গ্রাফিক্স: নিজস্ব
Bangla Jago Desk: ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূল। দেশের ৫০০ বছরে একবার এই বন্যা দেখা যায় বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন। এই বন্যা পরিস্থিতির প্রধান কারণ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে প্রশান্ত মহাসাগরের উৎপন্ন হওয়া গভীর একটা নিম্নচাপ। প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে দ্রুত উদ্ধার করতে সেনার সাহায্য নিতে হচ্ছে সরকারকে। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের মধ্যে নর্থ কোস্ট অঞ্চল, এই মুহূর্তে জলের তলায়। টানা চার দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। জরুরী পরিষেবা জানাচ্ছে ট্যারির নিকটবর্তী ম্যানিং নদী ১৯২৯ সালের পর এতটা ভয়ংকর রূপ ধারণ করেনি। নদীর জল বেড়ে ১০০ বছরের বন্যার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
নিউ সাউথ রাজ্যের উত্তরভাগ এই মুহূর্তে বন্যা কবলিত। নিমবাকা, ক্লেইন, ও হেস্টিংসহ ম্যানিং ও ক্লস্টন নদীর জলস্তর বিপদসীমার অনেক উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের উত্তরে গ্রফটন শহর থেকে দক্ষিণের রাজধানী সিডনি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মানুষ এই মুহূর্তে বন্যা কবলিত। বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষদের সাহায্যার্থে অস্ট্রেলিয়ার সরকার খাবার এবং অন্যান্য সাহায্য আকাশ পথে পাঠাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।
সকলকে উদ্ধার করতে জলপথে নৌকো এবং আকাশ পথে হেলিকপ্টারের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে যেদিকে দুচোখ যায় চারিদিকে শুধু জল আর জল বহু বছর বাদে আবার এই দৃশ্য দেখল অস্ট্রেলিয়া নিউ সাউথ ওয়েলসের মধ্যে নর্থ কোস্ট অঞ্চলের মানুষ। জল ক্রমশ বাড়ছে বলে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। পানীয় জলের হাহাকার, যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন এমনকি প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের ভবিষ্যত এই মুহূর্তে অন্ধকারেজলের তলায় গোটা অঞ্চল
আগামী এক অথবা দুদিনে বন্যার পূর্বাভাস রয়েছে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে এমনটাই জানা যাচ্ছে হিসাব অনুযায়ী গত দুদিনের ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে যা দু বছরে হওয়ার কথা আপাতদৃষ্টিতে। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কফস হারবার শহর ও টারই শহর। বন্যায় প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন ৬০০ জনকে হেলিকপ্টার এবং নৌকায় উদ্ধার করতে ইমারজেন্সি রেসকিউ করা হয়েছে পুলিশের সহযোগিতায়। বহু মানুষ এখনোওর ঘর বন্দী। জরুরি সেবা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে, পৃথক পৃথক অভিযান চালানো হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়।বন্যা পরিস্থিতিতে এই।মুহূর্তে প্রায় শতাধিক স্কুল বন্ধ। বিদ্যুৎহীন হাজার হাজার বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
খোলা হয়েছে জরুরি আশ্রয় কেন্দ্র। দুজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে এখনো পর্যন্ত। তিনজন নিহত বলে সরকারি সূত্রে জানা যাচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে আগামী দিনে মৃত্যুর সংখ্যা আরোও বাড়তে পারে।দক্ষিণ উপকূলের নিউ ক্যাসেল এবং আরবি ডল শহরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শহরের মেয়র লর্ড ক্লোভার মুর জানিয়েছেন, বন্যা মোকাবিলায় আপৎকালীন ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে এই মুহূর্তে তেমনি তৈরি বিপর্যয় সামলাতে।
নিউ সাউথ ভিলসের টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে অন্যান্য শহর গুলিতে। যেমন কেম্পসি, পোর্ট ম্যাক কোয়ারি, বেলিশজেন শহর সহ বহু এলাকা বন্যা কবলিত। অস্ট্রেলিয়ায় যদিও প্রতিবছরে কিছু অংশের বন্যা হয়। যেরকম ২০২৫ এর ফেব্রুয়ারিতে কুইন্সল্যান্ড প্রদেশে ভারী বন্যা য় মৃত্যু হয়েছিল একজনের। ২০১৮ সালে এবং ২o১৭ সালে বাঁধের কারণে সৃষ্ট বন্যা উল্লেখযোগ্য ছিল।
অস্ট্রেলিয়ার বন্যার ইতিহাস যদি ঘাটে তাহলে দেখা যাবে ১৮৫২ সালের ২৫ জুন গুন্ডাগাই বন্যা ছিল অস্ট্রেলিয়ার সবথেকে ভয়াবহ বন্যা।তবে এই মুহূর্তে যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় তাতে আবহবিকার বলছেন বিগত ৫০০ বছর এরকম বন্যা দেখা যায়নি।সাধারণত নিউ সাউথ ওয়েলসে বন্যা মূলত নিউ সাউথ ওয়েলসে অবস্থিত নদী গুলিতে অতিরিক্ত প্রবাহের কারণেই ঘটে থাকে। বিভিন্ন পরিস্থিতির নেপথ্যে অবশ্যই জলবায়ু একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হয়ে উঠছে।