চিত্রঃ সংগৃহীত
Bangla Jago Desk: আগামী ৯ ও ১৪ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে এএফসি এশিয়ান কাপের কোয়ালিফায়ারের ম্যাচ খেলবে খালিদ জামিলের দল। সেই ম্যাচের আগে জোরকদমে প্রস্তুতিও সারছে মেন-ইন-ব্লুজরা। ইতিমধ্যে ২৩ জনের দলও ঘোষণা করে দিয়েছেন দলের হেড কোচ খালিদ জামিল। সম্প্রতি কাফা নেশন কাপে ভারতীয় দল যথেষ্ট ভাল পারফরম্যান্স করেছে। এবার সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুই ম্যাচেও সেই ধারা বজায় রাখতে পারবে বলে আশা খালিদ-সহ দলের খেলোয়াড়দের। সংবাদ মাধ্যমের কাছে সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে ভারতের মূল লক্ষ্য সহ নানা প্রশ্নের উত্তর দিলেন দলের গুরুত্বপূর্ণ ডিফেন্ডার সন্দেশ ঝিঙ্ঘান।
প্রশ্ন: কাফা নেশন কাপে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? এবং জাতীয় দলের অন্যতম সদস্য হিসেবে আপনার কি মনে হয়, যে ভারতের পশ্চিম এশিয়া, মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে আরও বেশি করে ম্যাচ খেলা উচিত। সে ফিফা ম্যাচ হোক কিংবা প্রদর্শনী ম্যাচ যাই হোক না কেন?
সন্দেশ: দেখুন একটা কথা বলতেই হয়, সেটা হল যত বেশি ম্যাচ খেলা হবে, তত ভাল। সে যে ম্যাচই হোক না কেন। কেননা ম্যাচ যত পরিমাণ খেলা হবে, ততই বেশি অর্জন করা হবে অভিজ্ঞতাও। যা আগামী ম্যাচগুলিতে কাজে লাগবে। আমার মনে হয়, এখন এই কাজটাই আমরা করছি। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি কিংস কাপের কথা মনে আছে তো? আমরা ইরাকের বিপক্ষে ওই টুর্নামেন্টে মাঠে নেমে লড়াই করেছিলাম। এটা আমাদের কাছে দারুণ সুযোগ ছিল। সুতরাং এমন সুযোগ পেলে আমার মনে হয় কোনও খেলোয়াড়ই খেলতে চাইবেন না এমন নয়। এবার আসি কাফা নেশন কাপের কথায়। যখন আমি খবর পেয়েছিলাম যে আমরা কাফা নেশন কাপে খেলতে যেতে পারি, তখন মনে মনে খুব খুশি হয়েছিলাম। কেননা আমি ভেবেছিলাম যে উজবেকিস্তান ও ইরানের মত দলগুলিও তাদের প্রথম সারির দল নিয়ে আসবে। এবং সত্যি বলছি আমার দারুণ আনন্দ হয়েছিল যখন দেখলাম ইরান আমাদের সঙ্গে একই গ্রুপ রয়েছে। এশিয়ার সেরা দলের বিপক্ষে মাঠে নেমে খেলতে হবে জেনেই দারুণ আনন্দ হয়েছিল আমার। সবচেয়ে বড় কথা হল ওদের বিরুদ্ধে আমরা কিন্তু সহজে হার মানিনি। যথেষ্ট লড়াই করেছি। এবং ম্যাচ শেষে আমাদের আত্মবিশ্বাসটাও অনেক বেড়ে গিয়েছিল।
প্রশ্ন: ইরানের বিপক্ষে ম্যাচেই আপনার চোট লেগেছিল, এমনকি চোয়ালের হাড়ও ভেঙেছিল। যার ফলেই আপনি এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ-২র ম্যাচে আপনি খেলতে পারেননি। এখন কেমন আছেন?
সন্দেশ: ধন্যবাদ আমার শারীরীক অবস্থার খোঁজ নেওয়ার জন্য। এখন আমি আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ আছি। ব্যক্তিগত অনুশীলন শুরু করেছি, যাতে নিজেকে ফিট রাখা যায়। আমার কাছে ওই মাক্স আছে, যেগুলি ওইরকম চোট লাগলে ব্যবহার করা হয়। দেখা যাক কত তাড়াতাড়ি সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারি।
প্রশ্ন: সন্দেশ একটু পিছনের স্মৃতিতে ফিরে যাই, আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে যেদিন কলকাতার একটি নামী ক্লাব আপনাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। আর বর্তমানে আপনি ভারতের এক নম্বর ডিফেন্ডার শুধু নন, দলের অধিনায়কত্বও করেছেন। দল যখন ব্যর্থ হয়, তখন আপনি কিভাবে মোকাবিলা করেন?
সন্দেশ: এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলি, সেটা হল জীবনে উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে কীভাবে চলতে হয় সেই অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে পারি আমি এমন কেউ নই যে তাঁর জিনিষপত্র বহন করে বলব, দেখো আমি এই সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। প্রত্যেকের একটা কথা মাথায় রাখা উচিত সেটা হল, আপনি হয়ত ভাবছেন আপনি এখন খুব কষ্টে আছেন, কিন্তু আপনি কি জানেন আপনার থেকেও অন্য কেউ সেই সময় অন্য অনেকে আরও কষ্টে আছেন। আবার উল্টোটাও দেখুন, আপনি হয়ত ভাবছেন এখন আমি সফল হয়েছি, কিন্তু দেখবেন আপনার চেয়েও বেশি সফল আর একজন হয়েছেন। মূল কথা হল আপনি এখন যেখানে আছেন, তাতেই খুশি থাকুন। এবং নিজেকে কিভাবে আরও উন্নত করা যায়, তার চেষ্টা করুন।
প্রশ্ন: খালিদের অধীনে সেন্টার ব্যাকরা প্রচুর পরিমাণে ফরোয়ার্ড রান করছেন, এমনকি তাজিকিস্তানের বিপক্ষে আপনি নিজেও সেটা করেছেন। নতুন কোচের অধীনে এটাকে সুযোগ না চ্যালেঞ্জ কি হিসেবে দেখছেন?
সন্দেশ: অবশ্যই এটাকে আমি সুযোগ হিসেবেই দেখছি। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে আমার ছটি গোল আছে। দলের জয়ের ক্ষেত্রে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোচেরা যদি দেখেন আপনার মধ্যে গোল করার ক্ষমতা আছে, যা দলের কাজে লাগতে পারে, তখন তাঁরা খেলোয়াড়দের এই কাজটা করার জন্য লাইসেন্স দেন।
প্রশ্ন: বর্তমানে আপনার বয়স ৩২ বছর। এই বয়সে এসেও নিজেকে ফিট রাখার জন্য কি কি করেন?
সন্দেশ: আসলে আমি জন্ম থেকে একটা বিষয়ে বেশ গর্বিত এই কারণে যে আমার মনটা ছোট থেকেই বেশ কৌতুহলী। তাই ছোট বয়স থেকেই আমি আমার শরীর নিয়ে গবেষণা ও পড়া এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চলেছি। এখন আমি আমার খাদ্যভাষে অনেক পরিবর্তন করেছি। ডায়েট করি প্রতিনিয়ত। যা আমাকে ফিট রাখার প্রধান শক্তি। তবে একেবারে খাই না যে তা নয়, মা আমার কাছে এলে আমার খাওয়াটা বেশি হয়ে যায়। তবুও আমি নিয়ম করে খাবার খাই। যেমন রাতে ৭.৩০টার পর আর কিছু খাই না। দুপুরে ১২টা ১২.৩০ মধ্যে খাওয়া সেরে ফেলি। আর একটা কথা বলি, বয়স কোনও ফ্যাক্টর নয় বর্তমান ফুটবলে। লুকা মদ্রিচ ৪০ এবং সুনীল ৪১ বছর বয়সে খেলছে। সুতরাং যতদিন ক্ষমতা থাকে, ততদিন খেলা যেতেই পারে।