ad
ad

Breaking News

Middle East

মধ্যপ্রাচ্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি অস্পষ্ট। তবে কিছু পর্যবেক্ষক ট্রাম্পের বক্তব্য প্যালেস্তাইনের গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি হিসাবে দেখছেন।

Middle East could spiral out of control, warns Trump

চিত্র : সংগৃহীত

Bangla Jago Desk: প্রেসিডেন্ট হিসাবে ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের আগেই প্যালেস্তাইনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে ইজরায়েলি পণবন্দিদের মুক্তি দিতে বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যথায় মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।

ট্রাম্প বলেন, ‘এটি হামাসের জন্য ভাল কিছু হবে না। স্পষ্ট করে বললে কারও জন্যই ভাল কিছু হবে না। সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। আমার আর বেশি কিছু বলার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এটাই বাস্তবতা।’

ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি অস্পষ্ট। তবে কিছু পর্যবেক্ষক ট্রাম্পের বক্তব্য প্যালেস্তাইনের গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি হিসাবে দেখছেন। ইজরায়েলকে ব্যাপক অস্ত্র সহায়তা দিলেও গাজায় সরাসরি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপে রাজি হননি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই হুঁশিয়ারি দিয়ে কী বোঝাতে চাইছেন? সাংবাদিক সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনার জন্য আমাকে কি এর ব্যাখ্যা দিতে হবে?’

ট্রাম্পের হুমকির প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হামাস। বর্তমানে আলজেরিয়ায় অবস্থানরত সংগঠনটির শীর্ষ নেতা ওসামা হামদান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের আরও মার্জিত ও কূটনৈতিক ভাষা প্রয়োগ করা উচিত।’ যুদ্ধবিরতি চুক্তি না হওয়ার জন্য ইজরায়েলকে দায়ী করেন এই হামাস নেতা।

এমন সময় ট্রাম্প এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যখন গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় নিয়ে নতুন করে আলোচনা চলছে। এই আলোচনার নেতৃত্ব দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন। আলোচনার অগ্রগতির বিষয়ে নিয়মিত অবহিত করা হচ্ছে নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে।

মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ দূত হিসাবে স্টিভ উইটকফকে মনোনয়ন দিয়েছেন ট্রাম্প। ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি নিয়ে আশাবাদী উইটকফ। যুদ্ধবিরতি আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে বলেও জানান তিনি। উইটকফ বলেন, ‘এই হলেন প্রেসিডেন্ট, এটা তাঁর ভাবমূর্তি যা এই আলোচনায় গতি এনেছে। তাই আশা করছি, এটি (চুক্তি) বাস্তবায়িত হবে এবং আমরা কিছু জীবন বাঁচাতে পারব।’

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধপরবর্তী অস্থায়ী সরকারে অংশগ্রহণ নিয়ে ইজরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। প্যালেস্তিনি কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত এই প্রশাসন গাজার দায়িত্বে থাকবে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এ কথা জানিয়েছে।

পর্দার আড়ালে চলা এই আলোচনার মধ্যে রয়েছে ইজরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিলে আমিরশাহি ও যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে গাজার সরকার, নিরাপত্তা ও পুনর্গঠনের দায়িত্বে থাকতে পারে। প্যালেস্তিনি কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত তারা এ কাজ চালিয়ে যাবে। বেশ কয়েকজন বিদেশি কূটনীতিক ও পশ্চিমি কর্মকর্তা রয়টার্সকে এমনটা জানিয়েছেন।

আমিরশাহি যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা অংশীদার। অধিকাংশ আরব দেশগুলির না থাকলেও ইজরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে দেশটির। কূটনীতিক ও কর্মকর্তারা জানান, এতে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারকে কিছুটা প্রভাবিত করার মতো অবস্থায় আছে আমিরাশাহি।

এদিকে যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইজরায়েল। বুধবার ভোর থেকে কয়েক ঘণ্টায় ইজরায়েলি হামলায় ২১ প্যালেস্তিনি নিহত হন। আল-শাতি আশ্রয় শিবিরে এক হামলায় একই পরিবারে পাঁচ সদস্যের সবাই নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার আরও জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় ইজরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ৫১ জনের দেহ হাসপাতালে পৌঁছেছে। একই সময়ে আহত হয়েছেন ৭৮ জন। এ নিয়ে ১৫ মাস ধরে গাজায় ইজরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৪৫ হাজার ৯৩৬ প্যালেস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লক্ষ ৯ হাজার ২৭৪ জন।