ad
ad

Breaking News

Flood

টানা বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গ প্লাবিত, সতর্কবার্তা ভুটান সরকারের

এর মধ্যে জলঢাকা, তোর্সা, রায়ডাক ও সংকোশ নদী যেখানে উত্তরবঙ্গ দিয়ে ঢুকেছে, তার আশপাশে প্রচুর জনবসতি।

bengal-floods-bhutan-nepal-rainfall-alerts

চিত্রঃ নিজস্ব গ্রাফিক্স

Bangla Jago Desk: ব্যাপক বৃষ্টিতে বেহাল অবস্থা নেপাল ও ভুটানের। আর পড়শি দেশের বিপুল বৃষ্টিতে দুর্যোগ উত্তরবঙ্গে। বাংলায় পাহাড় ও সংলগ্ন একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি। ভূমিধসে রাস্তা, সেতু ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যে সবরকম ভাবে কাজে নেমেছে প্রশাসন ও স্থানীয়রা। এর মধ্যে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে বাংলার দুই জেলাকে সতর্ক করল ভুটান। জানা গিয়েছে, ভুটানের টালা বাঁধের গেট খোলা যায়নি বলে নদীর জল উপচে পড়ছে। যে কোনও মুহূর্তে ভেসে যেতে পারে বিস্তীর্ণ এলাকা। তাই জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে সতর্ক করা হল ভুটানের আবহাওয়া দফতরের তরফে।(Flood) 

ভুটান পাহাড় থেকে ডুয়ার্সের দিকে রয়েছে অন্তত ৭২টি নদী ও ঝোরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জলঢাকা, তোর্সা, রেতি, সুকৃতি, পানা, বাসরা, রায়ডাক ও সংকোশ। এর মধ্যে জলঢাকা, তোর্সা, রায়ডাক ও সংকোশ নদী যেখানে উত্তরবঙ্গ দিয়ে ঢুকেছে, তার আশপাশে প্রচুর জনবসতি। শনিবার রাতভর প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হওয়ায় সেই সব এলাকা ইতিমধ্যে প্রায় জলের নিচে ডুবে গিয়েছে। আর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ভুটানের প্রবল বৃষ্টি। সেই সঙ্গে বিপদ আরও বাড়িয়েছে ওয়াংচু নদীর ওপর টালা বাঁধ। সেই বাঁধের গেট খোলা যায়নি বলে জানা গিয়েছে। ফলে ওয়াংচুর নদীর জল প্রায় টইটম্বুর অবস্থা। জলের চাপে যদি কোনও বাঁধ ভেঙে যায়, তাহলে আরও বড় বিপদের আশঙ্কা। সেই প্রবল জলোচ্ছ্বাসের প্রভাব পড়তে পারে উত্তরবঙ্গের ৭২টি নদী ও ঝোরা সংলগ্ন এলাকায়। যার বিস্তীর্ণ অংশই রয়েছে বাংলার দুই জেলা – জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারে। এই দুই জেলায় প্লাবনের আশঙ্কা করেই ভুটানের আবহাওয়া দফতরের তরফে আগাম সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বাংলার দুই জেলাকে।(Flood) 

এদিকে, উত্তরবঙ্গে বিপর্যয় নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলা দলের উদ্দেশে দ্রুত কাজের বার্তা তাঁর। আগে এই নিয়ে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি দেখে কেন্দ্র সেনাকে কাজে নামার নির্দেশ দেয়। ভেঙে যাওয়া সেতুগুলি অস্থায়ীভাবে মেরামতি করে উদ্ধারকাজ শুরু করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সেইমতো কাজে নেমেছে সেনাবাহিনী।(Flood) 

পাশাপাশি লাগাতার ভারী বৃষ্টির জেরে ভূমিধস ও হড়পা বানে নেপালে ৪০ জনেরও বেশি মৃত্যু হয়েছে। নেপালের সশস্ত্র পুলিশ বল (এপিএফ)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত সীমান্তবর্তী পূর্ব ইলম জেলায় মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের। এর পাশাপাশি বন্যায় ভেসে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন ৯ জন। এছাড়া দেশের নানা প্রান্তে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার থেকে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে নেপালজুড়ে। যার জেরে বহু জায়গায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। নেমেছে হড়পা বান। বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তাঘাট। প্রায় সব নদীই বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। দুর্গতদের উদ্ধারকাজে নেমেছে প্রশাসন ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। রাজধানী কাঠমাণ্ডুর উপর দিয়ে বয়ে চলা নদীর অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর। নদীতীরবর্তী অঞ্চল থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের।

নেপাল প্রশাসনের তরফে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, বন্যা ও ভূমিধসের কারণে উদয়পুরে ২ জন, রাউতাহাটে ৩ জন, রাসুওয়ায় ৪ জন এবং কাঠমান্ডুতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। খোটাং, ভোজপুর, রাউতাহাট এবং মাকওয়ানপুর জেলায় বজ্রপাতের জেরে ৮ জন আহত হয়েছেন। এদিকে, পঞ্চথর জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া ব্যাপক বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পূর্ব নেপাল। টানা বৃষ্টিপাতের জেরে সেখানে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের পর সপ্তকোশি নদীর জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারত সীমান্তবর্তী কোশী বাঁধের ৫৬টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।