চিত্র : সংগৃহীত
Bangla Jago Desk : বাঁকুড়ার বড়দি পাহাড়ে ঘোরার উপযুক্ত সময় হল শীতকাল। তবে ঘন সবুজ জঙ্গলের মাঝে নদীর দু’কূল ছাপানো জল আর বাদল মেঘের ঘনঘটা দেখতে হয়, তবে বর্ষাকাল ছাড়া গতি নেই। তাই এই বর্ষাকালেই কাজের ফাঁকে বেরিয়ে পড়ুন সেই সবুজের সন্ধানে। কলকাতা থেকে গাড়িতে ঘণ্টা পাঁচেকের পথ। সেখানে পৌঁছাতেই আপনাকে স্বাগত জানাবে ঘন সবুজ জঙ্গলে ঘিরে থাকা বড়দি পাহাড়। তাতে যোগ্য সঙ্গত দিতে প্রস্তুত থাকবে নানা প্রজাতির পাখিরা। মনোরঞ্জনের জন্য তৈরী থাকবে প্রজাপতিও।
[ আরও পড়ুন : Northern California: ৩ ঘণ্টার জন্য বেরিয়ে ১০ দিন নিখোঁজ, সিংহের কবল থেকে বেঁচে ফিরলেন যুবক ]
বড়দি পাহাড়। নামটি খুব সুন্দর, তবে পাহাড় না বলে এটাকে টিলা বলাই শ্রেয়। কিন্তু এমন নাম কেন? কারো কারো মতে স্থানীয় বড়দি গ্রামের নামেই এই পাহাড়ের নামকরণ। তবে অনেকে মুখে শোনা যায় আবার অন্য কথা। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ইংরেজদের অত্যাচার মাত্রাতিরিক্ত হয়ে উঠলে বাঁকুড়া অঞ্চলের জমিদার ও তাঁদের লেঠেল বাহিনীরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। রায়পুরের জমিদার দুর্জন সিংহ এই বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন। কিন্তু এক সময় ইংরেজ বাহিনীর কাছে হার মানতে হয় তাঁকে। কথিত আছে, ইংরেজদের কাছ থেকে লুকোতে ওই পাহাড়ে তাঁর বড়দির কাছে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। সেই থেকেই এই পাহাড়ের নাম বড়দি পাহাড়। জায়গাটি প্রকৃতির সঙ্গে নিভৃতে কাটানোর জন্য। চারিদিকে শাল-মহুয়ার বন। খুঁজলে পাবেন পারুল-সহ অন্যান্য বুনো ফুলও। তারই মাঝে বাসা বেঁধে রয়েছে নানা রকমের পাখি। আর আছে কংসাবতী নদী।
[ আরও পড়ুন : Northern California: ৩ ঘণ্টার জন্য বেরিয়ে ১০ দিন নিখোঁজ, সিংহের কবল থেকে বেঁচে ফিরলেন যুবক ]
গ্রীষ্ম-শীত-বসন্তে তাতে হাঁটু সমান জল থাকে। তবে বর্ষায় মুষলধারে কয়েকদিন বৃষ্টি হলেই বদলে যায় নদীর রূপ। নদীর দু’কূল ছাপিয়ে জল বয়ে যায় বালুতটের উপর দিয়ে। বাদল মেঘের সঙ্গে অরণ্যের ঘন সবুজ রঙের সেই বৈপরীত্য আপনার মনকে ভরিয়ে তুলবে। পাহাড়ি জঙ্গলের পথ বেয়ে হেঁটে পৌঁছনো যায় একটি ভিউ পয়েন্টে। সেখান থেকে দেখা যায় আঁকাবাঁকা নদীপথ। বিকেলে ঘুরতে গিয়ে চাক্ষুস করতে ভুলবেন না এই মনোরম দৃশ্য। আর আছে শিবের থান। সেখানেও যেতে হয় পায়ে হেটে। জঙ্গলের চড়াই পথে চলে গিয়েছে পাহাড়ের উপরে, সেখানে নির্জনে আছে এই ছোট্ট শিবের মন্দির। দুই দিনে এই জায়গা ভাল করেই ঘুরে নেওয়া যায়, আর একান্তই যদি কোথাও যেতে ইচ্ছে না করে তো রিসর্টের বারান্দায় বসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে উপভোগ করা যায় বর্ষা ভেজা অরণ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। আর তখনই যদি বৃষ্টি নামে, তা হলে তো আর কথাই নেই।