Bangla Jago Desk: একের পর এক দুর্ঘটনায় রেলযাত্রীদের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৪ থেকে -২৩ পর্যন্ত ৬৩৮টি রেল দুর্ঘটনা হয়। ২০২১-২২-এর পর দুর্ঘটনা আরও বেড়েছে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ৩৪টি রেল দুর্ঘটনা ঘটে, আর ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে হয় ৪৮টি ভয়াবহ দুর্ঘটনা। ২০২৩সালে উড়িষ্যার বাহানাগা স্টেশনের কাছে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কামরায় উঠে যায় একটি মালগাড়ির উপরে। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস।তারপর এবছর জুনমাসে উত্তরবঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা রেলের অব্যবস্থা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। তারপরেও আশঙ্কার যাত্রায় লাগাম পড়েনি।আবারও রাঙাপানিতে মালগাড়ির ২টো বগি বেলাইন।উদ্বেগজনকভাবে রেল দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে চললেও হেলদোল নেই কেন্দ্রের সরকারের।যাঁর হাতে লাইফলাইনের ভার সেই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো,বুধবার একবারও এই দুর্ঘটনা নিয়ে রা কাড়লেন না। বারবার রেল দুর্ঘটনার ঝোঁক কমাতে রেলপ্রশাসনকে কোনও ঝাঁকুনি দেওয়ার বদলে তিনি নীরব ভূমিকা পালন করেছেন।যখন ট্রেনকে বলা হচ্ছে চলন্ত কফিন,তখন সংসদে অশ্বিনী বৈষ্ণো সেই প্রসঙ্গে একটি কথাও বললেন না। পরিবর্তে তিনি বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন ফেরি করে নজর ঘোরাতে চান বলে বিরোধীরা মনে করছে।
বুধবার সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে অশ্বিনী বৈষ্ণো বলেন, বুলেট ট্রেনের ৩২০ কিলোমিটার যাত্রাপথে দ্রুত গতিতে কাজ এগোচ্ছে। কিন্তু কবে সেই ট্রেন ছুটবে, কবে ভারতবাসীর স্বপ্নপূরণ হবে ? এই প্রশ্নের উত্তরে বৈষ্ণোর আশ্বাসবাণী, ‘‘বুলেট ট্রেনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের কাজ সম্পন্ন করতে জটিল প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। প্রযুক্তির বিকাশও প্রয়োজন পড়ে।তাই যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে জাপানি রেলওয়ের সাহায্যে এই প্রকল্পের নকশা তৈরি করা হয়েছে বলে সংসদে তুলে ধরেছেন অশ্বিনী বৈষ্ণো।
অনেকেই বলছেন,যাঁরা হেলে ধরতে পারে না,তাঁরা কেউটে ধরার পরিকল্পনা করছে।বিরোধীদের কটাক্ষ, লোকাল ট্রেন,এক্সপ্রেস ট্রেনের মতো যাত্রীবাহী ট্রেনের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে যেখানে কেন্দ্র ঢেলে সাজাতে পারছে না,যেখানে অ্যান্টি কলিউশন ডিভাইস কাজে লাগানোর কোনও পদক্ষেপই দেখা যাচ্ছে না,সেখানে কেন এই বুলেট বন্দনা করা হচ্ছে ?উন্নত দেশের মতো গতিশীল ট্রেন ছুটতেই পারে এদেশে, কিন্তু তাবলে লোকাল বা এক্সপ্রেস ট্রেনগুলোকে উপেক্ষা করা রীতিমতো দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার নামান্তর বলা যায়। তাই বিরোধী শিবিরের সাংসদরা বলছেন, বুলেটের গুণ গাইবার বদলে গণপরিবহণের এই লাইফলাইনের প্রতি যাতে যাত্রীদের ভরসা বজায় থাকে সেদিকে নজর দিক মোদি সরকার।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রেলের সুরক্ষার উন্নতি না হওয়ায় কার্যতঃ তার মাসুল যাত্রীদের দিতে হচ্ছে বলেও যাত্রীদের একাংশ মনে করছেন।