ad
ad

Breaking News

Soupriti Mondol

দেশের হয়ে এশিয়ান গেমসে পদক জেতাই এখন লক্ষ্য সৌবৃতির

এতসবের মাঝেও যেন সৌবৃতির কণ্ঠে শোনা গেল কিছুটা হলেও হতাশার সুর। জাতীয় গেমসে তিনটি পদকজয়ী বলেন, ‘বাংলায় সাঁতারের পরিকাঠামো আরও উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম সাঁতারুদের অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় সুইমিংপুল-সহ আধুনিক অনুশীলন কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা। না হলে কিন্তু উন্নতি সম্ভব নয়।’

Saubriti's goal now is to win a medal for her country at the Asian Games.

নিজস্ব চিত্র

Bangla Jago Desk: সুদীপ্ত ভট্টাচার্যঃ শহর কলকাতার একদম লাগোয়া শহর হাওড়া। সেই শহরের বিবির বাগানের মণ্ডল বাড়ির ছোট মেয়ের নাম এখন গোটা বাংলাজুড়ে। উত্তরাখণ্ডে আয়োজিত জাতীয় গেমসে বাংলার হয়ে সাঁতারে তিনটি পদক জয় করেছেন মণ্ডল বাড়ির মেয়ে সৌবৃতি। তার মধ্যে রয়েছে দুটি সোনা এবং একটি রুপো।

সুদূর উত্তরাখণ্ড থেকে এরপর সৌবৃতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ফোনে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি জানান, ‘এবার উত্তরাখণ্ডে জাতীয় গেমসের আসর বসায় একটু অসুবিধা হয়েছে ঠাণ্ডার কারণে। এখানে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় সুইমারদের অসুবিধা হবে জেনেই আমরা সেইমতো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলাম। তবুও যা রেজাল্ট করেছি, তা আরও ভাল করা যেত। কিন্তু আবহাওয়ার প্রতিকূল থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি। তবুও আমি আমার পারফরম্যান্সের জন্য দারুণ খুশি।’

উদাহরণ হিসাবে সৌবৃতি জানান, ‘গত সোমবারের একটি ইভেন্টের কথা। যেখানে মাত্র ০.০১ মাইক্রো সেকেন্ডের জন্য দ্বিতীয় হয়ে যাই। না হলে হয়তো বাংলার জন্য আরও একটি সোনা জয় করতে পারতাম।’

উত্তরাখণ্ডে প্রবল ঠাণ্ডাকে জয় করা বাংলার এই তরুণী এখন স্বপ্ন দেখছেন এশিয়ান গেমসের আসরে দেশের হয় পদক জেতার। সেই প্রসঙ্গে সৌবৃতি জানান, ‘আমার দু চোখে এখন একটাই স্বপ্ন দেশের হয়ে এশিয়ান গেমসে পদক জয় করা। এর জন্য এখন থেকে আমি জোর কারণে অনুশীলন শুরু করেছি। আমি জানি এশিয়ান গেমসের জন্য ট্রায়ালে যথেষ্ট লড়াই করতে হবে জায়গা পাকা করতে। তার জন্য দিল্লিতে পার্থ প্রতীম মজুমদারের কাছে অনুশীলন চলছে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়!’

বাংলার সাঁতারু সৌবৃতি পেশায় আয়কর কর্মী। এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে জাতীয় প্রতিযোগিতায় সফল ক্রীড়াবিদদের চাকরির ব্যবস্থা করবে সরকার। এই প্রসঙ্গে সৌবৃতি বলেন, ‘এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। এমনকি যদি আমাকেও ভাল চাকরির সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে আমিও আয়কর দফতরের চাকরি ছাড়তে রাজি আছি।’

এতসবের মাঝেও যেন সৌবৃতির কণ্ঠে শোনা গেল কিছুটা হলেও হতাশার সুর। জাতীয় গেমসে তিনটি পদকজয়ী বলেন, ‘বাংলায় সাঁতারের পরিকাঠামো আরও উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম সাঁতারুদের অনুশীলনের জন্য প্রয়োজনীয় সুইমিংপুল-সহ আধুনিক অনুশীলন কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা। না হলে কিন্তু উন্নতি সম্ভব নয়।’

সৌবৃতির সাঁতারে হাতেখড়ি হয়েছিল সেই ছোট বয়স থেকেই। সৌবৃতির দিদিই প্রথম সাঁতার শিখতেন। কিন্তু এরপর পড়াশুনাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করায় সৌবৃতির দিদির আর সাঁতারু হয়ে ওঠা হয়নি। তবে দিদি সাঁতারু হয়ে না উঠতে পারলেও বোন আজ সাঁতারে জাতীয় গেমসে বাংলার হয়ে তিনটি পদক জয় করেছেন। মেয়ে বড় সাঁতারু হউক তা চেয়েছিলেন মা। আজ তাঁর স্বপ্ন কিছুটা হলেও সফল হয়েছে। মণ্ডল বাড়ির ছোট মেয়েটি সাঁতার শেখার প্রথম পাঠ শুরু করেছিলেন সালকিয়া সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনে। সেই সময় কোচ হিসাবে পেয়েছিলেন সন্তোষ গুপ্তকে।

তারপর বিশ্বজিৎ ঘোষের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাঁর প্রশিক্ষণেই ২০১৫ সালে জুনিয়র জাতীয় প্রতিযোগিতায় দুটি সোনা জয় করেই সাঁতারু হিসাবেই নিজের জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। লড়াই এখনও বাকি, যেতে হবে বহুদূর। কাজেই লক্ষ্য স্থির রেখে এখন দু চোখে স্বপ্নকে সম্বল করেই প্রতিনিয়ত এগিয়ে যেতে চান হাওড়া সালকিয়ার বিবিরবাগানের সৌবৃতি।