ad
ad

Breaking News

India

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১০৫ নম্বরে খিদের জ্বালায় জ্বলছে ভারত

মানুষের প্রথম চাহিদা ক্ষুধা নিবৃত্তি।

India is burning with hunger, ranking 105th on the Global Hunger Index

গ্রাফিক্স: নিজস্ব

Bangla Jago Desk: বিপ্লব চৌধুরী: মানুষের প্রথম চাহিদা ক্ষুধা নিবৃত্তি। ক্ষুধা নিবৃত্তি না হলে কবিতার ছন্দ, চাঁদের হাসি, ফুলের সুবাস সবই ফিকে ও পানসে হয়ে যায়, পৃথিবীটাকে মনে হয় নিরস গদ্যময়। তখন পূর্ণিমার চাঁদকে যথার্থই ঝলসানো রুটি বলে মনে হয় ক্ষুধার্ত মানুষের। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ২০২৪ সালের (১০ অক্টোবর) ১৯তম গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স বা বিশ্বক্ষুধা সূচক। যেখানে ১২৭টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১০৫ নম্বরে। তালিকায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের থেকে এগিয়ে থাকলেও শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মায়ানমার ও বাংলাদেশের থেকে পিছিয়ে রয়েছে ভারত। এবছর ভারতের প্রাপ্ত স্কোর ২৭.৩ শতাংশ।

[আরও পড়ুন: Children’s Health: শিশুর স্বাস্থ্য-রক্ষায় আরও দায়িত্বশীল হতে হবে আমাদের]

এই রিপোর্ট অনুযায়ী পৃথিবীতে ৪২টি দেশ যেখানে পুষ্টির হার সব থেকে কম, সেই তালিকায় ভারত রয়েছে সপ্তম স্থানে। ভারতের পরিস্থিতিকে গুরুতর বলে মনে করা হচ্ছে। পৃথিবীর কত শতাংশ মানুষের এখনও পর্যাপ্ত আহার জোটে না, কত মানুষ অনাহারে থাকে, খাদ্যের অধিকার থেকে কত মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন, শরীরে পুষ্টি যাচ্ছে কিনা, সেই সব বিষয় নিয়ে প্রতিবছর আইরিশ সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ডওয়াইড এবং জার্মান সংস্থা ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফ কর্তৃক বিশ্বক্ষুধা সূচক তৈরি করা হয়।

ক্ষুধা দূরীকরণে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, কোথায় কোথায় এখনও ত্রুটি থেকে যাচ্ছে তারও বিশদ বর্ণনা থাকে এই রিপোর্ট। ২০২৩ সালে ভারতের স্থান ছিল ১১১ নম্বরে, ৬ ধাপ এগোলেও পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগর। বিশেষজ্ঞদের মতে ক্ষুধা নিবারণের পথে ভারতকে এখনও হাঁটতে হবে অনেকটা পথ। শিশুদের অপুষ্টি দূর করতেও উদ্যোগী হতে হবে। কারণ উচ্চতা অনুযায়ী ভারতীয় শিশুদের ওজন কম ১৮.৭ শতাংশ, বয়স অনুপাতে ভারতীয় শিশুদের খর্বাকৃতি রয়ে যাওয়ার হার ৩৫.৫ শতাংশ, পাঁচ বছরের নীচে শিশুমৃত্যুর হার ২.৯ শতাংশ, অপুষ্টির হার প্রায় ১৩.৭ শতাংশ। এছাড়াও গ্রামীণ ভারতে প্রতি চার জনের মধ্যে তিনি জন মানুষের জোটে না পর্যাপ্ত ডায়েট, এবং গর্ভবতী মায়েদের মধ্যে দেখা যায় মারাত্মক অপুষ্টির হার।

ভারতে পাঁচ বছরের নীচে যে সকল শিশুদের মৃত্যু হয় তার ৬৮ শতাংশ মৃত্যুর একমাত্র কারণ মায়েদের অপুষ্টি। ১৫-১৯ বছর বয়সী ভারতীয় মেয়েদের মধ্যে ৪২ শতাংশের বিএমআই খুব কম, ৫৪ শতাংশের রক্তাল্পতার সমস্যা রয়েছে আর ২৭ শতাংশ মেয়ের ১৮ বছর বয়সের আগেই বিয়ে হয়ে যায়। ফলে মা ও শিশুর মধ্যে অপুষ্টি থেকেই যায়। যদিও ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর ক্ষুধা শূন্যে নিয়ে আসার সংকল্প গৃহীত হয়েছে, সেই লক্ষ্যে পৌঁছনো সম্ভব নয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এবং এই গতিতে চলতে থাকলে ক্ষুধার গ্রাফকে সম্পূর্ণ নীচে নামাতে লেগে যাবে ২১৬০ সাল।

[আরও পড়ুন: জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু মেয়র্স কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট]

কোভিড টিকা তৈরি করা, চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্যের পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির মানচিত্রে ভারতের স্থান পঞ্চম এবং আগামী পাঁচ বছরে তৃতীয় স্থানে পৌঁছবে এই জল্পনাও চলছে। কিন্তু ভারতের অনেকাংশ মানুষ আজও দু’বেলা খেতে পায় না, এই লজ্জা ঢাকবে কীভাবে আমাদের দেশ? বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের এই পরিসংখ্যান থেকে সহজেই বোঝা যায় যে রেশন ও অঙ্গনওয়াড়ি ব্যবস্থা দেশে চালু থাকলেও ক্ষুধার সমস্যা দূরীকরণে ত্রুটি কোথাও থেকেই যাচ্ছে। তাই অতি সত্ত্বর আঞ্চলিক স্তর থেকে সমগ্র দেশে খাদ্যের সুষ্ঠ বণ্টনের ব্যবস্থা করতে হবে দেশের সরকারকে। অপুষ্টি রোধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন এবং বিশেষ করে মা ও শিশুর পুষ্টি যেন অবহেলিত না হয়।