Bangla Jago Desk: বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আর কয়েক মাস পরেই। যে বাণিজ্য সম্মেলনের হাত ধরে বাংলায় আরও বিনিয়োগ আসবে। ২০২৫ সালের শুরুতেই মহানগরীতে বসবে এই আন্তর্জাতিক মানের শিল্প সম্মেলনের আসর। আর তার চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌরহিত্যে বড় বড় শিল্পপতিদের উপস্থিতিতে শুক্রবার কলকাতায় অনুষ্ঠিত হল তারই প্রস্তুতি সভা। আলিপুরের সৌজন্যে শীর্ষ শিল্পপতিদের নিয়ে বিজিবিএসের পর্যালোচনায় উঠে এলো একাধিক নতুন ভাবনা। এদিনের সভায় শিল্প উদ্যোগীরা এক সুরে জানালেন শিল্প স্থাপনের সেরা জায়গা বাংলা। শিল্প স্থাপনে বাংলার সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করলেন তাঁরা।
বাংলার শিল্পবন্ধু পরিবেশের কথা উঠে আসে বিভিন্ন জনের আলোচনায়। এদিনের পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বেঙ্গল অম্বুজা গোষ্ঠীর হর্ষ নেওটিয়া থেকে আরপিজি-র সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, আইটিসি-র সঞ্জীব পুরী থেকে রিলায়েন্সের তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা, চর্মশিল্পের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান রমেশ জুনেজা, ইউনিভার্সাল সাকসেস গোষ্ঠীর প্রসূন মুখোপাধ্যায়, টেকনো ইন্ডিয়ার সত্যম রায়চৌধুরী সহ বিশিষ্ট শিল্পপতিরা।
এদিনের সভায় সকলেই একবাক্যে জানিয়ে দিলেন, বাংলায় তাঁরা নিশ্চিন্তে ব্যবসা করছেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতের ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা শিল্পদ্যোগী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার আলিপুরের সৌজন্যে শীর্ষ শিল্পপতিদের নিয়ে বিজিবিএসের পর্যালোচনায় সকলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, শিল্প বিনিয়োগ এবং শিল্পবান্ধব পরিবেশের ক্ষেত্রে বাংলাই সেরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্প-সাধনাকে প্রশংসা করেন সৌরভ।
তিনি বলেন, আমি ক্রিকেটার হলেও শিল্পস্থাপনের পথে ইতিমধ্যেই পা বাড়িয়েছি। আমাদের তৃতীয় স্টিল প্ল্যান্ট আসছে। উৎপাদন শুরু হবে এক বছরের মধ্যে। সূত্রের খবর এদিনের সভায় রসিকতা করে সৌরভ বলেন, তাঁর সমস্ত প্লান্ট যখন সম্পূর্ণ হবে তখন তিনি বুঝতে পারবেন শিল্পপতি হিসেবে কোন জায়গায় তিনি রয়েছেন। এদিনের প্রস্তুতি সভায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শিল্প সম্মেলনে থাকবেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। শিল্প-সম্মেলনে আমেরিকা- জাপান-সহ বিভিন্ন দেশের প্রথম সারির শিল্পগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। এর আগে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাংলা নজর কুড়িয়ে নিয়েছে গোটা বিশ্বের। কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে রাজ্যে। এবারের এই বাণিজ্য সম্মেলন থেকেও আশার আলো উজ্জ্বল।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি থেকে বড় শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে বাংলা নিজেকে প্রমাণ করেছে। বিশেষ করে দেশের পর্যটন মানচিত্রে বাংলা ছাপ রেখেছে। এ-রাজ্যের হোম-স্টের ভাবনা পথ দেখিয়েছে দেশকে। এদিনের এই সভায় বিশিষ্ট শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা বলেন, ২২টি রাজ্যে তাদের ব্যবসা রয়েছে। ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সবদিক থেকে বাংলাই শ্রেষ্ঠ। তিনি গর্বের সঙ্গে একথা জানান। ইউনিভার্সাল সাকসেসের প্রসূন মুখোপাধ্যায়ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। বাংলার সরকার ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা রয়েছে বলে শিল্প পরিচালনায় সুস্থ পরিবেশ বজায় আছে বলে জানান তিনি। এই স্থিতবস্থা বজায় থাকায় তাদের শিল্পগোষ্ঠী বাংলায় লগ্নি করতে পিছপা হন না।
কলকাতায় বিজিবিএসের প্রস্তুতি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা ও ডব্লুবিআইডিসির চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র। যিনি মূলত সূত্রধরের কাজ করেছেন প্রস্তুতি বৈঠকে। ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী-সহ একাধিক আমলা-সহ মন্ত্রী শশী পাঁজা, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম, ইন্দ্রনীল সেন, সুজিত বসু। ছিলেন বিভিন্ন দেশের কনসাল জেনারেলরা। এ ছাড়াও ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিকরা এবং চিত্র- পরিচালক গৌতম ঘোষ।