চিত্র : সংগ্রহিত
Bangla Jago Desk : কেউ দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী। কেউ উঠে বসলেও নিজে থেকে করতে পারেন না কোনও কাজ। কারও আবার রোগের নেই কোনও ওষুধ। জীবিত হয়েও যেন তাঁরা মৃত। আর মুক্তির উপায় ? একমাত্র মৃত্যু। সেই সকল মানুষদের জন্য তাঁদের পরিবার-পরিজন থেকে শুরু করে অনেকেই আবেদন করেন স্বেচ্ছায় মৃত্যুর। বিশ্বের বেশকিছু দেশে ইতিমধ্যেই স্বেচ্ছামৃত্যুকে আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এবার এই মর্মে ভোট হল ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে। ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে স্বেচ্ছামৃত্যুকে বৈধ করার লক্ষ্যে ভোটাভুটি হয়।
এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হয় বিস্তর। তবে, অন্যান্য বিষয়ের মতো এই যুক্তি তর্কে দেখা গেল না চড়া সুর। বিতর্কের শুরু থেকেই দুভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন এমপি-রা। বিলের পক্ষেই পাল্লা ভারী হতে দেখা যায়। তবে দু’পক্ষেরই মত, আইন হলে বেশ কিছু কঠোর শর্ত রাখতে হবে। না হলে এই আইনের অপব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে।
শর্তগুলি হল—
১. যিনি স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করবেন তাঁর বয়স হতে হবে ১৮-র বেশি।
২. মারণ ইঞ্জেকশন রোগীকে নিজে নিতে হবে।
৩. তাঁর ছ’মাসের বেশি বাঁচার সম্ভাবনা নেই।
৪. তাঁকে দু’জন চিকিৎসকের কাছে দু’টি পৃথক আবেদন করতে হবে এবং দু’টি আবেদনের মধ্যে অন্তত এক সপ্তাহের ফারাক থাকতে হবে।
তবে, এদিনের ভোটাভুটিতেই যে বিতর্কের অবসান ঘটল, এমনটা নয়। হাউস অফ কমন্সে পাস হওয়ার পর, বিলটিকে পাঠানো হবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউস অফ লর্ডসে। সেখানে পাস হলে, তবেই বিলটি আইনে পরিণত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ১৯৪২ সালে স্বেচ্ছায় মৃত্যু বৈধ করে সুইৎজারল্যান্ড। সুইৎজারল্যান্ডই প্রথম দেশ যেখানে এটি শুরু হয়। স্বেচ্ছায় মৃত্যুর জন্য সেখানে ওষুধ প্রেসক্রাইব করেন ডাক্তাররা। আমেরিকা থেকে শুরু করে কানাডা, বিভিন্ন দেশে বৈধ স্বেচ্ছায় মৃত্যু বা ভলেন্টারি ইউথেনেশিয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ টি রাজ্য স্বেচ্ছামৃত্যুর বিষয়টি বৈধ ঘোষণা করেছে। ওরেগন, কলোরাডো, ওয়াশিংটন, ক্যালিফর্নিয়া তার মধ্যে অন্যতম। তালিকায় রয়েছে নিউ জার্সি, নিউ মেক্সিকো, ভারমন্ট, মন্টানা, হাওয়াইও। অন্যদিকে, ২০১৬ সালে চিকিৎসার সাহায্যে মৃত্যু শুরু করেছে কানাডা। তবে, প্রায় সর্বত্রই স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য ভিন্ন ভিন্ন শর্ত রয়েছে।