চিত্র: সংগৃহীত
Bangla Jago Desk: ড. বিবেকানন্দ চক্রবর্তী (রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক): জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মস্পর্শী ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সহ পশ্চিমবঙ্গ তথা সমস্ত বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগণের একটি উল্লেখযোগ্য ও স্মৃতিবিজড়িত দিন। ১৯৫২ সালের এই দিনটিতে বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি রেখেছিল আন্দোলনরত ছাত্রদল আর যার ফলস্বরূপ তাদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণ হয়। রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত হয় সেই ছাত্রদের মধ্যে অনেকে। প্রাণ যায় বেশ কয়েকজন তরুণের।
‘শহীদ দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত দিনটি, ২০১০ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রূপে পালন করা হয়ে আসছে।
পাকিস্তানের উদ্ভব হয়েছিল দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে। ১৯৪৭-এর আগস্টে ধর্মের প্রশ্নে ভারতবর্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের শাসক ছিল মুসলিম লীগ সরকার। খণ্ডিত বাংলা, অর্থাৎ পূর্ববঙ্গ, আজকের স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ ছিল পাকিস্তানের সবথেকে বড় প্রদেশ, পূর্ব পাকিস্তান। শতকরা ৯৫ ভাগ অধিবাসীই বাঙালি। বাংলা ছাড়া পাকিস্তান ডোমিনিয়নের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের মাতৃভাষা ছিল পশতু, বেলুচী, পাঞ্জাবী ও সিন্ধী। অর্থাৎ সবথেকে বড় প্রদেশের ৯৫ শতাংশ মানুষের মাতৃভাষা হওয়ার সুবাদে বাংলা ছিল এককভাবে পাকিস্তান রাষ্ট্রের গরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের ভাষা।
বিভিন্ন ভাষাভাষি মানুষের রাষ্ট্র হওয়ার ফলে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা কি হবে এটা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু, পাকিস্তানের মৌলবাদী শাসক দল মুসলিম লীগ, রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নটিকে এক করে দেখতে চাইলেন ধর্মের সঙ্গে। স্বাধীনতা লাভের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সেদিনের পাকিস্তানি রাষ্ট্রনায়ক সদম্ভে ঘোষণা করেছিলেন যে, মুসলমানের পবিত্র ভাষা উর্দুই হবে মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। শাসক দলের এই যুক্তি মানতে রাজি ছিলেন না পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা। তাই রাষ্ট্রভাষার বিষয়টি নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই। একদিকে উর্দুর স্বপক্ষে সরকারী প্রচার অন্য দিকে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মাতৃভাষার স্বাধিকার রক্ষার আকাঙ্ক্ষা। শুরু হ’ল সরকারী দমন পীড়ন। একের পর এক নিষিদ্ধ ঘোষণা হতে লাগল বাংলা সাহিত্য, পত্র-পত্রিকা ইত্যাদি। নিষিদ্ধ হ’ল রবীন্দ্রচর্চা। বাংলা ভাষাকে বলা হ’ল হিন্দুর ভাষা। চেষ্টা হ’ল আরবি হরফে বাংলা বর্ণমালা প্রবর্তনের। মুসলিম লীগ সরকার প্রকাশ্যে ঘোষণা করলেন যে, রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে উর্দুর বিরোধিতা করার অর্থ পবিত্র ইসলামের বিরোধিতা করা।
১৯৪৭ সালের ১৪ অগাস্ট জন্ম হল নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের। তার একমাস পর ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭-এ প্রকাশিত হ’ল একটি পুস্তিকা, শিরোনাম ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু?’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ও অধ্যাপকের উদ্যোগে প্রকাশিত এই পত্রিকায় ছিল একটি প্রস্তাব:
১. বাংলা ভাষাই হবে-
(ক) পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার বাহন
(খ) পূর্ব পাকিস্তানের আদালতের ভাষা
(গ) পূর্ব পাকিস্তানের অফিসাদির ভাষা।
২. পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের ভাষা হবে দুটি উর্দু ও বাংলা।
(ক) বাংলাই হবে পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষা বিভাগের প্রথম ভাষা
(খ) উর্দু হবে দ্বিতীয় ভাষা বা আন্তঃপ্রাদেশিক ভাষা
(গ) ইংরেজি হবে পূর্ব পাকিস্তানের তৃতীয় ভাষা বা আন্তর্জাতিক ভাষা।
৩. শাসনকার্য ও বিজ্ঞান শিক্ষার সুবিধার জন্য আপাতত কয়েক বৎসরের জন্য ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই পূর্ব পাকিস্তানের শাসনকার্য চলবে। ইতিমধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলা ভাষার সংস্কারসাধন করতে হবে।
এই প্রস্তাবনার মধ্যেই সূচিত হয়েছিল বাহান্ন’র মহান ভাষা আন্দোলনের পরিকাঠামো ও নীতি নির্ধারণ।
রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের মধ্যে ক্রমশ সোচ্চার হতে শুরু করল বাংলা ভাষার দাবি। এটা ঠিক যে রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে বাংলার দাবির স্বপক্ষে জনমত গঠন ও আন্দোলনের প্রস্তুতির প্রথম উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, অধ্যাপক ও বুদ্ধিজীবীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ক্রমশ তা সর্বশ্রেণীর মানুষ, এমনকি সাধারণ শ্রমিক কৃষকের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছিল।
১৯৪৭ সালের ৬ ডিসেম্বর বেলা ২টোর সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রভাষার দাবিতে একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ, জগন্নাথ ইন্টারমিডিয়েট কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা এই বিরাট জনসভায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এটাই ছিল প্রথম সাধারণ ছাত্রসভা। এই জনসভায় যে প্রস্তাবগুলি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছিল:
১. বাংলাকে পাকিস্তান ডোমিনিয়নের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা এবং পূর্ব পাকিস্তানের সরকারী ভাষা ও শিক্ষার মাধ্যম করা হোক।
২. রাষ্ট্রভাষা এবং লিংগুয়া ফ্রাংকা নিয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে তার মূল উদ্দেশ্য আসল সমস্যাকে ধামাচাপা দেওয়া এবং বাংলা ভাষা ও পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা।
৩. পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী ফজলুল রহমান এবং প্রাদেশিক সরকারের মন্ত্রী হাবিবুল্লাহ বাহার উর্দু ভাষার দাবিকে সমর্থন করার জন্য সভা তাঁদের আচরণের তীব্র নিন্দা করছে।
রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নকে কেন্দ্র করে পূর্ব পাকিস্তানের পরিবেশ ক্রমশ উত্তপ্ত হতে শুরু করল।
পাকিস্তান সরকার ধর্মকে সামনে রেখে মৌলবাদী শক্তিকে সঙ্গী করে চালাতে লাগল একের পর এক অপপ্রচার, আরম্ভ করল নতুন ধরনের দমন পীড়ন। প্রচার শুরু হ’ল এই বলে যে, মুসলমানের ভাষা উর্দু, হিন্দুর ভাষা বাংলা। বাংলা ভাষায় ইসলাম সম্পর্কে বিশেষ কিছু নেই। রবীন্দ্রনাথকে বলা হ’ল হিন্দু কবি। পাঠ্যপুস্তক, বেতার, সরকারী অনুষ্ঠান থেকে রবীন্দ্রনাথকে ছেঁটে বাদ দেওয়া হ’ল। সরকারি অপপ্রচার, জোর করে উর্দু চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা, মৌলবাদী শক্তির উত্থানের বিরুদ্ধে ক্রমশ দানা বাঁধতে আরম্ভ করল মানুষের ক্ষোভ। একদিকে মানুষের বিক্ষোভ অপরদিকে সরকারের দমন, পীড়ন, অপপ্রচার, এভাবেই এল ১৯৫২।
১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি, পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন ঢাকার পলটন ময়দানের জনসভায় ঘোষণা করলেন-‘একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।’ পরেরদিন অর্থাৎ ২৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো কলাভবনের আমতলায় এক প্রতিবাদ সভায় ছাত্ররা তীব্র ভাষায় এই সদম্ভ উক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ আন্দোলন করে। ৩০ জানুয়ারি, এই কারণে ছাত্র ধর্মঘট ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ প্রদেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হ’ল। ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি আগে থেকেই পূর্ববঙ্গ ব্যবস্থাপক পরিষদের বাজেট অধিবেশনের জন্য নির্ধারিত হয়েছিল। বাংলাকে উপেক্ষা করে কেবলমাত্র উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার প্রতিবাদে সাধারণ ধর্মঘটের জন্য ঐ দিনটিকেই বেছে নেওয়া হ’ল। সাধারণ ধর্মঘটের লক্ষ্যে প্রচার অভিযানও শুরু হয়ে গেল। ২০ ফেব্রুয়ারি দুপুর থেকে সরকার ১৪৪ ধারা জারি করল। স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা আরও বাড়ল। ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২। বেলা ১২টার মধ্যেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রছাত্রীরা বিচ্ছিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জমায়েত হতে আরম্ভ করল। বেলা ২টোর সময় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে অগণিত ছাত্রছাত্রীর দীর্ঘ মিছিল থেকে আওয়াজ উঠল:
‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই-বাংলা চাই বাংলা চাই’
‘মুখের ভাষা কেড়ে নেওয়া চলবে না চলবে না’
‘ভাষার ওপর হামলা করা চলবে না চলবে না।’
সরকার ও তার মৌলবাদী দোসর-রা চুপ করে বসে থাকল না। ছাত্রদের সুশৃঙ্খল নিরস্ত্র মিছিলের ওপর সরকারি পুলিশ বেপরোয়া লাঠি চালাল। ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল মিছিল। বেলা তখন প্রায় সোয়া তিনটে কোনোরকম পূর্ব সংকেত ছাড়াই ছত্রভঙ্গ মিছিলের নিরস্ত্র ছাত্রদের লক্ষ্য করে গর্জে উঠল স্বৈরাচারি শাসকের রাইফেল। ছুটে আসা বুলেটের আঘাতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হলেন আব্দুল জব্বার ও রফিকউদ্দিন আহম্মদ। গুরুতর আহত অবস্থায় ১৭ জন ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হ’ল। তাঁদের মধ্যে আব্দুল বরকত শহীদ হলেন রাত ৮টায়। পৃথিবীর সংগ্রামের ইতিহাসে যুক্ত হ’ল একটি নতুন অধ্যায়। জাতিগত অত্যাচারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অধিকার অর্জনের জন্য যুগ যুগ ধরে মানুষের যে সংগ্রাম সেই সংগ্রামের ইতিহাসে যুগান্তকারী দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রইল ২১শে ফেব্রুয়ারি।
সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে বাংলার দাবির সমর্থনে ১৯৪৮ সালে ভাষাবিদ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ লিখেছিলেন, ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি, এটি কোনো আদর্শের কথা নয়, এটি একটি বাস্তব কথা। মা প্রকৃতি নিজের হাতে আমাদের চেহারায় ও ভাষায় বাঙালিত্বের এমন ছাপ মেরে দিয়েছেন যে তা মালা-তিলক-টিকিতে কিংবা টুপি-লুঙ্গি-দাড়িতে ঢাকবার জো-টি নেই।’ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ যেদিন এটি লিখেছিলেন সেদিনের প্রশ্ন ছিল ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিকে কী ধর্মীয়, ভৌগোলিক বা রাজনৈতিক সীমানা টেনে আলাদা করা যায়? আজকের পরিস্থিতিতে প্রশ্নটা বদলে গেছে। আজ প্রশ্নটা হয়ে গেছে বিশ্বায়নের খোলা হাওয়ায় বিশ্বনাগরিক হয়ে সে কী পারে তার ভাষা, সাহিত্য, নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে?
একুশ এখন আর শুধু বাংলা বা বাঙালির নয়, একুশ এখন সর্বজনীন। ২০০০ সাল থেকে ইউনেস্কো দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা মহঃ রফিকুল ইসলাম প্যারিসে ইউনেস্কোর সদর দপ্তরে চিঠি লিখে দাবি করেছিলেন দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালন করার। তাঁর যুক্তি ছিল, দুনিয়ার বহু মাতৃভাষাই হারিয়ে যাচ্ছে। ঔপনিবেশিকতার শিকার হচ্ছে বহু মাতৃভাষা। একুশের চেতনায় সবার মাতৃভাষাকে রক্ষা হোক। দিনটিকে পালন করা হোক মাতৃভাষা রক্ষার দিবস হিসাবে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো সিদ্ধান্ত নেয় দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালনের। তারপর থেকে প্রতি বছর গোটা দুনিয়াতেই দিনটি মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালিত হচ্ছে।
একুশ আজ আর শুধু বাঙালি বা বাংলার চেতনার কেন্দ্রবিন্দু নয়, একুশ এখন প্রকৃত অর্থেই সর্বজনীন। গোটা দুনিয়ার সমস্ত মানুষের মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার লড়াইয়ের কথা মনে করিয়ে দেয় ৫২-র ভাষা আন্দোলনে সালাম-জব্বরদের আত্মত্যাগের কথা। পদ্মা-মেঘনা পাড়ের ভাষা আন্দোলন গঙ্গা-ভাগীরথীর তীরেও আজও সমানভাবে সমাদৃত। কলকাতাতেও তাই একুশকে কেন্দ্র করে মাতৃভাষা চর্চার হাজারও আয়োজন চোখে পড়ে। একুশের চেতনায় সমৃদ্ধ গোটা দুনিয়াই নিজেদের মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় ব্রতী। একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার মাধ্যমে দুনিয়ার সমস্ত ভাষাভাষী মানুষকেই নিজেদের মাতৃভাষার বিকাশ ও অধিকার রক্ষার লড়াইকে সুদৃঢ় করছে।
মাতৃভাষা দিবসে আমাদের সপথ হোক মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় আমরা আরো যত্নশীল হব। আমাদের আরো অধিক ভাষা শিক্ষার আগ্রহ থাকতে পারে কিন্তু মাতৃভাষা চর্চায় আমাদের কোন অনাগ্রহ থাকবে না। কারণ, মাতৃভাষার সুরক্ষা, বিকাশ ও অনুশীলন ছাড়া কোন জাতি অগ্রসর হতে পারে না।