Bangla Jago Desk, নদিয়া,মাধব দেবনাথ : এ এক হার না মানার ছেলের গল্প । যেই গল্প সকলকে অবাক করেছে । দশ বছর বয়সে হাতে সাইকেল পড়ে যাওয়ায় গুরুতর আহত হয় হাত। তারপর কালের নিয়মে দিনের পর দিন অসুস্থ থাকার পর, হঠাৎই হাতে ক্যান্সার ধরা পড়ে।পরবর্তীতে চিকিৎসকরা জানান তার হাত কেটে বাদ দিতে হবে।
তারপরেই ব্যাঙ্গালোর গিয়ে সমস্ত চিকিৎসা করা হয় । কিন্তু পারিবারিক আর্থিকভাবে সচ্ছল না থাকার কারণে ফিরে আসতে হয় বাড়িতে। তারপর কৃষ্ণনগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্র প্রচার করে বাদ যায় ডান হাত। ঘটনায় রীতিমতো মনোবল ভেঙে পড়ে ২০২৪ এর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শুভজিৎ বিশ্বাসের।শুভজিৎ এর বাবা কলকাতায় দিন মজুরির কাজ করে। মা লোকের বাড়িতে কাজ করে। কোনরকমে সংসার চালান তাই আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকার কারণে মাসির বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে শুভজিৎ। তবে দীর্ঘ প্রতিকূলতাকে হার মানিয়ে ২০২৪ এর মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ায় খুশি শুভজিৎ সহ তার পরিবার। যদিও শুভজিৎ জানান,যখন হাত কাটা যায় তারপর মনবল ভেঙে পড়ে। কিভাবে পরীক্ষা দেবে।তারপর বাবা-মায়ের আর্থিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অদম্য জেদ চলে আসে শুভজিতের মাথায়। তারপর মনের জোরে বা হাত দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শুভজিৎ।
তারপর দেড় মাসের প্রখর অনুশীলনে বাহাতে লেখা প্র্যাকটিস করে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে নদীয়ার শান্তিপুরের হরিপুর অঞ্চলের শুভজিৎ বিশ্বাস। তবে শুভজিৎ জানায়, সে ভেবেছিল পরীক্ষায় পাশ করতে পারবে না। তার কারণ জটিল অস্ত্রোপচার তারপর হাত বাদ যাওয়া এবং হাতে সময় কম থাকার কারণে পড়াশুনা একদম হয়নি পরীক্ষার প্রশ্ন হয়েছিল অনেকটা কঠিন তবুও যেটুকু পড়াশোনা করেছিল তাতে করে সে ভেবেছিল তার পাশ করা খুব কঠিন কিন্তু বাড়িতে পরিবারের সহযোগিতা এবং তার মনের অদম্য জেদ তাকে সফলতার পথে অগ্রসর করেছে বলেই দাবি করে শুভজিৎ। তবে রাজ্য সরকারের কাছে কাতর আবেদন শুভজিতের পরিবারের যদি রাজ্য সরকার তার পড়াশোনার জন্য এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে যদি আর্থিক কিংবা কোনরকম সাহায্য করে তাহলে খুবই উপকৃত হয় শুভজিৎ এবং তার পরিবার। অপরদিকে শুভজিৎ এর বাবা ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাস জানান দীর্ঘ চার বছর ছেলেকে স্কুলে পাঠাতে পারেনি তার হাতের অস্ত্র পচারের কারণে, তবে পরীক্ষার আগে যখন ডান হাতটা বাদ যায় তখন অনেকটাই ভেঙে পড়ে তার পরিবার এবং শুভজিৎ, কিন্তু শুভজিতের ইচ্ছা ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে তাই তার বাবা যথাসাধ্য তার মনবল বাড়িয়ে তাকে পরীক্ষায় বসার জন্য সহযোগিতা করে। তারপর সাফল্য আসে শুভজিতের, তবে তিনি জানান রেজাল্ট যাই হোক না কেন শুভজিৎ পাস করেছে এত প্রতিকূলতার মধ্যেও এটাই তার কাছে বড় পাওনা। তবে রাজ্য সরকার যদি একটুখানি তাদের পরিবারের দিকে মুখ তুলে চায় তাহলে উচ্চশিক্ষার জন্য শুভজিতের অনেকটাই সুবিধে হবে। এখন দেখার রাজ্য সরকার আদেও এই দুস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়ায়? নাকি অন্ধকারেই ভবিষ্যত কাটাতে হয় শুভজিতের পরিবারের।