চিত্রঃ নিজস্ব গ্রাফিক্স
Bangla Jago Desk: ‘না খাউঙ্গা না খানে দুঙ্গা…’। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু এবার মোদি জমানার সবচেয়ে বড় মেডিক্যাল দুর্নীতির পর্দাফাঁস করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কোটি কোটি টাকা ঘুষ। টাকার বিনিময়ে কলেজের অনুমোদন থেকে শুরু করে কোয়ালিটি কন্ট্রোল – কেলেঙ্কারির পর্দাফাঁস করল সিবিআই। মামলায় নাম জড়িয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন, বহু বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিদের এবং এমনকী ইউজিসি-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর বর্তমান চ্যান্সেলর ডি পি সিং-এরও।(Medical Corruption)
[আরও পড়ুনঃ Russia-Ukraine: ইউক্রেনের যুদ্ধে রাশিয়ার পাশে চিন, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে জানাল বেজিং]
কী হয়েছে মোদি জমানার এই অন্যতম সর্ববৃহৎ মেডিক্যাল আর্থিক দুর্নীতিতে? সিবিআই জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে চলা এক সুপরিকল্পিত অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মেডিক্যাল কলেজগুলির স্বীকৃতি, পরিদর্শন ও নবীকরণের গোপন সরকারি তথ্য ফাঁস করা হচ্ছিল। কল্পিত পরিকাঠামোর প্রদর্শন, ভুয়ো শিক্ষক ও রোগীর ব্যবস্থাপনা, ঘুষের বিনিময়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার মনপসন্দ রিপোর্ট সংগ্রহও চালানো হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। এই কেলেঙ্কারিতে নাম রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারি অফিসার, বেসরকারি কলেজ কর্তা, মধ্যস্থতাকারী, এমনকী মেডিক্যাল রেটিং বোর্ডের সদস্যদেরও। সিবিআইয়ের এফআইআরে বলা হয়েছে, দিল্লির এক দল সরকারি আধিকারিক, যাঁরা স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, তাঁরাই গোপন সরকারি নথির ছবি তুলে পাঠিয়ে দিতেন বেসরকারি কলেজের সঙ্গে যুক্ত দালালদের কাছে। সেই তথ্যের মধ্যে থাকত নির্দিষ্ট দিনে কোন কলেজে পরিদর্শন হবে, কোন আধিকারিক যাবেন এবং রিপোর্টে কী কী বলা হয়েছে, এই সব তথ্য। সরকারের আন্ডারে থাকা ‘মোল’-দের কাছে আগাম খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট কলেজগুলি সাজিয়ে রাখত বানানো ছবি। পুরোপুরি ফিল্মি কায়দায় কিছুক্ষণের জন্য ভাড়া করা ফ্যাকাল্টি, ভাড়া করে আনা ভুয়ো রোগী ইত্যাদি দেখিয়ে জালিয়াতি চলত নিয়মিত। এর বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হত বলেও অভিযোগ।(Medical Corruption)
[লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/Banglajagotvofficial]
ভারতের অন্যতম সর্ববৃহৎ মেডিক্যাল কেলেঙ্কারিতে জড়িত যে ৩৪ জনের নামে এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন স্বঘোষিত ধর্মগুরু রাওয়াতপুরা সরকার ওরফে রবিশঙ্কর মহারাজ, গুরুগ্রামের বীরেন্দ্র কুমার, দ্বারকার মনীষা যোশী, ইন্দোরের ইনডেক্স মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান সুরেশ সিং ভদোরিয়া, উদয়পুরের গীতাঞ্জলি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ময়ূর রাওয়াল সহ একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের ধারণা, এটা ভারতের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ মেডিক্যাল কলেজ কেলেঙ্কারির মধ্যে একটি। উত্তর ভারতের প্রায় সব রাজ্যের পাশাপাশি দক্ষিণেও ছড়িয়ে এর জাল। এই কেলেঙ্কারির নেপথ্যে রাজনৈতিক যোগ রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু পূর্ববর্তী সরকারের আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে বারবার সরব হওয়া মোদি সরকারের মন্ত্রীরা কিংবা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এই কেলেঙ্কারি নিয়ে কী বলেন, সেটাই দেখার।(Medical Corruption)