Bangla Jago Desk: বঙ্গ রাজনীতিতে বরাবরই পাহাড়ের কথা উঠে আসে। ১৯৮০-র শেষের দিকে সুভাষ ঘিসিংয়ের সময় থেকেই দার্জিলিংয়ের উত্তাল আন্দোলনের বিষয় চর্চায় ছিল। বিমল গুরুংরা গোর্খাল্যান্ডের কথা বললেও আর সেই আন্দোলন জমাট বাঁধাতে পারছেন না। জনমুক্তি মোর্চার ঘর ভেঙেছে। গুরুংয়ের সেনাপতি অনিত থাপা বিজেপি হঠাওয়ের ডাক দিয়েছেন। যাঁরা মোর্চার পুরনো কর্মী তাঁরা বিভ্রান্ত।বহিরাগত রাজু বিস্তাকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না পাহাড়ের ভূমিপুত্র বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। বিদ্রোহের ধ্বজা তুলে পাহাড় কাঁপিয়েছেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ বিষ্ণুপ্রসাদ। উনিশে রাজু বিস্তা ৪ লাখ ১৩হাজারের কাছে ভোটে জয়ী হন।এবার অঙ্কটা বদলে গেছে।অনিত থাপার হাতে রয়েছে জিটিএ। অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা তৃণমূলের প্রার্থী গোপাল লামাকে সমর্থন দিয়েছে ।
বিজেপির বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী গোপাল লামাকে এবার তলতলে সমর্থন দিয়েছেন। দার্জিলিং লোকভায় রয়েছে,৭বিধানসভা। রয়েছে,দার্জিলিং, ফাঁসিদেওয়া-খড়িবাড়ি,মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি, কার্শিয়াং,কালিম্পং,শিলিগুড়ি,চোপড়া। ২১-এর বিধানসভায় চোপড়া বাদে বাকি সব আসনেই বিজেপি জেতে। কিন্তু ২বছরে অঙ্ক অনেকটাই বদলে গেছে। ২০১৯ সালের রাজনীতি ও পরিস্থিতি এখনকার থেকে একদম ভিন্ন । ২০১৯এ উগ্র জাতিয়তাবাদের আবেগের সঙ্গে গোর্খা সেন্টিমেন্ট বিজেপির পায়ের তলার জমি শক্ত করে। এবার সেই উগ্র জাতিয়তাবাদ আর গোর্খাদের বিচ্ছিন্নতাবাদের আওয়াজ স্তিমিত। গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে বিজেপির ইস্তাহারে রা কাড়া হয়নি। এবার তৃণমূল-বিজিপিএম জোট প্রার্থী দার্জিলিং সংসদীয় আসনের তরাই অঞ্চলে অনেক বেশি শক্তিশালী। এবার পাহাড়ে বেকারত্ব –মূল্যবৃদ্ধির মতো ফ্যাক্টর নির্বাচনে মূল ফোকাস হিসেবে রেখেছিল বিজেপি বিরোধীরা।
কোথায় কোথায় বিজেপির হোঁচট খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ? দার্জিলিং, কার্শিয়াং,কালিম্পং এ রাজু বিস্তার ভোটে থাবা গাড়তে পারে বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা ও বিরোধী গোষ্ঠী ভোটের পর হাওয়া দেখে বিশেষজ্ঞরা এমনটাই মনে করছেন। হিসেব বলছে, সমতলে রয়েছে মোট ভোটারের ৬০শতাংশ আর পাহাড়ে রয়েছে বাকি ৪০শতাংশ। পাহাড়ের ভোটের গতিপ্রকৃতি বলছে, সেখানকার মানুষ এককাট্টাভাবে একজন প্রার্থীকেই বেছে নেন। সেক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস বলছে,রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে মানুষের জোট কাজ করলে পাহাড়ে গেরুয়া শিবিরে ধস নামবে। পাহাড়ে আবার একতরফা ভোট পড়লেও সমতলে ভোটের সমীকরণ ভিন্ন।শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ এলাকায় এনআরসি,সিএএ বিরোধী হাওয়া বইছে।
রাজবংশী থেকে অনগ্রসর মানুষেরা নাগরিকত্ব নিয়ে বিজেপির খেলায় ক্ষুব্ধ বলে খবর মিলছে। এরসঙ্গে কামতাপুর প্রগোসিভ পার্টি সরাসরি তৃণমূলকে সমর্থন করায় বিজেপির চাপ বেড়েছে। ভোট রাজনীতিক বিশ্লেষকদের পর্যবেক্ষণ,চব্বিশে রাজু বিস্ত পাহাড়ের অন্ততঃ ১৫শতাংশ ভোট হারাতে পারেন। আর সমতলেও প্রায় ২০শতাংশের কাছে ভোট ঘাসফুলের বাক্সে চলে যেতে পারে। এই সমীকরণ কাজ করলে বিজেপি প্রার্থীর জেতা কঠিন হতে পারে। আর ফ্লোটিং ভোটাররা সমর্থন দিলে বিজেপি বড়জোর কোনমতে এই দিল্লির পরীক্ষায় পাস করতে পারে।