Bangla Jago Desk: ভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি একসময় রাম রাজনীতির জন্ম দেয়। উননব্বইয়ের বিজেপি ২ থেকে ৮৯ টি আসনে পৌঁছে যায়। নব্বইয়ে রামরথ চালিয়ে লালকৃষ্ণ আদবানী জাতীয় রাজনীতির মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করেন। তাতে বেশ সফলও হন বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা। ৯৬-এ সবচেয়ে বড় পার্টি হিসেবে উঠে আসে ভারতীয় জনতা পার্টি। লালকৃষ্ণ আডবানীকে কট্টর নেতা হিসেবে তুলে ধরার পাশাপাশি অটল বিহারী বাজপেয়িকে আধুনিক মুখ হিসেবে সামনে আনা হয়। ৯১ তে উদার অর্থনীতির পালে হাওয়া লাগায় বিজেপিও রাজনীতির ছক বদলায়। কংগ্রেসের হাতে ক্ষমতা যাওয়ায় অস্তিত্ব বাঁচাতে ইস্যুতে চমক আনে। চোদ্দোয় আচ্ছেদিনের স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় আসেন হিন্দুত্বের হৃদয় সম্রাট বলে দাবি করা নরেন্দ্র মোদি। বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রতি দেওয়া হয়।
৫ বছরে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় উনিশের ভোটে বালাকোটের অপারেশন বা উগ্র জাতিয়তাবাদের আবেগকেই হাতিয়ার করতে হয় বিজেপিকে। উনিশে ফের ক্ষমতায় ফেরেন গুজরাটের ভূমিপুত্র নরেন্দ্র মোদি। আবারও সেই দেশের আর্থ-সামাজিক বদলের স্লোগান হাতিয়ার করেই। আচ্ছে দিনের সঙ্গে জুড়ে যায় সবকা সাথ সবকা বিকাশ। সেই স্লোগানের কাজের কাজ কত হয়েছে তা নিয়ে বিজেপিতেই সংশয়। কারণ, ২৩-র অক্টোবর পর্যন্ত দেশে বেকারত্বের হার পৌঁছেছে ১০.০৫ শতাংশে। গ্রামীণ কর্মহীনতার হার ১০.৮২ শতাংশ ছাপিয়ে গিয়েছে। ৪৫ বছরে রেকর্ড বেকারত্ব সৃষ্টি হয়েছে দেশে। ১৪-য় জিডিপির হার ছিল ৭ থেকে ৮ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে নেমে আসে ৩.১ শতাংশে। তবে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে জিডিপি ৭ শতাংশের আশেপাশে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।
উন্নয়নমূলক অর্থনীতিতে আশা জাগাতে না পেরে বিজেপি তাই রামমন্দির-৩৭০ ধারার মতো ইস্যুকেই আঁকড়ে ধরছে। ধর্মীয় জিগির তুলেই চব্বিশে বিজেপি ভোটের তরী ভাসাতে তৈরি হচ্ছে। ২২জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধনের মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদি টিকে থাকার কৌশল নিচ্ছেন বলে সোচ্চার বিরোধীরা। অর্থনীতিবিদরাও বেহাল দশা নিয়ে মুখ খুলছেন। ধর্মনিরপেক্ষ দেশে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি আর কাজ দেবে না বলে দাবি বিরোধীদের। বিরোধী শিবিরের সোচ্চার ইস্যু হল.দেশ বাঁচাতে ইন্ডিয়াই ভরসা। তাই ভারত-ইন্ডিয়ার বিতর্কের ঝাঁঝ বাড়ানো কেন্দ্রের শাসকদের শেষ পরিণতি কী হবে সেটাই লক্ষ্যণীয়।
Free Access