ad
ad

Breaking News

India Diplomacy

India Diplomacy: ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে ভারতের মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্ক কি সঙ্কটে?

এই দুই অভিন্ন দেশের চলমান সংঘাতে ভারতকে কষ্টকর 'ভারসাম্যপূর্ণ' অবস্থান বজায় রাখতে হয়েছে।

India Diplomacy: India’s Strategic Balance in Iran-Israel Conflict

চিত্র: সংগৃহীত

রাজাগোপাল ধর চক্রবর্ত্তী : ইজরায়েল-ইরান উভয় দেশই ভারতের দীর্ঘ দিনের বন্ধু (India Diplomacy)। ইজরায়েলের সঙ্গে ভারতের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সম্পর্ক রয়েছে। ভারত ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলা-সহ বেশ কয়েকবার ইজরায়েলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। ঐতিহ্যগত, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ভাবে ইরানি ভাবনা ভারতীয় হৃদয়ে। এই দুই অভিন্ন দেশের চলমান সংঘাতে ভারতকে কষ্টকর ‘ভারসাম্যপূর্ণ’ অবস্থান বজায় রাখতে হয়েছে।

ইরানের উপর ইজরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার ১৪ জুনে নেওয়া বিবৃতি থেকে ভারত নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। কূটনীতির মাধ্যমে পারস্পরিক উত্তেজনা মেটানোই ভারতের একমাত্র বক্তব্য। অপর দিকে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বিধ্বংসী মার্কিনি বোমা হামলার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ফোনালাপে ভারত তার ইরানের প্রতি সংহতি জানিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে। ভারত শুধু যুদ্ধের বিভীষিকা নিয়ে চিন্তিত নয়, তেলের জোগান নিয়ে আরও বেশি চিন্তিত। শঙ্কিত মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে চিনকে টেক্কা দেওয়ার নানান সংযোগ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে।

[আরও পড়ুন: Weather Forecast: রাজ্যে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি, বৃহস্পতিবার থেকে বাড়বে দাপট]

ইরানের তেল (India Diplomacy)

২০১৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার আগে পর্যন্ত ইরান ছিল ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী। ২০০৭-০৮ সালে ভারতের সঙ্গে তেল বাণিজ্য যখন তুঙ্গে, তখন ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানিতে ইরানের অংশ ছিল ১৩ শতাংশ। ২০১৮-১৯ সালে আমদানি হয়েছে ১২০৩ কোটি ডলার, যা ভারতের তেল আমদানির ৮.৭১ শতাংশ। মূলত বৈশ্বিক রাজনীতি ও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে গত দুই দশকে ইরানের সঙ্গে ভারতের তেল বাণিজ্যে নাটকীয় পরিবর্তন হয়েছে। ২০২০-২১ সালে মোট তেল আমদানির ০.৭৬ শতাংশ আসে ইরান থেকে।

২০২৪-২৫ সালে সেটা গিয়ে দাঁড়ায় ০.০৪ শতাংশে। ইরান থেকে তেল আমদানি শূন্যতে নিয়ে যাওয়াই ছিল মার্কিনি নির্দেশ, বাধ্য ছাত্রের মতো ভারত তা অনুসরণ করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পাল্টে দেয় ভারতের তেল কেনার রূপরেখা। এবার কিন্তু ভারত আমেরিকার বাধ্য ছাত্র থাকেনি। রাশিয়া এখন ভারতের বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী। ২০২৩ সালে ভারতের প্রধান তেল জোগান দেওয়া দেশগুলি হল– রাশিয়া (৪৮.৬ বিলিয়ন ডলার), ইরাক (২৮.৩ বিলিয়ন ডলার), সৌদি আরব (২৩.৬ বিলিয়ন ডলার), সংযুক্ত আরব আমিরাত (৮.৫৫ বিলিয়ন ডলার), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (৫.৫ বিলিয়ন ডলার) ও কুয়েত (৫.২ বিলিয়ন ডলার)। এছাড়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নাইজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, মেক্সিকো, কলম্বিয়া, তুরস্ক, ব্রাজিল, কাতার ও গ্রিস থেকে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের তেল কেনে ভারত। কানাডা, মালয়েশিয়াও তেল বেচে ভারতকে।

হরমুজ প্রণালী (India Diplomacy)

ভারতের অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ এবং তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের অর্ধেক হরমুজ প্রণালী দিয়ে আসে। হরমুজ প্রণালী পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগর এবং আরব সাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। প্রণালীর একদিকে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং অন্যদিকে ইরান। অতীতের অনেক বারের মতো ইরান এই যুদ্ধে এই গুরুত্বপূর্ণ শিপিং রুট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। যদিও সে কখনও সেই হুমকি কার্যকরী করার সাহস দেখায়নি। বর্তমান যুদ্ধবিরতি ক্ষণস্থায়ী, ইরান পরমাণু শক্তিধর দেশ হওয়ার ইচ্ছা ছাড়ছে না। তাতেই থাকছে আবার যুদ্ধের পরিস্থিতি।

বিশ্বকে চাপে রাখার তেমন সুযোগ না থাকায় হরমুজ প্রণালীকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহারের ভাবনা ইরানের পক্ষে ত্যাগ করা মুশকিল। তেল চলাচলে বাধা আনতে অনেক কিছুই সে করতে পারে। হরমুজ প্রণালীতে মাইন রেখে জাহাজ আটকানোর ভয় অস্বাভাবিক নয়। দেশটির সেনাবাহিনী বা আধাসামরিক বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) উপসাগরীয় অঞ্চলে জাহাজে হামলা চালাতে পারে। ১৯৮০-এর দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়, ইরাক ইরানি জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে এবং ইরান সৌদি ও কুয়েতের তেল ট্যাঙ্কার, এমনকি মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজসহ বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছিল। ২০০৭ সালের শেষের দিকে এই প্রণালীতেই  ইরান ও মার্কিন নৌবাহিনীর মধ্যে ধারাবাহিক সংঘর্ষ দেখা দেয়।

তবে বলতে দ্বিধা নেই, প্রণালী বন্ধ করা অর্থনৈতিক আত্মহত্যার শামিল। প্রণালী বন্ধ করলে ইরানের বন্ধু দেশগুলি, বিশেষ করে চিনের ক্ষতির সম্ভবনা যথেষ্ট। চিন প্রতিদিন ইরান থেকে গড়ে ১.৬ মিলিয়ন ব্যারেল কেনে, ইরানের তেল রফতনির প্রায় ৯০ শতাংশ যায় সেখানে। তেল চলাচল বিঘ্ন ঘটলে তেলের দাম বৃদ্ধিও সঙ্গে বিশ্ব জোড়া মুদ্রাস্ফীতি রোখা মুশকিল। অবশ্য, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহে বড় বিঘ্ন স্বল্পস্থায়ীই হয়। ২০০৩ সালের মার্চ থেকে মে মাসে দ্বিতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধ, অর্থাৎ আমেরিকা ও তার মিত্র বাহিনীর ইরাক আক্রমণ শুরুর আগে দাম হু হু করে বাড়লেও, যুদ্ধ শুরুতেই স্বাভাবিক হয়। একইভাবে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১৩০ ডলারে উঠেছিল, আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে দাম আবার প্রাক-আক্রমণ স্তরে ফেরত আসে।

জাতিসংঘ সমুদ্র আইন কনভেনশন (ইউএনসিএলওএস)-এর ৩৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, হরমুজের মতো আন্তর্জাতিক নৌচলাচলের জন্য ব্যবহৃত প্রণালীতে সীমান্তবর্তী কোনও রাষ্ট্রই কোনও সময়েই ‘ট্রানজিট প্যাসেজ’-এর অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার যে কোনও প্রয়াস আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন লঙ্ঘনের শামিল।

বাণিজ্য (India Diplomacy)

ইরান ও ইসরায়েল উভয়ের সঙ্গেই ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত ইরানে ১২৪ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে এবং ৪৪.১৯ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। ইরানে ভারতের প্রধান রফতানি পণ্যগুলির মধ্যে রয়েছে চাল (বিশেষত বাসমতি), চা এবং চিনির মতো কৃষিপণ্য। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রফতনি হল ফার্মাসিউটিক্যালস, যন্ত্রপাতি এবং বিভিন্ন শিল্পজাত পণ্য যেমন ধাতু, রাসায়নিক এবং টেক্সটাইল। ভারত প্রাথমিকভাবে ইরান থেকে বর্তমানে জৈব ও অজৈব রাসায়নিক, সার, মূল্যবান/আধা-মূল্যবান পাথর, জাফরান এবং শুকনো ফল যেমন বাদাম, পেস্তা এবং খেজুর আমদানি করে। প্রসঙ্গত, ইসরায়েলে ভারতের রফতানি হয়েছে ২১৫ কোটি ডলার এবং আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬১ কোটি ডলার।

[আরও পড়ুন: Financial Horoscope: ২ জুলাই ২০২৫-এর আর্থিক রাশিফল]

চাবাহার বন্দর (India Diplomacy)

দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের সিস্তান ও বালুচিস্তান প্রদেশ অবস্থিত চাবাহার ওমান উপসাগরে একটি গুরুত্বপূর্ণ গভীর জলের বন্দর। এখান থেকেই মধ্য এশিয়া ও আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের একটি বিকল্প বাণিজ্য পথ পরিকল্পনা প্রস্তুত। চাবাহার ফার্সি শব্দ, চাহার অর্থ চার, এবং বাহার অর্থ বসন্ত। বছরের চারটি ঋতুতেই বসন্ত থাকে বলেই এরূপ নামকরণ। হরমুজ প্রণালীর কাছে মাকরান উপকূলে অবস্থিত চাবাহার থেকে সরাসরি ভারত মহাসাগরে আসা যায়। এটি ভারতের নিকটতম ইরানি বন্দর। কান্ডলা (পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্যে) এবং চাবাহার বন্দরের মধ্যে দূরত্ব দিল্লি ও মুম্বাইয়ের দূরত্বের চেয়ে কম।

ইরানের পোর্টস অ্যান্ড মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (পিএমও) সঙ্গে স্বাক্ষরিত দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির অংশ হিসাবে ইন্ডিয়া পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড (আইপিজিএল) চাবাহার বন্দরে শহিদ বেহেস্তি টার্মিনাল পরিচালনা করে। বন্দরের উন্নয়নে আর্থিক ও সাজসরঞ্জাম সহায়তাও দিচ্ছে ভারত।  বন্দরের উন্নয়নের জন্য ভারত ২৫ কোটি ডলারের লাইন অফ ক্রেডিট এবং প্রায় আড়াই কোটি ডলারের সরঞ্জাম সহ আর্থিক সহায়তা দিয়েছে (India Diplomacy)।

ভারত চাবাহারকে ইরানি রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য কাজ করছে। ফলে ইরানের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানে ভারতীয় পণ্য পৌঁছনোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ৬২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ চাবাহার-জাহেদান নতুন রেল লাইন ও সড়ক সংযোগের মাধ্যমে ইরান এবং আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ায় দ্রুত পণ্য পরিবহণই চাবাহার রেল প্রকল্পের লক্ষ্য। সঠিক রূপায়ণ হলে চাবাহর বন্দরভিত্তিক সংযোগ প্রকল্প চিন পাকিস্তান একনমিক করিডরের সত্যিকারের বিকল্প হবে। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দর চাবাহর থেকে মাত্র ১৭০ কিলোমিটার দূরে।

চাবাহার প্রকল্পটি আবার আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডর (আইএনএসটিসি) এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চাবাহারের শহিদ বেহেস্তি বন্দরটি আইএনএসটিসি-র পূর্ব রুটের একটি মূল কেন্দ্র। আইএনএসটিসি চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) করিডরের বিকল্পে ইরান ও আজারবাইজান হয়ে দিল্লির সঙ্গে মস্কোর সংযোগ করতে চায়। তেহরান ও মস্কো প্রায়ই আইএনএসটিসি-র গুরুত্ব তুলে ধরেছে।

গত মে মাসে ভারত ও ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে বৈঠকে উভয় পক্ষই আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার বৃহত্তর স্বার্থে এই প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের কূটনৈতিক সফলতায় চাবাহর বন্দরে কোনও আক্রমণ হয়নি, ইসরায়েলের ভারতীয় কোম্পানি পরিচালিত হাইফা বন্দরেও কোনও মিসাইল আঘাত আসেনি। আইএনএসটিসি প্রকল্পের কোনও ক্ষতি হয়েছে কিনা খবর নেই। তবে প্রকল্প দ্রুত সম্পন্ন হলে যাবতীয় পরিবহণ চলাচলের সুবিধা হবে কোনও সন্দেহ নেই। দিল্লির এই অঞ্চলে কতটা কৌশলগত প্রভাব রাখতে পারবে, তার ওপরেই এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ (India Diplomacy)।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে উঠে আসে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ করিডর (আইএমইইসি) নামক চিনের বিআরআই ধাঁচে গড়ে ওঠা আর এক সংযোগ প্রকল্প। ২০২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সরকারগুলির মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, জর্ডান, ইজরায়েল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাধ্যমে ভারত, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যকে একীভূত করাই আইএমইইসি-এর লক্ষ্য।

হুথি অবরোধকে পাশ কাটিয়ে, সুয়েজ খাল এড়িয়ে ভারত-ইউরোপ-মার্কিন সরবরাহ শৃঙ্খল বজায় রাখতেই এই ভাবনা। আইএমইইসি-র থাকছে দুটি পৃথক করিডর। পূর্ব করিডর ভারতকে উপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে, উত্তর করিডর উপসাগরকে ইউরোপের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। আইএমইসির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের লক্ষ্য ভারতকে কাছাকাছি টানা এবং চিনের প্রভাব মোকাবিলা করা। এই করিডর বেজিংয়ের আগ্রাসী মনোভাব থেকে বাঁচতে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ভারতের কৌশলকে আরও জোরদার করবে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরব পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে একটি অর্থনৈতিক সেতু হিসাবেই আইএমইসিকে স্বাগত করেছে (India Diplomacy)।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন চুক্তিটিকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন যে আইএমইসি ‘আগামী বছরগুলিতে বিশ্ববাণিজ্যের ভিত্তি’ হবে। মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন এটিকে ‘সত্যই বড় চুক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন। সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সালমান বলেছেন, ‘এটি আমাদের জন্য, ইউরোপের জন্য এবং ভারতের জন্য একটি বড় বিষয়।’

করিডরের বিভিন্ন শক্তির মধ্যে সংযোগ জোরদার করার সম্ভাবনা এই খণ্ডিত এবং অশান্ত বিশ্বে অমূল্য প্রমাণিত হতে পারে। এতগুলি দেশের মধ্যে রাস্তা, রেল, বন্দর, কেবল এবং পাইপলাইন সংযোগ সহজ নয়, তবে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক বাধা অতিক্রম করে পরিকল্পনার চারপাশে দ্রুত একত্রিত হলে করিডরটির স্বার্থক বাস্তবায়ন সম্ভব। ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের পর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে পারস্পরিক বিশ্বাস। কত দ্রুততার আমেরিকা এই অঞ্চলে তার আস্থা ফেরাতে পারে, সেটা এখন দেখার। ইরান কি আগের মতো ভারতকে মান্যতা দেবে, সেটাও নজরে থাকবে (India Diplomacy)।