চিত্র : সংগৃহীত
Bangla Jago Desk: আয়করে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করছাড়। কিংবা স্টান্ডার্ড ডিডাকশন ধরে ১২ লক্ষ পঁচাত্তর হাজার টাকা পর্যন্ত আয়কর মুক্ত রাখার বিষয়টি এবারের বাজেটে যে বড় চমক, তা বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। মধ্যবিত্ত চাকরিজীবীরা দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করছেন অর্থমন্ত্রীকে তাঁর এই ভূমিকার জন্যে। কিন্তু, বাজেট পেশের আটচল্লিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফাঁপানো বেলুনটি ফেটে গেল।
অর্থমন্ত্রকের ডিজিটাল সাইট স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল যে, কেবলমাত্র বেতনের ক্ষেত্রেই বারো লক্ষ টাকা বা স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন ধরে বারো লক্ষ পঁচাত্তর হাজার টাকা পর্যন্ত হারে ছাড় পাওয়া যাবে কিন্তু বেতনের সঙ্গে যদি যুক্ত হয় স্বল্পমেয়াদি মূলধনী আয় অথবা দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী আয় তা হলে ছাড় পাওয়া যাবে না।
অর্থাৎ যদি আপনার বেতনের সঙ্গে মেলে শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড কিংবা অন্য কোনও রিয়াল এস্টেট সম্পর্কিত আয় তা হলে আপনি ১২ লক্ষ টাকা আয়েও ছাড় পাবেন না। মিউচুয়াল ফান্ড, শেয়ার বা রিয়েল এস্টেট থেকে প্রাপ্ত অর্থের ওপর আপনাকে কর দিতে হবে যদি আপনার বার্ষিক বেতন আট লক্ষ টাকা হয়। এবং চার লক্ষ টাকা আয় যদি আপনি মিউচুয়াল ফান্ড বা শেয়ার থেকে আয় করেন তা হলে চার লক্ষ টাকার ওপর আপনাকে কর দিতে হবে। চার লক্ষ টাকা আয়ে করের পরিমাণ হবে শূন্য।
এরপর স্ল্যাব নির্দিষ্ট করা হয়েছে। চার লক্ষ টাকা আয় থেকে আট লক্ষ টাকা আয় পর্যন্ত একটি স্ল্যাব। এরপর ঊর্ধ্বমুখী আয়ের ক্ষেত্রে অন্য স্ল্যাব। কেবলমাত্র বেতন বাবদ বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকা পুরো করমুক্ত। অর্থাৎ মাসিক এক লক্ষ টাকা বেতন! নির্মলা সীতারামণের কাছে বিনীত প্রশ্ন, ক’জন ভারতীয় মাসে এক লক্ষ টাকা বেতন পান? কুড়িয়ে বাড়িয়ে শেয়ারে কিংবা মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা রাখেন মধ্যবিত্তরা। সেই অর্থেও কোপ পড়ছে। তা হলে ফিগারের জাগলারি দেখিয়ে ১২ লক্ষ টাকা আয়ে কর ছাড়ের কথা ঘোষণা করার এই বাহাদুরি কেন? লটারি অথবা অনলাইন গেমিং থেকে প্রাপ্ত অর্থও করযোগ্য হবে। হোক, তাতে ক্ষতি নেই– কিন্তু এই শব্দের সূচতুরতা কেন? ঘুরিয়ে মধ্যবিত্তের কপালে কোপ মারলেন আর হাততালি টুকুও নিলেন। এই স্ববিরোধিতা কি না করলেই হতো না?
চলতি সপ্তাহে নতুন আয়কর বিল আনছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই নতুন বিল প্রতিস্থাপন করবে ১৯৬১-এর আয়কর আইনকে। কী কী থাকতে পারে এই বিলে? ডিজিটাল পদ্ধফিতে আয়করের হিসাব নিকেশ করা ছাড়াও সুবিধার জন্যে আসেজমেন্ট ইয়ার এবং ফিনান্সিয়াল ইয়ার এক করে দেওয়া হতে পারে। যদি তাই হয় তা হলে সাধারণ করদাতারা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর একটি অবকাশ পাবেন। সেটাই যথেষ্ট পাওয়া হবে।