চিত্র : নিজস্ব গ্রাফিক্স
Bangla Jago Desk: সইফ খান: যেখানে সারা দেশজুড়ে ধর্মীয় বিভেদ, জাতপাত, রাজনীতি আর গোঁড়ামির চাপে সম্পর্কগুলো জটিল হয়ে উঠছে, ঠিক সেই সময়ে মুর্শিদাবাদের মোথাবাড়ির এক ছোট্ট স্কুলে লেখা হচ্ছে এক অনন্য গল্প — বন্ধুত্বের, সম্প্রীতির, মানবতার গল্প।
ওলিটোলা প্রাইমারী স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর দুই ছাত্র, সন্দীপ কাহার ও সোলেমান শেখ — একজন হিন্দু, অন্যজন মুসলিম। কিন্তু এই পরিচয় ওদের বন্ধুত্বের সামনে কোনো বাধা হতে পারেনি। ওরা একসাথে ক্লাসে বসে, খেলে, হাসে, এমনকি এক থালায় বসে খায়।
ওরা জানে না ধর্ম মানে কী, জাতপাত মানে কী। ‘জামাত’ কী বা ‘কওম’ কী — এসব শব্দ ওদের জীবনে নেই। ‘আরএসএস’, ‘হিন্দুত্ব’, ‘ইসলামি মৌলবাদ’ — এসব বিভেদের রাজনীতির ভাষা তাদের বোঝার বাইরে। তাদের ছোট্ট জগতে শুধুই খেলার মাঠ, বইয়ের পাতা, আর এক বন্ধুর হাত ধরা আরেক বন্ধুর পাশে থাকার গল্প।
ওদের বন্ধুত্বে নেই কোনও কৌশল, নেই কোনও স্বার্থ। শুধু আছে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, সরলতা আর মানুষকে আপন করে নেওয়ার অদম্য ইচ্ছা। সন্দীপের গায়ে হিন্দু ধর্মের ছোঁয়া, সোলেমানের জীবনে ইসলামিক সংস্কারের রং — কিন্তু তা কখনোই বন্ধুত্বের দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়নি। ওদের চোখে ধর্ম মানে নয়, ভালোবাসাই আসল।
[আরও পড়ুন: একই রাতে পরপর চারটি বাড়িতে দুঃসাহসিক চুরি! লুটপাট করা হয়েছে লক্ষ টাকার সোনার]
এই দুই শিশুর বন্ধুত্ব আজ বাংলার হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। যেখানে বড়রা ধর্মের নামে বিভেদ সৃষ্টি করে, সেখানে সন্দীপ ও সোলেমান শেখাচ্ছে — কেমন করে সম্প্রীতি গড়ে তোলা যায়।এই গল্প কেবল একটি স্কুলের নয়, এটি একটি সমাজের, একটি জাতির, একটি ভবিষ্যতের গল্প — যেখানে মানুষ পরিচিত হবে না তার ধর্ম বা জাতি দিয়ে, বরং তার হৃদয়ের বিশুদ্ধতা, ভালোবাসা আর বন্ধুত্ব দিয়ে। আজ সন্দীপ আর সোলেমানের মুখের সেই নির্মল, নিষ্পাপ হাসি আমাদের মনে করিয়ে দেয় — আমরা সবাই মানুষ, আর মানুষই মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয়।