চিত্র - সংগৃহীত
Bangla Jago Desk : চলতি আইএসএলে-যে কয়জন বাঙালি ফুটবলার খেলছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলেন জামশেদপুর এফসির মিডফিল্ডার বঙ্গ তনয় সৌরভ দাস। ২০২৪-২৫ মরশুমে আইএসএল-র আসরে দূরন্ত ছন্দে রয়েছে গোটা জামশেদপুর দল। ১৩টি দলের মধ্যে ভারতীয় কোচ হিসাবে এই কৃতিত্ব অবশ্যই দাবি করতে পারেন দুই প্রধানের প্রাক্তন কোচ খালিদ জামিল। আরও খবরকে ফোনে জামশেদপুরের এমন পারফরম্যান্সের পিছনে রহস্য কি? সহ একাধিক বিষয় নিয়ে সেই কথাই জানালেন সৌরভ।
[আরও পড়ুনঃজাতীয় গেমসে সাঁতার বিতর্কে নড়েচড়ে বসল ক্রীড়া দফতর]
প্রশ্ন- চলতি আইএসএল-এ জামশেদপুর দূরন্ত খেলছে। এর কারণটা কী?
সৌরভ-এই আইএসএল-এ আমাদের ভাল খেলার অন্যতম প্রধান কারণটাই হল দলের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ না থাকা। স্টার প্লেয়ার বলে আলাদা কেউ বিশেষ গুরুত্ব পান না। এই বিষয়টা দারুণভাবে ধরে রেখেছেন কোচ খালিদ জামিল। এছাড়া আর একটা কারণ রয়েছে, সেটা হল আমাদের দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ। জিতি বা হারি তা নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে কোনও বিবাদে জড়িয়ে পড়ি না। যে কোনও জায়গায় সাফল্য পেতে গেলে একতাই সবচেয়ে আগে দরকার। সেই বিষয়টা আমরা দারুণভাবে বজায় রেখে চলেছি। এরজন্যই আইএসএল-র মঞ্চে জামশেদপুর এত ভাল পারফরম্যান্স করতে পারছে। এর প্রধান কারিগর হচ্ছেন আমাদের কোচ।
প্রশ্ন- খালিদ ভাই দায়িত্ব নেওয়ার পরই বদলে গিয়েছে ইস্পাত নগররী দলটি। কি বলবে?
সৌরভ-অবশ্যই। আসল কথা কি জানেন তো খালিদ ভাই ফুটবল অন্তঃপ্রান। উনি ফুটবলের প্রতি খুপ ডেডিকেটেড। শুধু মাঠই নয়, মাঠের প্রচণ্ড কঠোর পরীশ্রম করতে ভালবাসেন। তারজন্যই আজকে জামশেদপুরের এই সাফল্য। এটা অস্বীকার করার কোনও কারণ নেই।
প্রশ্ন- অথচ খালিদ জামিল কলকাতার দুই প্রধানে সাফল্য পাননি। জামশেদপুরে গিয়ে তিনি দেখিয়ে দিচ্ছেন। এটা কি কলকাতার ক্লাবগুলোর ব্যর্থতা?
সৌরভ-দেখুন, কোচ হিসাবে কেউ এক বছর সাফল্য পাবেন, আর এক বছর সাফল্য পাবেন না এই বিষয়টা মেনে নিতে হবে। তবে কলকাতাতে খালিদ জামিল সাফল্য পাননি সেই জন্য কর্তাদের দোষ দিলে হবে না। কেননা কলকাতার দুই প্রধানে কোচিং করানো মানেই প্রচণ্ড চাপে থাকা। একটা ম্যাচ হারা মানেই গেল গেল রব ওঠে। কিন্তু জামশেদপুরের পরিবেশটা সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে সে রকম চাপ নেই। কাজেই অনেকটা ফ্রি ভাবে কাজ করা যায়।
প্রশ্ন- চোট সারিয়ে চেন্নাইয়িন থেকে এবারই জামশেদপুরে এসে তুমিও প্রতি ম্যাচে প্রথম একাদশে থাকছো। এটা কি খালিদ জামিলের জন্যই?
[আরও পড়ুনঃগাজা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ইচ্ছা ট্রাম্পের, হামাস বলল ‘হাস্যকর সিদ্ধান্ত’]
সৌরভ- দেখুন চোট সারিয়ে যখন কোনও খেলোয়াড় ফের মাঠে ফিরে আসেন তখন অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় খেলোয়াড়দের পাশে কোচরা সেইভাবে থাকেন না। কিন্তু খালিদভাই সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের মানুষ। মোহনবাগানে থাকাকালীনই তিনি আমার সঙ্গে তাঁর পরিচয়। এবং আমার ওপর তিনি যে এতটা বিশ্বাস বা ভরসা করছেন এটাই বিশাল ব্যাপার আমার কাছে। সুতরাং আমারও দায়িত্ব রয়েছে তাঁর আস্থার প্রতি পূর্ণ ময়াদা দেওয়ার। আমি চেষ্টা করব আগামী ম্যাচগুলোতে যাতে আরও ভাল ফল করতে পারি।
প্রশ্ন- কলকাতার এক প্রধান যখন আইএসএল-এ সাফল্য পাচ্ছে, তখন অন্য দুই প্রধান অনেকটাই পিছিয়ে তাদের থেকে ইস্টবেঙ্গল তোমার প্রাক্তন ক্লাব। কাজেই প্রাক্তন প্লেয়ার হিসাবে ইস্টবেঙ্গল এইরকম ফল সম্বন্ধে কী বলবে ?
সৌরভ- ইস্টবেঙ্গলকে এবারের আইএসএল-এ শেষ করে দিচ্ছে তাদের প্লেয়ারদের চোট-আঘাতের সমস্যা। একটা মরসুমে যদি দল এতগুলো সমস্যার সম্মুখীন হয়, তাহলে সেই দলের পক্ষে ঘুড়ে দাঁড়ানো যথেষ্ট মুশকিল। ইস্টবেঙ্গলের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অথচ চলতি আইএসএল-এ যথেষ্ট ভাল দল গড়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সবাই আশা করেছিল ইস্টবেঙ্গল হয়তো ভাল ফল করবে। কিন্তু তা আর হল না। আমি আশা করছি আগামী দু-এক বছরের মধ্যে ইস্টবেঙ্গল নিশ্চয়ই সাফল্যের মুখ দেখতে পাবে।
প্রশ্ন- এফসি গোয়াকে হারিয়ে এই মুহূর্তে পয়েন্ট টেবিলের ২ নম্বরে জামশেদপুর। দলের একজন ফুটবলার হিসাবে কি মনে হচ্ছে এবার কি জামশেদপুর ট্রফি জয়ের অন্যতম দাবিদাব ?
সৌরভ- প্রথমে আসছি গোয়া ম্যাচের প্রসঙ্গে। ঘরের মাঠে এফসি গোয়ার বিপক্ষে আমরা নিজেদের সেরাটা দিয়েই ম্যাচ জিতেছি। কেননা আমাদের একটাই লক্ষ্য ছিল কোনওভাবেই যাতে ম্যাচ থেকে পয়েন্ট নষ্ট না হয়। আমরা সেই লক্ষ্যে সফল। এবার আসি দ্বিতীয় প্রশ্নে। জামশেদপুর এখনই ট্রফি জয়ের কথা ভাবছে না। আমাদের হাতে এখনও বেশ কয়েকটা ম্যাচ বাকি আছে। আমরা আপাতত সেই লক্ষ্য নিয়েই আগামী ম্যাচগুলোতে মাঠে নামব। তারপর ভাববো ট্রফি জয়ের প্রসঙ্গ।