে দাঁড়াব, ছাব্বিশের ভোটে বড় খেলা হবে।”
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও উঠে এল প্রশ্ন—শক্তির প্রকৃত উৎস কে? ছাত্র আন্দোলন নাকি আমজনতার ঐক্যবদ্ধ শক্তি? রাষ্ট্রশক্তির সঙ্গে তুলনা করলে ছাত্র আন্দোলন হয়তো এগিয়ে থাকে, কিন্তু জনতা যখন এক হয়, তখন অনেক সময়ই তারা পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। শনিবার সন্ধ্যায় যাদবপুরে সেটাই দেখা গেল।