Bangla Jago Desk: এক বছর আগে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ ২৮) জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমিয়ে আনার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তার কোনও লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না। এখন আজারবাইজানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কপ ২৯। আর এ বছর বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে নতুন রেকর্ড হতে যাচ্ছে। এবারের কপ ২৯ সম্মেলনে দেওয়া নতুন তথ্য অনুযায়ী, কয়লা, তেল কিংবা গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির কারণে এই গ্রহকে উত্তপ্তকারী কার্বনের নিঃসরণ গত বছরের চেয়ে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। অথচ ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ৪৩ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে এবং বিশ্বের মানুষের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের নাটকীয়ভাবে বাড়তে থাকা প্রভাব মোকাবিলার জন্যই এটা করা দরকার।
গত বছর দুবাইয়ের অনুষ্ঠিত কপ ২৮ সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ফিরে আসার ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন বৈশ্বিক নেতারা। সে সময় এ সিদ্ধান্তকে বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বলা হয়েছিল, কারণ, এর আগের ২৭টি সম্মেলনে কখনওই এমন প্রস্তাব আসেনি। বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারকেই মূল কারণ বলে বিবেচনা করা হয়।
গত সোমবার কপ২৮–এর সভাপতি সুলতান আল জাবের বাকুর কপ ২৯ সম্মেলনে বলেন, ইতিহাস আমাদের কাজ দেখে বিচার করবে, কথায় নয়। গত এক দশকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার ও যন্ত্রচালিত মোটরযান বেড়ে যাওয়ার ফলে কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধির পরিমাণ কিছুটা কমেছে। কিন্তু গত এক বছরেই বিশ্ব মারাত্মক সব তাপপ্রবাহ, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ দেখেছে। আর এর ফলে বাকুতে এখন অনুষ্ঠিত সম্মেলনে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার দ্রুত কমানোর ক্ষেত্রে সেখানে অংশ নেওয়া নীতিনির্ধারকদের ওপর একটি চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
এবারের কপ ২৯ সম্মেলনে মূল আলোচ্য বিষয় হবে, উন্নয়নশীল দেশের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত কমাতে কয়েক হাজার কোটি ডলারের বন্দোবস্ত করা। যাতে এসব দেশ কার্বন নিঃসরণ করতে পারে এবং তাদের দেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন করতে পারে। তবে এ সময় কার্বন নিঃসরণের এই জলবায়ু বিশারদদের ভাবিয়ে তুলছে। এ তথ্য দিয়েছে গ্লোবাল কার্বন বাজেট নামে বিশ্বের শতাধিক বিশেষজ্ঞের একটি জোট। এর প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব এক্সিটারের অধ্যাপক পিয়েরে ফ্রাইডলিংস্টেইন বলেন, বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের নাটকীয় প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো কমার কোনও লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না।