চিত্র: সংগৃহীত
Bangla Jago Desk: জয় চক্রবর্তী, কলকাতা: ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পালা বদল ঘটে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে বঙ্গে আসে তৃণমূল সরকার। বর্তমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু জনদরদী নেত্রীই নন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে প্রতি পয়লা বৈশাখের দিন জমজমাট আড্ডা হতো। সেই সময় তিনি ছিলেন রাজ্যের প্রধান বিরোধী মুখ।
স্মৃতিচারণায় বর্তমান কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিক দল হিসাবে গঠন হওয়ার আগে থেকেই আমরা প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ সকাল সকাল চলে যেতাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে। সেখানেই একেবারে হালকা মুডে বসতো জমাটি আড্ডা। এই আড্ডার সেরা আকর্ষণ ছিল মমতার নিজের কন্ঠে গান। তখন একটা সিন্থেসাইজার কিনেছিল। ওটা বাজিয়েই গানে গানে মাতোয়ারা করে দিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’
কি গান হতো? শোভনদেব বলেন, ‘মূলত রবীন্দ্র সঙ্গীত। মমতা গাইত আর আমরা সবাই তাল মেলাতাম।’ কিন্তু একটা গোপন তথ্য জানিয়ে রাখি রহস্য করে বললেন কৃষিমন্ত্রী। কিন্তু কি সেই রহস্য? কি সেই গোপন তথ্য? শোনো.. (একটু থেমে) অনেকেই জানে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দারুন গান করত। নিখুঁত সুরে গান করত মমতা। এখন তো গলা ভেঙে গেছে। অনেকেই এখন গান শুনে মমতাকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা বলে। কিন্তু অনেকেই জানেন না, মমতা সত্যি সত্যিই অসাধারণ গান গাইতো।
এর রহস্য উন্মোচন করলেন তৃণমূল কংগ্রেস তথা বাংলার রাজনীতিতে বর্ষিয়ান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তথা কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শুধুই কি গান? বাংলা নতুন বছরের শুরুতে খাওয়া-দাওয়া কী হতো? ‘প্রচুর মানুষ আসতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলার নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাতে। সঙ্গে আনতেন মিষ্টি।
নানান ধরনের মিষ্টি আসতো কালীঘাটে মমতার বাড়িতে। সেই মিষ্টিতে ভাগ বসাতাম আমরা। তবে পয়লা বৈশাখের আড্ডায় মুড়ি সিঙ্গারা থাকতো মাস্ট, জানালেন কৃষিমন্ত্রী। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আরও বললেন,’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারেও খুব সংযত ছিল প্রথম থেকেই। আমরা জোর করলে একটু মিষ্টি হয়তো মুখে তুলত। মুড়ি খেত। এমন সংযম সত্যিই শিক্ষনীয়।’
কালীঘাটের বাড়িতে তৎকালীন বাংলার রাজনীতিতে বিরোধী মুখ এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পয়লা বৈশাখের আড্ডায় শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও থাকতেন সুব্রত বক্সি, সুব্রত মুখোপাধ্যায় সহ অনেকেই। তবে জমাটি আড্ডায় সিপিএমের অত্যাচারের কথাও আসতো।
[আরও পড়ুন: সামশেরগঞ্জ জোড়া খুনে গ্রেফতার দুই ভাই, সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর নজরদারি ]
এবং লাগাতার আন্দোলন করতে হবে নির্দেশও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিত। অর্থাৎ আন্দোলন এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়টি মমতার তখনও যেমন ছিল এখনও সেটা রয়েছে, জানালেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
তৃণমূল কংগ্রেস গঠন হওয়ার পরেও পয়লা বৈশাখের আড্ডা কালীঘাটে হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন মুখ্যমন্ত্রী। বাইরে থেকে দেখলে বুঝবেন না, কিন্তু ও এতটাই দায়িত্ব নিতে পারে যে আমরা নিশ্চিন্তে থাকি।
তবে বাংলার নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাতে ভোলে না। প্রতি পয়লা বৈশাখের সকালে মুখ্যমন্ত্রী তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা বার্তা আমার কাছে অনুপ্রেরণা, আবেগ তাড়িত কন্ঠে জানিয়ে দিলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা এবং রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।