Bangla Jago TV Desk : মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি আমেরিকান সামরিক সরঞ্জাম কেনার জন্য তাইওয়ানের সঙ্গে ৮০ মিলিয়ন ডলারের অনুদানে স্বাক্ষর করেছেন। ওয়াশিংটনের এমন আচরণের ‘নিন্দা ও বিরোধিতা করেছে চীন।’ সাধারণভাবে দেখলে যুক্তরাষ্ট্রের এই অনুদানের পরিমাণ খুব বেশি নয়। আধুনিক একটি যুদ্ধবিমানের দামও এর চেয়ে বেশি। আর এর আগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের অস্ত্র কিনতে ফরমাশ দিয়েছে তাইওয়ান। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে ৮ কোটি ডলারের এই অনুদানের গুরুত্ব কতটুকু? তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দেখে। তাদের নিজস্ব সংবিধান ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা রয়েছে। তবে দ্বীপটিকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে আসছে চীন। এই ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নিতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
এমনকি চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের ‘একত্রীকরণে’ সামরিক শক্তি খাটানোর হুমকিও দিয়েছে বেইজিং। এমন পরিস্থিতিতে বরাবরই তাইওয়ানকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার বিরোধিতা করে আসছে চীন। তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এই ৮ কোটি ডলার ঋণ নয়, মার্কিন নাগরিকদের করের অর্থ থেকে তা দেওয়া হচ্ছে। আরও বড় কথা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিলেও, সেখানে পকেটের অর্থ খরচ করে অস্ত্র পাঠাচ্ছে। ৪০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে এমন ঘটনা ঘটেনি। যুক্তরাষ্ট্রের এই সহায়তা প্রকল্পের নাম ফরেন মিলিটারি ফিন্যান্স বা বিদেশি সামরিক বাহিনীর জন্য অর্থায়ন। এই প্রকল্পের আওতায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনে ৪০০ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তান, ইরাক, ইসরায়েল, মিসরসহ বিভিন্ন দেশেও এমন সহায়তা গেছে।
১৯৭৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনকে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে তাইওয়ানের কূটনৈতিক স্বীকৃতি তুলে নেয় তারা। এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল তাইওয়ান রিলেশন অ্যাক্ট নামের একটি চুক্তির আওতায়। ওই চুক্তি অনুযায়ী তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। শর্ত ছিল, তাইপের কাছে যুক্তরাষ্ট্রে সেই পরিমাণ অস্ত্র বিক্রি করবে, যাতে তারা চীনের সম্ভাব্য হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে। তবে ওয়াশিংটন-বেইজিং সম্পর্ক অস্থিতিশীল হয়—এমন পরিমাণ অস্ত্র বিক্রি করা যাবে না। এরই মধ্যে গত কয়েক দশকে তাইওয়ান প্রণালি ঘিরে সামরিক ভারসাম্য নাটকীয়ভাবে চীনের পক্ষে গেছে। তাই এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের আগের কৌশল কাজ করছে না। ওয়াশিংটন যদিও জোর গলায় বলছে, তাইওয়ান ঘিরে তাদের নীতি বদলায়নি। তবে সত্যটা হলো, নীতিতে বদল এসেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তড়িঘড়ি করে এটাও বলেছে যে, অনুদান দেওয়ার মানে এই নয় যে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
FREE ACCESS