ad
ad

Breaking News

Bengali language

মাতৃভাষা উচ্চারিত হলে…

প্রথম সহস্রাব্দের শেষের দিকে অর্ধ-মাগধী থেকে অপভ্রংশের বিকাশ ঘটে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ভাষা একটি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে বিকশিত হয়।

When the mother tongue is spoken

Bangla Jago Desk,বিপ্লব চৌধুরী: প্রথম সহস্রাব্দের শেষের দিকে অর্ধ-মাগধী থেকে অপভ্রংশের বিকাশ ঘটে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা ভাষা একটি স্বতন্ত্র ভাষা হিসেবে বিকশিত হয়। বাংলা ভাষা একটি ইন্দো-আর্য ভাষা, যা দক্ষিণ এশিয়ার বাঙালি জাতির প্রধান কথ্য ও লেখ্য ভাষা। বাংলা ভাষা বিকাশের ইতিহাস ১৩০০ বছর পুরোনো। চর্যাপদ এই ভাষার আদি নিদর্শন।

[আরও পড়ুনঃ বাড়ছে তামাকজাত পণ্য ও ‘ক্ষতিকর’ হিসাবে চিহ্নিত পানীয়ের জিএসটি? কী প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ভারতের মোট জনসংখ্যার ৮.০৩ শতাংশ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে এবং ভারতে হিন্দির পরেই এর স্থান দ্বিতীয়। সারা বিশ্বে সব মিলিয়ে ২৮.৫ কোটির অধিক মানুষ দৈনন্দিন জীবনে বাংলা ভাষার ব্যবহার করেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিম, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ ভাষাবিদ, সাহিত্যিক ও কবিদের মহৎ লেখনির দ্বারা ক্রমশ বিকশিত ও পরিমার্জিত হয়েছে বাংলা ভাষা এবং সেই ধারা চলছে।

সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘গুপী গায়েন ও বাঘা বাইন’ চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত গানটি- ‘এই ভাষা এমন কথা বলে / বোঝে রে সকলে / উঁচা নীচা, ছোটো বড়ো সমান’–কথাগুলি বাংলাভাষা প্রেমীদের হৃদয়ের কথা বলে। ভারত সরকার এই বছর (২০২৪ সালের) ৩ অক্টোবর আমাদের মায়ের ভাষা বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। আপামর বাংলাভাষীর কাছে এটি অত্যন্ত আনন্দ ও শ্লাঘার বিষয়।

কবি শামসুর রাহমানের কবিতার দুটি লাইন উদ্ধৃত করে বলি, ‘বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে নিকোনো উঠোনে ঝরে/রৌদ্র, বারান্দায় লাগে জ্যোৎস্নার চন্দন’। কিন্তু এই দৃশ্যের মর্মার্থ বর্তমানকালে বিশেষ চোখে পড়ে না,  প্রায়  বিরল। বরং উল্টোটাই দেখা যায় বেশি। নিজের মাতৃভাষা বাংলাকে বিকৃতি করে বলার চেষ্টা ও অবজ্ঞায় তৃপ্তিসুখ, বাংলার সঙ্গে হিন্দি কিংবা ইংরেজি মিশিয়ে একটা বিকট মিশ্রিত ভাষায় কথা বলার প্রতি অনেক আগ্রহ ও আকুতি দেখা যায়।

[আরও পড়ুনঃ জামিনের আর্জিও খারিজ! আরও একমাস চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে কাটাতে হবে জেলেই 

এটা দুঃখজনক ও মর্মবিদারী। অবশ্যই ইংরেজি পড়বো, লিখব, বলবো, হিন্দিও বলবো দরকারে। তাই বলে কখনওই নিজের মাতৃভাষা বাংলাকে বিকৃতি করে নয়। অন্য সব ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান রেখে বলি বাংলার মতো মিষ্টি ভাষা আর নেই। একটাই বিনীত অনুরোধ আমরা সকলে যেন ভালবেসে বাংলা বলি, বাংলা বই-পত্রিকা পড়ি ও বাংলা শুনি। তবেই আমরা ভাষার প্রতি আমাদের উত্তরদায়িত্ব পালনে সক্ষম হব। ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ আমাদের সবার। না হলে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, মধুসূদন ও সুনীল, শক্তিদের প্রাণের ও লেখার ভাষা অবক্ষয় হতে হতে অস্তিত্বের শেষ দিনে পৌঁছে যাবে।