Bangla Jago TV : মৌ বসু , ঝড়-ঝঞ্ঝার হাত থেকে গোটা গাঙ্গেয় বঙ্গকে ঢাল হয়ে রক্ষা করে সুন্দরবন। কিন্ত বিশ্বের বৃহত্তম বদ্বীপ বা ডেলটা সুন্দরবন আজ ভয়াবহ বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে। এর মূল কারণ হল ক্রমবর্ধমান ভয়ঙ্কর বায়ুদূষণ। আইআইটি কানপুর ও কলকাতার বোস ইনস্টিটিউটের গবেষকদের করা যৌথ গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। কলকাতা ও লাগোয়া অঞ্চলের পাশাপাশি গোটা ইন্দো গ্যাঞ্জেটিক সমতল ভূমির বায়ুদূষণের ফলে যে পরিমাণ ব্ল্যাক কার্বন বাতাসে মিশেছে তার কুপ্রভাব সরাসরি সুন্দরবনের ওপর পড়েছে।
গবেষক অধ্যাপক অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ থেকে যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বেরোয় তাই টক্সিন বিষাক্ত দূষণকারী গ্যাসের পরিমাণ কমায়। কিন্তু দূষণের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের নদীতে মিশেছে ভারী ধাতু। যা শুধু ম্যানগ্রোভের কোষের আমূল পরিবর্তন ঘটায়নি জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীদের জন্য বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করে। আমরা গবেষণায় দেখিয়েছি বায়ুদূষণের ফলে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ ইকোসিস্টেম এবং বায়োজিওকেমিস্ট্রির ওপর কী ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে।’ গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে Elsevier নামক আন্তর্জাতিক জার্নালে।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, জনসংখ্যা কম হলেও যে কোনো দূষিত শহরের মতোই সুন্দরবনের আকাশেও বায়ুদূষণ সৃষ্টিকারী পিএম ২.৫ পদার্থ যথেষ্ট বেশি পরিমাণে আছে। কাছাকাছির শহরের পাশাপাশি সুন্দরবনের গ্রাম থেকেও বায়ুদূষণ হচ্ছে বলে গবেষণায় বলা হয়েছে। গবেষকদের মতো আমাজন রেন ফরেস্টের চেয়েও বেশি পরিমাণে বায়ুদূষণের মূল কারণ গ্রিন হাউজ গ্যাস শুষে নিতে পারে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। এক্ষেত্রে জালের মতো ভূমিকা নেয় সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। কিন্তু বায়ুদূষণের ফলে বঙ্গোপসাগর ও ম্যানগ্রোভ জীববৈচিত্র্যের মধ্যে ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।