১) আহমেদাবাদের এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেছেন বিমানযাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশ। এরকমই আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটে ১৯৭১ সালে। প্রবল ঝড়বৃষ্টিতে যাত্রীবাহী বিমান ভেঙে পড়ে পেরুর অ্যামাজনের ঘন জঙ্গলে। বিমানটি টুকরো টুকরো হয়ে যায়। কিন্তু ৩ হাজার ফুট ওপর থেকে অ্যামাজনের জঙ্গলে পড়েও রক্ষা পান ১৭ বছরের জুলিয়ান কোয়েপকে নামে এক তরুণী।
২) ১১ দিন সম্পূর্ণ একা অ্যামাজনের জঙ্গলে থেকেও প্রাণে বেঁচে যান তিনি। ১৯৭১ সালে বড়দিনের আগের দিন মায়ের সঙ্গে লানসা ফ্লাইট ৫০৮ বিমানে চেপে যাচ্ছিলেন জুলিয়ান। মাঝআকাশে প্রবল ঝড়বৃষ্টির মধ্যে বিমানটি।
৩) বিমানে জানলার দিকে আসনে বসেছিলেন জুলিয়ান। বিমান প্রায় পৌঁছে গিয়েছিল নির্দিষ্ট গন্তব্যে। মাঝের আসনে বসেছিলেন তাঁর মা মারিয়া। অবতরণের ১৫ মিনিট আগে বিমানের ডানায় তীব্র আওয়াজ ও আলোর ঝলকানির মাধ্যমে বাজ পড়ে। বিমানটি তীব্র ঝাঁকুনি দিয়ে কাঁপতে কাঁপতে নাক বরাবর হুহু করে নীচে নামতে শুরু করে। যাত্রীদের ওপর ব্যাগ, জামাকাপড় পড়তে শুরু করে।
৪) এরপর বিমানের ভেতরে নয় খোলা আকাশের নীচে নিজেকে আবিষ্কার করেন জুলিয়ান। বিমানটি যেন ছিটকে বের করে দেয় তাঁকে। অ্যামাজনের ঘন জঙ্গল থেকে সভ্য জগতে ফিরে আসা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল বিমান দুর্ঘটনায় শারীরিক ও মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত জুলিয়ানের কাছে।
৫) ১৯৫৪ সালে জন্ম জুলিয়ানের। বাবা হান্স উইলহেম কোয়েপকে একজন বিখ্যাত প্রাণীবিদ। মা মারিয়া একজন বিজ্ঞানী। দু'জনে মিলে পেরুর অ্যামাজন জঙ্গলের ভেতরে বায়োলজিক্যাল রিসার্চ স্টেশন তৈরি করেন।
৬) আকাশ থেকে মাটিতে ধপাস করে পড়ে বিভিন্ন হাড় ভেঙে যায় জুলিয়ানের। মন ছিল বিধ্বস্ত। গোটা রাত অচৈতন্য অবস্থায় ছিলেন তিনি। পরদিন সকালেও চশমা না থাকায় কিছু দেখতে পাচ্ছিলেন না। কোনো রকমে উঠে দাঁড়িয়ে চলতে শুরু করেন। পাখির কলরব আর ব্যাঙের ডাক শুনে বুঝতে পারেন রিসার্চ সেন্টার থেকে বেশি দূরে নেই তিনি।
৭) ঘন জঙ্গলে উঁচু উঁচু গাছের আড়ালে থাকে বলে জুলিয়ানকে দেখতে পায়নি উদ্ধারকারী বিমান। রোদে পুড়ে, খাবার না পেয়ে শারীরিক ও মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত জুলিয়ান ভেবেছিলেন তিনি হয়ত মরে যাবেন।