Bangla Jago TV Desk : ছোটপর্দায় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়ে তারপর বড়পর্দায় কামাল করেছেন তিনি। সত্যজিতের ভূমিকায় অনবদ্য অভিনয় করে তাক লাগিয়েছেন তিনি।এতক্ষনে বোঝাই যাচ্ছে কার কথা বলছি, অভিনেতা জিতু কামাল। সদ্য রিলিজ করছে ‘মানুষ’। সুপারস্টার জিৎ এর বিপরীতে তাঁকে দেখা গেছে একদম ভিন্ন চরিত্র।এই প্রথম জিৎ এর সঙ্গে কাজ জিতুর। মানুষ হিসেবে জিতু তাঁর নানান গল্প ভাগ করে নিলেন বাংলা জাগোর সঙ্গে।
অভিনেতা জিতু কমলের গল্প আড্ডায় একান্ত সাক্ষাৎকারে তনুশ্রী।
১. ‘মানুষ’ ছবিতে ‘ মান্নান ‘ চরিত্রের সঙ্গে কতোটা মিল বা কতখানি অমিল রয়েছে মানুষ জিতুর?
জিতুঃ ছবির মান্নান অন্টাগনিস্ট বা ভিলেন যেমন সাধারণ মানুষ এতদিন ভাবছিল, টা একেবারেই অন্যদিকে নিয়ে গেছে গল্পের মোড়কে। মানুষ জিতু ভিতরে ব্ল্যাক থাকলেও অতটা গ্রে শেড দেখাতে পারবো না, মান্নান যতটা রূঢ় হয়েছে আমি হয়তো ততটা রূঢ় হতে পারবো না till to my last breath, বাকিটা ইমোশনাল মান্নান এবং জিতু, ভাবুক আমিও ভাবুক।

২. ‘ অপরাজিত’র পর ‘মানুষ’ মাঝে অনেকটা গ্যাপ, কখনও নিজেকে আন্ডাররেটেড মনে হয়েছে?
জিতুঃ আমি তো গ্যাপ স্ব-ইচ্ছায় নিয়েছি, আফটার অপরাজিত আমি দেড় বছর কোনো কাজ নিইনি, কারণ অপরাজিত করার পর মানুষের মধ্যে যে ইমেজ তৈরি হয়েছিল সেটা না প্রচণ্ড কঠিন, সেটা যেন কোথায় একটা পাথরের মোড়কে ছিল, এবার সেটাকে ভেঙে চুরে অন্য একটা ইমেজ তৈরি করাই ছিল আমার লক্ষ্য, মান্নান চরিত্রের মত কাজের জন্যই আমি অপেক্ষা করছিলাম, এবং মান্নান আমাকে সেইখানে সাহায্য করেছে। এবং সেখানে আমি সক্ষম হয়েছি।
৩. জিতের সঙ্গে প্রথম কাজ , জিৎ একদম অন্য ঘরানার অভিনেতা এবং জিতু একজন অন্য ঘরানার অভিনেতা কখনও কাজ করতে গিয়ে ক্ল্যাশ হয়েছে?
জিতুঃ জিতদা অন্য ঘরানার সেটা উনি প্রুফ করেছেন, কিন্তু আমি তো প্রুফ করিনি,তাই আমাকে ঘরানায় বসিয়ে দেওয়া টা ঠিক হবে না। আমি মনে করি আমি একজন অভিনেতা আমাকে প্রত্যেক দিন পোশাক পরিবর্তনের মত অভিনয় বদল আনতে হবে।
৪. অপরাজিত নাকি মান্নান কোনটা বেশি চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে ?
জিতুঃ এভরি ক্যারেকটার চ্যালেঞ্জিং হয়, অপরাজিত একটা পার্সপেক্টিভ থেকে একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল, এবং মান্নানের মত একটা চরিত্র এতগুলো শেড আছে যার এরকম কিছু আমি আগে তো করিনি, তো এটা আমার কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ ছিল, আরো একটা বিষয় যে চরিত্রে চ্যালেঞ্জ আছে নতুন কিছু করার আমি সেগুলোকেই নিই, নাহলে তো এতদিন আমি যেকোনো চরিত্র নিতে পারতাম।চ্যালেঞ্জিং নাহলে সেই কাজটা নিয়ে আমি মজা পাবো না, আমার যদি কোলেস্টেরল লেভেল হাই নাহয়, আমার রাতের ঘুম যদি না ওড়ে, আমি যদি ফোন না ধরতে পারি, এবং সেই ফোন না ধরা থেকে যদি উল্টো দিকের মানুষ টা গালি না দেয় তাহলে সেই চ্যালেঞ্জ নিয়েই লাভ আছে বলে আমি মনে করিনা।এটা আমাকে স্যাটিসফাই করে।

৫. ডিভিশন ক্রিকেট খেলেছে জিতু, স্টেট লেভেলে সুইমার একইসঙ্গে, আদ্যোপান্ত স্পোর্টস এর ছেলে সেখান থেকে হঠাৎ অভিনয় কেনো?
জিতুঃ Am to hear that, আমি একজন আদ্যোপান্ত স্পোর্টস এরই, আমার নামের নিচে স্পোর্টস ম্যান লেখাটা আমার পছন্দের। আমি এখনও মাঠে যাই ক্রিকেট খেলি, সুইম করি, আমার পছন্দের জায়গা। এবার সেখান থেকে অভিনয়ে আসাটা আমার কো-ইন্সিডিনেন্স। আমি আসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ শুরু করি, তারপর থেকে চলছে আসলে আস্তে আস্তে।
৬. কচুরি থেকে স্যান্ডউইচ হোক বা টাটা সুমোর পিছনের সিট থেকে ইনোভার ফ্রন্ট সিট, গোটা পিরিয়ড টা এখন তাকিয়ে পিছনে দেখলে কি ফিল হয়?
জিতুঃ প্রত্যেকটা জিনিস খুব রোমাঞ্চ মনে হয়, আমি কচুরি খেতে চাই, আবার স্যান্ডউইচ টাও খেতে চাই,জার্নি টা বেশ রঙিন ছিল, সব রঙ থাকা টাই দরকার, আমার টা বেশ মিশ্রিত এবং রঙিন। দুঃখ কষ্ট ধাক্কা খাওয়া ফ্লপ হওয়া হিট হওয়া সবটাই থাকবে তবেই জীবন।
৭. বেশ কয়েকবছর আগে তুমি বলেছিলে তোমার সাদা মনে কাদা ছিলনা, ইন্ডাস্ট্রি তোমাকে কাদা দিয়েছে, তো এখন কি সেই কাদা রয়েছে , নাকি সেসব ধুয়ে মুছে সাফ ?
জিতুঃ ইন্ডাস্ট্রি কালো সাদা দুইই দিয়েছে, কালো না দিলে সাদা টা এতো ভালো সেটা হয়তো জানতাম না। প্রথমত ইন্ডাস্ট্রি আমাকে আমার ছাদ দিয়েছে,আমাকে গাড়ি চরার মত সামর্থ্য দিয়েছে, বাবা মা কে ভালো রাখার মত কাজ দিয়েছে, সেখান থেকে দাড়িয়ে আজ দেখলে ওই কালো গুলো খুব মলিন লাগে। আমি মানুষকে খুব সরল মনে বিশ্বাস করি, আজও তাই করি।

৮. সোদপুর এ বাড়ি জিতুর, একবার স্ট্রাগল পিরিয়ডে টেকনিশিয়ানের গাড়ি ইচ্ছে করে বরানগর নামিয়ে দিয়েছিল? সেই ঘটনা কি ছিল?
জিতুঃ আমি তখন ফিরছিলাম, এবং যিনি আমাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন উনি আমার বাড়ি জানতেন না , আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, উনি আমাকে নামিয়ে দিয়েছিলেন, তখন ওলা উবের ছিল না। সেটা আমাকে শিক্ষা দিয়েছিল, যে প্যাক আপ টা স্টুডিও তে নয়, যেখানে আমার বাড়ি সেখানেই প্যাক আপ হয়, তাই এখন আমি ভীষন সজাগ থাকি।
৯. পাইপলাইনে এইমুহুর্তে জিতুর কি কি প্রজেক্ট আছে?
জিতুঃ অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ এবং অরণ্যের দিনরাত্রি দুটির কাজ চলছে। এবং দুটো মেন স্ট্রিম কমার্শিয়াল কাজ হচ্ছে।
সর্বশেষে মানুষ জিতু নিজেকে একবাক্যে সৎ বলে অভিহিত করেছেন।বারেবারে নিজেকে ভেঙে চুরে অন্য মাত্রা দিয়েছেন অভিনেতা। মান্নান হোক বা মানিক ভবিষ্যতে এই ধরনের আরো নানা অভিজ্ঞতার জন্য অপেক্ষায় সিনেপ্রেমীরা।
Free Access