Bangla Jago Desk: কেরল বরাবরই কংগ্রেস বা বামেদের হাতে থেকেছে। ৫বছর অন্তর পরিবর্তনই ট্রাডিশন এই রাজ্যে। রাজনৈতিক পালাবদলে হাওয়া তুলতে পারেনি মোদি–শাহরা। কাজ করেনি মোদি ম্যাজিক। শত চেষ্টা করেও কেরলে পদ্ম ফোটাতে পারেনি বিজেপি। কাজ দেয়নি তাঁদের কোনও কৌশলই। আরএসএসকে দিয়ে সংগঠন বিস্তারের চেষ্টা করলেও তাতে ফল হয়নি। কারণ কেরলের জনসংখ্যার প্রায় ৪৫% অ-হিন্দু। এই সংখ্যাগরিষ্ঠ অ-হিন্দু ভোটারের সমর্থন ছাড়া কেরলে কোনো দলেরই নির্বাচনী সাফল্য সম্ভব নয়। বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি এই অ-হিন্দু ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
কেরলে, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে ২০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস-জোট পেয়েছিল ১৯টি, বামজোট পায় ১টি আসন। উনিশে কংগ্রেস-জোট পায় ৪৭ শতাংশ, ভোট, বাম জোট পায় ৩৬ শতাংশ, বিজেপির দখলে থাকে ১৬ শতাংশ ভোট। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে উপকূল অধ্যুষিত রাজ্যে কংগ্রেস-জোট ৩৯ শতাংশ,এবং বাম-জোট ৪৩ শতাংশ ভোট পায়। চেষ্টা করেও বিজেপি বিধানসভায় খাতা খুলতে পারেনি। বামেরা পেয়েছিল ৯৯টি আসন আর কংগ্রেস-জোট পায় ৪১টি আসন। বিগত দশকের চেয়ে তাদের ভোটের হার সামান্য বেড়েছে। কিন্তু আজও এই রাজ্য থেকে লোকসভায় বিজেপি কোনো সাংসদ জিততে পারেনি।
কেরলে বামদলগুলোর শক্ত ভিত্তি রয়েছে। বামদলগুলো দীর্ঘদিন ধরে কেরলের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। তারা সামাজিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের নীতির মাধ্যমে কেরলের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। বিজেপির জাতীয়তাবাদী ও হিন্দুত্ববাদী নীতির সাথে বামদলগুলোর এই সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতির তীব্র দ্বন্দ্ব রয়েছে। এছাড়াও, কেরলের ভোটারেরা সাধারণত প্রগতিশীল ও উদারপন্থী ধারার। তারা ধর্মীয় উন্মাদনা ও বিভাজনের রাজনীতির প্রতি সহনশীল নয়। এই কারণেও বিজেপি কেরলে সাফল্য পায়নি।
বিজেপি কেরলে সাফল্য পেতে হলে তাঁদেরকে তাঁদের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি থেকে সরে এসে একটি প্রগতিশীল ও উদারপন্থী রাজনীতি গ্রহণ করতে হবে। এছাড়াও, তাদেরকে বামদলগুলোর সামাজিক ও অর্থনৈতিক নীতির সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে। তবেই তারা কেরলে সাফল্যের আশা করতে পারে। কেরলে বিজেপির ব্যর্থতা শুধুমাত্র দলের অন্তর্গত কারণে নয়, বরং রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটের কারণেও হয়েছে। বিজেপি যদি এই প্রেক্ষাপটকে উপলব্ধি করে তাদের রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে, তাহলে তারা কেরলে সাফল্যের আশা করতে পারে।
Free Access