ad
ad

Breaking News

Ashalata Devi

ইস্টবেঙ্গলের জার্সি গায়ে খেলতে পেরে আমি ধন্য: আশালতাদেবী

সেই ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের প্রতিনিধি সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিলেন ইস্টবেঙ্গলের মহিলা দলের অন্যতম স্তম্ভ লিটংবাম আশালতা দেবী।

I am blessed to play in the East Bengal jersey: Ashalata Devi

চিত্র: নিজস্ব

Bangla Jago Desk: বাংলা নববর্ষের দিনে জমজমাট ইস্টেবঙ্গল তাঁবু। গিজ গিজ করছে সমর্থক, কর্তা, আধা কর্তা, প্রাক্তন ফুটবলার এবং সেই সঙ্গে বর্তমান পুরুষ-মহিলা দলের পাশাপাশি লাল-হলুদের ক্ষুদে ফুটবলাররা-ও। বার পুজো বলে কথা। সেই ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের প্রতিনিধি সুদীপ্ত ভট্টাচার্যকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিলেন ইস্টবেঙ্গলের মহিলা দলের অন্যতম স্তম্ভ লিটংবাম আশালতা দেবী।

প্রশ্ন- লাল-হলুদ জার্সি গায়ে আপনার অনবদ্য পারফরম্যান্স। ক্লাবের হয়ে আইডব্লু-এর চ্যাম্পিয়ন হওয়া, কি রকম অনুভূতি হচ্ছে?

আশালতা- এটা আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। অসাধারণ একটা অনুভূতি। যে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আসল কথা হল, মাঠে নামি জেতার জন্য, দলের হয়ে ভাল পারফরম্যান্স করার জন্য। সেই কাজটা যখন ১০০ শতাংশ সঠিক হয় তখনই সাফল্য ধরা দেয়। আমাদের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আর পারফরম্যান্স শুধু আমার নয়, গোটা দলের সহ খেলোয়াড় থেকে কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফ সবার সাহায্য ছাড়া ভাল খেলা সম্ভব নয়। সুতরাং আমার ভাল খেলার পিছনে এঁদের অবদান সবচেয়ে বেশি।

প্রশ্ন- আপনি এর আগেও এই খেতাব জয় করেছেন। তবে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে এই চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পাওয়া, কোনগুলিকে এগিয়ে রাখবেন?

আশালতা- দেখুন এক একটা দলের হয়ে খেতাব জয় করার আনন্দ আলাদা রকমের হয়। তবে এই টুকু বলতে পারি লাল-হলুদ জার্সি পরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দেই আমার জীবনের সেরা আনন্দ।

প্রশ্ন- আগামী ১৮ তারিখ গোকুলাম বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচ। কি ভাবছেন সেই ম্যাচ নিয়ে?

আশালতা- ফাইনাল ম্যাচ অন্য দলগুলির থেকে সব সময়ই অলাদা গুরুত্ব থাকে। আমাদের কাছেও ঠিক তাই। তবে আমরা প্রতিপক্ষকে গুরুত্ব দিলেও অতিরিক্ত ভাবতে নারাজ। আমার দৃঢ় বিশ্বাস নিজেদের সেরাটা দিতে পারলেই এই ম্যাচ থেকে জয় পেতে আমাদের খুব একটা অসুবিধা হবে না। এছাড়া এই ম্যাচ আমরা খেলব নিজেদের ঘরের মাঠে। সমর্থকরা আমাদের পাশে থাকবেন। তাঁরাই আমাদের ভাল খেলার প্রেরণা। তাই আমরা ওই ম্যাচ নিয়ে মোটেই চাপে থাকব না। থাকবে প্রতিপক্ষরা।

প্রশ্ন- এরপর এএফসি-তে খেলার সুযোগ আছে। আরও কঠিন লড়াই? সেখানেও কি সাফল্য পাওয়া সম্ভব?

আশালতা- আমরা তো সাফল্য পেতেই মাঠে নামি। প্রতিপক্ষ যতই কঠিন হোক না কেন। আমরা ভাবতে চাই না। আমাদের কোচ বলেছেন, প্রতিটা ম্যাচেই নিজের সেরা খেলাটা খেলার চেষ্টা কর। দেখবে সাফল্য ঠিক ধরা দেবে।

প্রশ্ন- আগামী ১৮ তারিখ ঘরের মাঠে ম্যাচ খেলবেন। কাজেই লাল-হলুদ সমর্থকদের প্রতি কি বার্তা থাকবে আপনার?

আশালতা- আমাদের ক্লাবের সমর্থকরাই আমাদের ভাল খেলার অন্যতম প্রেরণা। তাঁরা যেভাবে আমাদের পাশে থাকেন, আগলে রাখেন তা এক কথায় অসাধারণ। ইস্টবেঙ্গলে না খেললে হয়তো এই ভালবাসা আমার কাছে অপূর্ণ থেকে যেত। কাজেই সমর্থকদের কাছে গোটা দলের পক্ষ থেকে আমার অনুরোধ, আপনারা সেদিন মাঠে আসুন। আমাদের সমর্থন করুন। আমরা ভাল খেলে ট্রফি জয় করে আপনাদের খুশি করতে চাই।

প্রশ্ন- আপনি শুধু ক্লাব ফুটবলই নয়, জাতীয় দলের জার্সি গায়েও স্ব-মহিমায়। সেখানেও আপনি দলের রক্ষণভাগে থাকা মানেই দল একটা বাড়তি সাহস পায়। ইতিমধ্যে ১০০টি ম্যাচও আপনি খেলে ফেলেছেন জাতীয় দলের জার্সি গায়ে। মহিলা ফুটবলার হিসাবে এটা একটা নজিরবিহনী ঘটনা?

আশালতা- না না এই কথাটা ঠিক নয়। আমি আমার খেলাটা খেলি। আসলে কি জানেন, ক্লাব কিংবা জাতীয় দল যেখানেই খেলি না কেন আমার একটাই লক্ষ্য নিজের সেরাটা দেওয়ার। তাই মাঠের মধ্যেই যতক্ষণ প্রাণ আছে ততক্ষণ আপ্রাণ লড়াই করার চেষ্টা করি। এবং সতীর্থদেরও ভাল খেলতে সাহায্য করি। সবাই আমার মতামতকে মাঠে গুরুত্ব দেন এটাই আমার কাছে অন্যতম সেরা পাওনা। এছাড়া আর অন্য কোনও ব্যাপার নেই। ক্লাবের মত দেশের জার্সি গায়েও যখন মাঠে নামি, তখন আমি দেশের সৈনিক। কাজেই দেশের জন্য জীবন দিতেও পিছপা হই না। তাই সর্বদা নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। পাশাপাশি অবশ্যই আমি গর্বিত দেশের জার্সিতে ১০০টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আমার ঝুলিতে থাকার জন্য।

প্রশ্ন- আপনি এত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন দেশের জার্সি গায়ে। আগামী দিনে ভারতীয় মহিলা ফুটবলের ভবিষ্যৎ কি দেখছেন ?

আশালতা- দেখুন একটা কথা বলি, ভবিষ্যৎ দেখার আমি কেউ নই। আমি একজন ফুটবলার হিসাবে বলতে পারি, ভারতীয় মহিলা ফুটবল বেশ উন্নত হয়েছে আগের থেকে। এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। আরও উন্নতি করতে হবে। বিশেষ করে গ্রাসরুট লেভেল, স্কুল ফুটবল চালু করতে হবে। পাশাপাশি তৈরি করতে উপযুক্ত পরিকাঠামো। তাহলে একদিন না একদিন আমরাও আন্তর্জাতিক ময়দানে সাফল্য আনতে পারব।

প্রশ্ন- বিদেশি দেশগুলির সঙ্গে আমাদের পার্থক্যটা কি মনে হয় আপনার ?

আশালতা- বিদেশ দেশগুলির পরিকাঠামো ব্যবস্থা অনেক উন্নত ধরনের। ওরা ফুটবলকে নিয়ে আলাদাভাবে চিন্তা-ভাবনা করে। এক জায়গায় থেমে থাকে না। আগামী দিনে আরও উন্নতির জন্য ওরা দিন-রাত এক করে পরিশ্রম করে। এর ফলেই ওরা মানসিকভাবে অনেকটা এগিয়ে। তবে আমি আবারও বলছি। ভারতীয় মহিলা ফুটবলের ভবিষ্যতে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। যে সমস্যাগুলি রয়েছে সেগুলিকে ওভারকাম করতে পারলেই আমরাও সাকসেস পাব।