নিজস্ব চিত্র
Bangla Jago Desk: সুদীপ্ত ভট্টাচার্য: বৈশাখের প্রখর রোদকে মাথায় নিয়েই লেসলি ক্লডিয়াস সরণী দিয়ে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা চলেছেন তাঁদের প্রিয় ক্লাবে। মঙ্গলবার বাংলা নববর্ষ। আর এই নববর্ষের দিনেই চিরচারিত প্রথা মেনে গোটা ময়দানজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় বার পুজো। গোটা মরসুম ভাল কাটার শপথ মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমেই নিয়ে থাকেন দলীয় ফুটবলাররা। এটাই বাঙালির রীতি হয়ে আসছে যুগ-যুগ ধরে। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় শুরু হয় ইস্টবেঙ্গলের বারপুজো। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আগামী মরসুমে দলের অধিনায়ক নাওরমে মহেশ সিং, লালচুংনুঙ্গা, কোচ অস্কার ব্রুজো, সহকারী কোচ বিনো জর্জ-সহ লাল-হলুদের ফুটবল সচিব সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার, রাজ্যোর ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, প্রাক্তন ফুটবলার মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, অলোক মুখোপাধ্যায়, অমিত ভদ্র, অমিতাভ চন্দ, মেহতাব হোসেন, সৌমিক দে, অর্ণব মণ্ডল, সুলে মুসা, আলভিটো ডি-কুনহা দীপঙ্কর রায়-রা।
উপস্থিত ছিলেন ক্লাব প্রেসিডেন্ট মুরারিলাল লোহিয়া, শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার সহ অন্যান্য কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন আইএফএ-র প্রেসিডেন্ট অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়, সিএবি-র প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিষ গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া, সিএবি-র প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে সহ বিশিষ্ট জনেরা। এক কথায় বলা যেতে সকাল থেকেই লাল-হলুদ তাঁবু পরিণত হয়েছিল চাঁদের হাটে।
এরই মাঝে মহমেডান কর্তা ইস্তিয়াক আহমেদ রাজু ও দীপেন্দু বিশ্বাস এসে ফুল ও মিষ্টি দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে যান ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের। এটাই ময়দানের পুরনো ঐতিহ্য। মাঠের লড়াই মাঠেই থাক। মাঠের বাইরে নয়। এই সম্প্রীতির বার্তাই তো দেয় ফুটবল।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন লাল-হলুদের মহিলা দলের ফুটবলার, কোচ, সাপোর্ট স্টাফ থেকে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল অ্যাকাডেমির ফুটবলাররা। এক অভূতপূর্ব পরিবেশ। মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গল দলের অনুশীলন ছিল নিজেদের ঘরের মাঠে। সেই সুযোগকে খেলোয়াড়দের ছুঁয়ে দেখা, এবং তাঁদের সঙ্গে সেলফি তোলার সুযোগ হাতছাড়া করলেন সমর্থকরা।
[আরও পড়ুন: মুরগির বদলে খাঁচার ভিতরে মানব শিশু! ভাইরাল ভিডিও ঘিরে শোরগোল নেটপাড়ায়]
প্রিয় ক্লাবের সমর্থনে জয়ধ্বনি দিতে আসন্ন সুপার কাপে ভাল ফলের আকুতি জানাতেও ভুললেন না তাঁরা। সঙ্গে অবশ্যই বাড়তি পাওনা খেলোয়াড়দের সঙ্গে সেলফির সুযোগ মুঠোফোনে বন্দি করার। অবশ্য সমর্থকদের নিরাশ করলেন না লাল-হলুদ ফুটবলাররা। হাত নেড়ে সমর্থকদের আশা পূরণের আশ্বাস দিয়েই গাড়িতে চড়ে রওনা হলেন তাঁরা।
এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্যই যেন ফের একবার সকলকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল, ফুটবলের সোনায় মোড়া অতীতের সেই দিনগুলিকে। এটাই তো বাঙালির আবেগ, ভালবাসা সবকিছু। যতই ময়দানে কর্পোরেট ছোঁয়া লাগুক সমর্থকদের এই ভালবাসা এবং ১ বৈশাখ বার পুজোর অনুষ্ঠান থেকে যাবে যুগ-যুগ ধরে।