Bangla Jago Desk: অসমে খ্রিষ্টানদের সংগঠন অসম খ্রিষ্টিয়ান ফোরাম (এসিএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, কয়েক বছর ধরে সংখ্যালঘু খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর ধারাবাহিক আক্রমণের ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন। এসিএফ মুখপাত্র অ্যালেন ব্রুকস এক বিবৃতিতে জানান, কিছু লোক খ্রিষ্টানদের প্রতিষ্ঠান আক্রমণ করছেন। ধর্মাবলম্বীরা যে মূর্তি ও ছবিতে বিশ্বাসী, তা সরানোর দাবি তুলছেন।
একেবারে খোলাখুলিভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ভিন্নমতকে জায়গা দেওয়ার মতো বিষয়কে খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এসিএফের তরফ থেকে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ গির্জা ও ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে অসমের একাধিক জেলায় তদন্ত চালাচ্ছে। এর মধ্যে অসমের মধ্য-দক্ষিণ জেলা কার্বি আংলং ও ডিমা হাসাও এবং পশ্চিম আসামের গোয়ালপাড়া ছাড়াও অন্যান্য জেলা রয়েছে।
এসিএফ বলেছে, এর ফলে একটা ভয় ও হুমকির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। এই ভয় ও হুমকির বাতাবরণের পেছনে রয়েছে ২০২৪ সালে পাস হওয়া একটি আইন। এই আইনের নাম অসম হিলিং (প্রিভেনশন অব ইভিল) প্র্যাকটিসেস অ্যাক্ট। অর্থাৎ নিরাময় (ঘৃণিত কর্ম নিষিদ্ধকরণ) আইন।
ধর্মবিশ্বাসী ও খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা অসুস্থ, দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জন্য যে প্রার্থনা করতেন, সেই প্রার্থনার ঐতিহ্যকে আঘাত করার লক্ষ্যেই বিজেপি শাসিত রাজ্যে এই আইন পাস করা হয়েছে বলে মনে করছে খ্রিষ্টান সংগঠনটি। তারা বলেছে, এটি সরাসরি তাদের সংবিধানগত অধিকারের ওপর একটি আঘাত।
গত ফেব্রুয়ারিতে আইনটি অসমের বিধানসভায় পাস করা হয়। অসম সরকার ও বিজেপি জানায়, এই প্রার্থনার উদ্দেশ্য আদিবাসী সম্প্রদায়কে ধর্মান্তরিত করা। আইনটিতে বলা হয়েছে, আইন লঙ্ঘন করলে আসামির ১ থেকে ৩ বছর জেল, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা দু’টিই হতে পারে।
মধ্য অসমের গোলাঘাট জেলায় প্রাঞ্জল ভূঁইয়া নামের এক খ্রিষ্টান গ্রামবাসীকে সম্প্রতি এই আইনের আওতায় গ্রেফতার করে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি জাদুর সাহায্যে রোগ নিরাময় করছিলেন। তাঁর গ্রেফতারকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে এসিএফ তাদের সাম্প্রতিক বিবৃতিটি দেয়।
এসিএফ জানিয়েছে, বর্তমানে অসম খ্রিষ্টানদের ওপর বড় ধরনের আক্রমণ নেমে আসছে। ডেকান হেরাল্ড সংবাদপত্র জানিয়েছে, সম্প্রতি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক নেতা ডিমা হাসাও-এর হাফলং-এ চার্চের বিরুদ্ধে আদিবাসী–অধ্যুষিত অঞ্চলে মাদক, চোরাচালান ও ব্যবসার অভিযোগ এনেছে। ডিমা হাসাও একটি আদিবাসী–অধ্যুষিত জেলা। এসিএফ বলেছে, এই ঘৃণিত ও মিথ্যা অভিযোগ খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে ব্যথিত করেছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।