ad
ad

Breaking News

Aligarh

প্রেমের টানে পাকিস্তানে পাড়ি, শেষমেশ পড়শিদেশের জেলেই বন্দি ভারতীয় যুবক

এক তরুণ, যিনি প্রেমের জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন, শেষমেশ জীবন কাটাচ্ছেন এক বিদেশি জেলের অন্ধকার কোঠরে। তাঁর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখন নির্ভর করছে পাকিস্তানের আইনি প্রক্রিয়া এবং মানবিকতার ওপর।

Indian youth who migrated to Pakistan for love ends up in jail in neighboring country

চিত্র- প্রতীকী

Bangla Jago Desk: সইফ খান: প্রেম কখনও জাত-ধর্ম মানে না, মানে না সীমান্তের কাঁটাতারও। কিন্তু বাস্তবের কঠোর নিয়মের সামনে অনেক প্রেমের গল্পই হারিয়ে যায়। এমনই এক মর্মান্তিক কাহিনি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের যুবক বাদল বাবুর জীবনে। সমাজমাধ্যমের সূত্রে গড়ে ওঠা এক প্রেমের টানেই তিনি অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে চলে যান। সেখানে প্রেমের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়, বদলে শুরু হয় বন্দিজীবন।

প্রায় দুই বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে বাদলের পরিচয় হয় পাকিস্তানের এক যুবতী সানা রানির সঙ্গে। কথোপকথন থেকে ক্রমে গাঢ় হয় সম্পর্ক, জন্ম নেয় গভীর প্রেম। একসময় দু’জনেই ঠিক করেন যে তাঁরা একসঙ্গে জীবন কাটাবেন। তবে বাদল তখনও জানতেন না যে সানার বাড়ি পাকিস্তানে। যখন সত্য জানতে পারেন, তখনও প্রেমের বাঁধনে এতটাই জড়িয়ে পড়েছিলেন যে সব বাধা অগ্রাহ্য করে পাকিস্তানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, একদিন গোপনে ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে তিনি পাকিস্তানে প্রবেশ করেন। প্রেমিকার বাড়ি ছিল পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মান্ডি বাহাউদ্দিন জেলার বিলাওয়াল কলোনিতে। সেখানে গিয়েই তাঁর স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন বাদল।

পাকিস্তানে পৌঁছে বাদল নিজের পরিচয় গোপন করেন। স্থানীয় এক গরু ব্যবসায়ীর গোয়ালে কাজ নেন এবং নিজেকে ‘রেহান’ নামে পরিচয় দেন। তিনি জানান, তাঁর বাড়ি করাচিতে এবং তাঁর পরিবারে কেউ নেই। স্থানীয় ব্যবসায়ী হাজি খান আসগর তাঁর এই কথা বিশ্বাসও করেন।

ধীরে ধীরে বাদল তাঁর প্রেমের গল্প খুলে বলেন এবং সানার সঙ্গে বিয়ের ইচ্ছার কথা জানান। কিন্তু সমস্যা বাধে তখনই, যখন সানার পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নিতে অস্বীকার করে। সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে, আর কিছুদিনের মধ্যেই বাদলের আসল পরিচয় প্রকাশ্যে আসে।

সানার পরিবার বুঝতে পারে যে বাদল ভারত থেকে অবৈধভাবে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছেন। আতঙ্কিত হয়ে তাঁরা বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানান। পুলিশ এসে তাঁকে গ্রেফতার করে এবং এখন তিনি পাকিস্তানের এক জেলে বন্দি।

বাদলের হয়ে মামলা লড়ছেন লাহোরের আইনজীবী ফয়জ রাময়। তিনি জানিয়েছেন, বাদল এখন দেশে ফিরতে চান না। পাকিস্তানে আসার পর তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তবে ফয়জের মূল লক্ষ্য হল বাদলকে জেল থেকে মুক্ত করা।

বাদলের কাহিনি শুধু একটি ব্যক্তিগত প্রেমের গল্প নয়, এটি বাস্তবের কঠোর সত্যকেও সামনে এনে দেয়। প্রেম যতই শক্তিশালী হোক না কেন, রাষ্ট্রীয় সীমানা, ধর্মীয় পরিচয় এবং সামাজিক বাস্তবতা অনেক সময় ভালোবাসার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এক তরুণ, যিনি প্রেমের জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন, শেষমেশ জীবন কাটাচ্ছেন এক বিদেশি জেলের অন্ধকার কোঠরে। তাঁর ভবিষ্যৎ কী হবে, তা এখন নির্ভর করছে পাকিস্তানের আইনি প্রক্রিয়া এবং মানবিকতার ওপর।