Bengla jago Desk: উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় অবস্থিত বাংলার বহু প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নস্থল হল চন্দ্রকেতুগড়। যারা বাংলার প্রাচীন ইতিহাস শুনতে ভালোবাসেন, জানতে ভালোবাসেন তাদের জন্য একটি আদর্শ স্থান। বহুবছরের পুরনো ইতিহাসের গন্ধ পাওয়া যাবে এই স্থানে। এক সময় চন্দ্রকেতুগড় কে বলা হত বন্দরনগরী। ইতিহাসের পাতা ওলটালে দেখতে পাবেন প্রাচীন এই নগরীর উৎপত্তি প্রাক মৌর্য যুগের সময়ে। আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর পুরনো এই নগরে আদিবাসীরা শিল্প ও বানিজ্যের সঙ্গে নিযুক্ত ছিল। একদা এই স্থানে খনন কাজ চালানোর পর সুবিশাল দুর্গের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এছাড়াও বহু শিলালিপি , টেরাকোটার অসাধারণ ভাস্কর্য, বহু স্বর্ণ ও রুপোর অলংকার হদিশ পাওয়া গিয়েছিল এই অঞ্চলে।
কথিত আছে রাজা চন্দ্রকেতুর নাম অনুযায়ী এই অঞ্চলের নাম হয় চন্দ্রকেতুগড়। ১৯০৯ সালে প্রখ্যাত ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় চন্দ্রগড়কেতুগড়ের ঐতিহাসিক ও বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা দিয়েছেন। বর্তমানে এই স্থানে গেলে দেখতে পাবেন প্রাচীন দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। চন্দ্রকেতুগড়ের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান খনা মিহিরের ঢিবি। এই প্রাচীন ঢিবি আজ থেকে প্রায় আনুমানিক ৪০০ থেকে ৮০০ খ্রিস্টপূর্বে পুরনো। এই ঢিবিতে দাঁড়িয়ে আপনি অনুভব করতে পারবেন সেই পুরনো বন্দরনগরীকে। এই ঢিবিতে রয়েছে একটি প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ।
খনা মিহিরের ঢিবি থেকে ২ কিমি দূরে অবস্থিত রাজা চন্দ্রকেতু দুর্গ। এক সময় এই দুর্গের পাশ দিয়েই প্রবাহিত হত বিদ্যাধরী নদী। বর্তমানে এই বিদ্যাধরী নদীর জায়গায় রয়েছে চাষের উর্বর জমি। এখানে গেলে নজরে আসবে দুর্গের সেই সুপ্রাচীন গেট। একমাত্র সেটাই অক্ষত রয়েছে। এছাড়াও চন্দ্রকেতুগড়ে রয়েছে ২৫০০ বছরের পুরনো এক সংগ্রহশালা। এই সংগ্রহশালায় পুরাতন দেবদেবীর মূর্তি থেকে শুরু করে, বৌদ্ধ মূর্তি, তামা রুপার মুদ্রা বহু যত্নে রাখা আছে। এই ঐতিহাসিক স্থানে যেতে গেলে ট্রেনে করে পৌঁছে যেতে হবে হাড়োয়া রোড স্টেশন। সেখান থেকে টোটো ধরে পৌঁছে যেতে পারবেন চন্দ্রকেতুগড়।