চিত্র: প্রতীকী
Bangla Jago Desk: ক্রিকেটের সঙ্গে বলিউডের ভালবাসার সম্পর্ক বহুদিনের। কেন বলিউডের নায়িকারা ক্রিকেটারদের ভালবাসায় পাগল হয়ে উঠতেন, তা নিয়ে এতদিন জোর আলোচনা চললেও ক্রিকেটের সঙ্গে বলিউডের মধুর সম্পর্ক কিন্তু একে অপরের পরিপূরক। বলিউড অভিনেত্রীদের সঙ্গে ক্রিকেটারদের প্রেম কখনও পরিণতি পেয়েছে সাতপাকে আবার কখনও তা হারিয়ে গিয়েছে ব্যর্থতায়। তবে ব্যর্থতার কথা ভুলে ভ্যালেন্টাইন ডে-তে পরিণতির গল্পটাই শোনা যাক।
প্রেম থেকে বিয়ে.. উদাহরণ হিসাবে প্রথমেই আমজনতার কাছে উঠে আসবে নবাব পতৌদি বনাম শর্মিলা ঠাকুরের প্রেমের কাহিনি। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় অক্সফোর্ড থেকে ডিগ্রিধারী সুদর্শন চেহারার মনসুর আলি খান পতৌদি একটা সময় বলিউড নায়িকাদের কাছে ছিলেন সুপার হিরো। ভুপালের রাজ পরিবারের ছেলে, তার ওপর আবার ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। কাজেই অভিনেত্রীদের কাছে তাঁর একটা আলাদা গুরুত্ব ছিল সব সময়ই। তবে ভালবাসার মানুষ হিসাবে পতৌদি বেছে নিয়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রী শর্মীলা ঠাকুরকে।
১৯৬৫ সালে দিল্লিতে এক বন্ধুর মাধ্যমে পতৌদির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল শর্মিলার। কিন্তু তারপরও শর্মীলাকে জীবন সঙ্গীনী হিসাবে পেতে নবাব পুত্তরকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল বেশ কয়েকটা বছর। কেননা জন্মসূত্রে শর্মীলা ছিলে গোড়া হিন্দু পরিবারের মেয়ে। অন্যদিকে পতৌদির পরিবার ছিল মুসলিম ধর্মাবলম্বী। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁদের দুজনের ভালবাসার কাছে হার মানে ধর্মের গোড়ামি। সাতাপাকে বাঁধা পড়েন পৌতদি-শর্মীলা। আয়েশা সুলতানা নাম নিয়েই পতৌদিকে বিয়ে করেছিলেন শর্মীলা।
পতৌদি-শর্মীলার প্রেমের পর সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছিল ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ভিভিয়ান রিচার্ডসের সঙ্গে নীনা গুপ্তের প্রেমের কাহিনী। যা নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছিল ক্রিকেটের ২২ গজ থেকে বলিউডের অন্দর মহল পর্যন্ত। তবে রিচার্ড-নীনা গুপ্তের ভালবাসা প্রকাশ পেয়েছিল তাঁদের প্রথম কন্যাসন্তান জন্মের সময়। সালটা ছিল ১৯৮৮। বাণিজ্য নগরীর এক হাসপাতালে বলিউড অভিনেত্রীর কোল আলো করে পৃথিবীর আলো দেখেন এক কন্যসন্তান।
সেই সময় ওই শিশুর পিতৃপরিচয় জানতে চাওয়া হলে, তাঁর মা, দীপ্ত কণ্ঠে বলেছিলেন আইজ্যাক ভিভিয়ান আলেকজান্ডার রিচার্ডস। বেশ তারপরই সংবাদপত্রের আলোচনায় উঠে এসেছিল রিচার্ড-নীনা গুপ্তের প্রেমের কাহিনী। তবে এই প্রেম সাতপাকে বাঁধা না পড়লেও দুজনের ভালবাসার গল্প যে রূপকথা হয়ে আজও থেকে গিয়েছে বইয়ের পাতায়। এরপর থেকে কন্যা সন্তান মাসাবাকে নিজের দায়িত্বেই বড় করে তুলেছেন অভিনেত্রী নীনা।
এরপর যে দুজনের প্রেমের কাহিনী ঝড় তুলেছিল ক্রিকেটের ২২ গজ থেকে বলিউডের অন্দরমহলে তাঁরা হলেন পাকিস্তানের ক্রিকেটার মহসীন খান বনাম রীনা রায়ের প্রেমের কাহিনী। এই দুজনের প্রেম শেষ পর্যন্ত সাতপাকে বাঁধা পড়ে ১৯৮৩ সালে। যখন বলিউড কাঁপিয়ে অভিনয় করছেন রীনা। অন্য দিকে পাকিস্তানের হয়ে দাপটে ক্রিকেট খেলছেন মহসীন। লর্ডসে প্রথম পাক কিক্রেটার হিসাবে শতরান হাঁকানো মহসীন-রীনার বিবাহিত জীবন সুখের হয়নি। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ডিভোর্স হয়ে যায় তাঁদের। এমনকি তাঁদের একমাত্র কন্যা সন্তানের অধিকার নিয়ে জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত।
আশির দশকের ক্রিকেটারদের প্রেমের কাহিনীর পর নয়ের দশকে ফের এক ক্রিকেটারের প্রেমের কাহিনী তোলপাড় করে দিয়েছিল ক্রিকেটের ২২ গজ থেকে বলিউড সর্বত্র। এই দুজন হলেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিন ও অভিনেত্রী সঙ্গীতা বিজলানি। বলিউড অভিনেতা সলমন খানের সঙ্গে ১০ বছরের ভালবাসার সম্পর্ক যখন পরিণতির দিকে এগিয়েছিল ঠিক তখনই সলমানকে ছেড়ে আজহারের প্রেমে আবদ্ধ হলেন সঙ্গীতা। তাঁদের এই ভালবাসা বাঁধা পড়ে সাতাপাকেও।
আজহার-সঙ্গীতার পরই আলোচনায় আসবে বিরাট-অনুষ্কার প্রেমের কাহিনী। ২০১৩ সালের একটা বিজ্ঞাপনের শ্যুটিংয়ে তাঁদের পরিচয় হয়েছিল। তারপর তা পরিণতি পায় বিবাহে। বর্তমানে দুই সন্তানকে নিয়ে ভালই আছেন বিরাট-অনুষ্কা জুটি। এরপর ব্যর্থতার প্রেমের কাহিনী-ও কম নয়। তবে সেই তালিকায় রয়েছেন অনেকেই। শোনা যায় সেই তালিকায় রয়েছেন সন্দীপ পাতিল থেকে ওয়াশিম আক্রমরাও।