চিত্র: প্রতীকী
Bangla Jago Desk: মাত্র ১০ টাকার ওষুধেই কমতে পারে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের গুরুতর শারীরিক জটিলতা। স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে চালানো এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, লো ডোজ অ্যাসপিরিন (৭৫ এমজি) বেশ কিছু গর্ভবতী নারীর জটিল শারীরিক সমস্যার সমাধান করতে পারে।
স্বাস্থ্য দপ্তরের নতুন সুপারিশ
স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীনে ডিরেক্টর অফ মেডিক্যাল এডুকেশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। সেই কমিটি রাজ্যজুড়ে সমীক্ষা চালিয়ে জানতে পারে, লো ডোজ অ্যাসপিরিন প্রি-এক্ল্যামপসিয়া ও ফেটাল গ্রোথ রেস্ট্রিকশন (FGR) সমস্যা কমাতে সাহায্য করছে।
সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও কলকাতা জেলার ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার অফিসারকে স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, গর্ভবতীদের শারীরিক জটিলতা কমাতে লো ডোজ অ্যাসপিরিন সুপারিশ করা হচ্ছে। তবে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসাররা অন্তঃসত্ত্বার শারীরিক পরীক্ষা করে এই ওষুধ দিতে পারবেন।
প্রি-এক্ল্যামপসিয়া: অন্তঃসত্ত্বার জন্য বিপজ্জনক
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রীরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. রুণা বল জানিয়েছেন, প্রি-এক্ল্যামপসিয়া হলে অন্তঃসত্ত্বার উচ্চ রক্তচাপ, প্রস্রাবে প্রোটিনের উপস্থিতি, তীব্র পেটব্যথা, মাথাব্যথা ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এই সমস্যা সময়মতো নিয়ন্ত্রণ না করলে কিডনি ও লিভারের ক্ষতি, প্ল্যাসেন্টার সমস্যা এমনকি মা ও শিশুর জীবনহানির আশঙ্কা থাকে।
ফেটাল গ্রোথ রেস্ট্রিকশন (FGR): শিশুর বিকাশে বাধা
ডা. রুণা বল আরও জানান, FGR সমস্যায় গর্ভস্থ ভ্রূণের সঠিক বৃদ্ধি হয় না। ফলে শিশুর ওজন কম হতে পারে এবং জন্মের পর নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। লো ডোজ অ্যাসপিরিন এসব ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল দিচ্ছে।
গবেষণায় মিলেছে সফলতা
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) এই বিষয়ে একটি গবেষণা চালিয়ে ইতিবাচক ফল পেয়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, গর্ভাবস্থার শুরুতে যদি নির্দেশ অনুযায়ী লো ডোজ অ্যাসপিরিন সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে এই দুটি সমস্যার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যেতে পারে।
রাজ্যের উদ্যোগ
স্বাস্থ্য দপ্তরের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর মেডিক্যাল অফিসাররাই এই ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারবেন। সরকারি উদ্যোগে স্বল্পমূল্যে এই ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। স্বল্প মূল্যে সহজলভ্য এই ওষুধ অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য এক আশার আলো হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।