ad
ad

Breaking News

Dhanteras

ধনতেরাস কী ও কেন পালন করা হয়? পুরাণের কোন কাহিনি জড়িয়ে আছে ধনতেরাসের সঙ্গে

আলোর রোশনাই, আতস বাজি আর প্রদীপের আলো-সব মিলিয়ে এক অপূর্ব সুন্দর আলোর উত্সব হল দীপাবলি। দীপাবলি হল হিন্দুদের ৫ দিন ব্যাপী একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উত্সব।

There is a mythological story associated with Dhanteras

Bangla Jago Desk, মৌ বসু: আলোর রোশনাই, আতস বাজি আর প্রদীপের আলো-সব মিলিয়ে এক অপূর্ব সুন্দর আলোর উত্সব হল দীপাবলি। দীপাবলি হল হিন্দুদের ৫ দিন ব্যাপী একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উত্সব। কার্তিক মাসের অমাবস্যায় দ্বীপান্বিতা কালীপুজো অনুষ্ঠিত হয়। ঠিক তার, ২ দিন আগে কার্তিক মাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশীর দিন ধনতেরাসের মাধ্যমে দীপাবলির সূচনা হয়। পঞ্জিকা মতে দশেরার ১৮ দিন পর দীপাবলি শুরু হয়। দীপাবলি উৎসবের প্রথম দিনে গোটা দেশজুড়ে ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয় ধনতেরাস। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশ অর্থাৎ ১৩তম দিনে উৎসবটি পালন করা হয় বলে এর আরেক নাম ধনত্রয়োদশী। ধনতেরাস অর্থাত্ ধনবর্ষা উত্সব।

[আরও পড়ুনঃ কাগিসো রাবাডার দখলে নতুন নজির, টেস্টে ৩০০ উইকেট নিলেন তিনি

দীপাবলির আলোয় নিজের জীবন আলোকিত করার পাশাপাশি জীবনে যাতে ধন বা অর্থের কোনো অভাব না হয় তার জন্য ধনতেরাস উত্সব পালন করা হয়। এই বিশেষ দিনটিতে মা লক্ষ্মী ও কুবেরদেবকে পুজো করা হয়। ভগবত পুরাণ অনুসারে সমুদ্র মন্থনের সময় সমুদ্রের নোনা জল বদলে যায় দুধে। তার থেকে তৈরি হয় ঘিয়ের সাগর। সেখান থেকে একে একে উঠে আসেন মা লক্ষ্মী। ঘিয়ের সাগর থেকে এক হাতে অমৃতভরা কমণ্ডলু আরেক হাতে আয়ুর্বেদসংহিতা নিয়ে উঠে এলেন ধন্বন্তরি। ধন্বন্তরিকে দেবতা বিষ্ণুর অবতার বলে মানা হয়। দেবতাদের মধ্যে চিকিৎসক বলে মানা হয় ধন্বন্তরীকে। তাঁর হাতে থাকে অমৃতকলস। সেই দিনটা ছিল কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথি।

সে জন্যই ধনতেরাসের অপর নাম ধন্বন্তরি ত্রয়োদশী। হিন্দুধর্মে ধনতেরাস তিথিকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মানা হয়। পুরাণে হিমা নামে এক রাজার কথা উল্লেখ আছে। ন্যায়বিচার আর প্রজাদের ভালোবাসার জন্য রাজা হিমা প্রজামহলে দারুণ জনপ্রিয় ছিলেন। রাজজ্যোতিষী পূর্বাভাসে জানিয়েছিলেন ১৬ বছর বয়সে সাপের কামড়ে মৃত্যু হবে রাজপুত্রের। এই খবর শুনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন রাজা। ছেলের প্রাণ বাঁচাতে জ্যোতিষীর পরামর্শ মতো সৌভাগ্যশালী একটি মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেন। নবদম্পতি সুখে-শান্তিতে জীবন কাটাতে লাগল। কিন্তু ছেলে ১৬ বছরে পা দেওয়ার আগে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন রাজা হিমা। জ্যোতিষী বলেছিলেন ১৬তম জন্মদিনের দিনই সাপের কামড়ে মৃত্যু হবে রাজপুত্রের।

[আরও পড়ুনঃ নিয়ম নিষ্ঠা মেনে উৎসব পালন, করওয়া চৌথে মেতে কালিয়াগঞ্জবাসী

স্বামীর ১৬তম জন্মদিনের দিন চালাকির সঙ্গে একটি পরিকল্পনা করে রাজা হিমার পুত্রবধূ। স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে দরজার সামনে নিজের সব গয়নাগাটি স্তূপাকৃত করে রাখে সে। স্বামীকেও সারা রাত ঘুমোতে দেয়নি সে। জাগিয়ে রাখে। নিজেও সারা রাত বাড়ির মূল প্রবেশপথের বাইরে বসে পাহারা দেয়। নির্ধারিত সময় রাতে সাপের ছদ্মবেশে রাজপুত্রের প্রাণ কাড়তে হানা দেন যমরাজ। কিন্তু গয়নারস্তূপের জেরে ভেতরে ঢুকতে পারেননি যমরাজ। গয়নার জৌলুস আর জাঁকজমকে চোখ ধাঁধিয়ে যায় তাঁর। বাইরেই অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি। রাজা হিমার পুত্রবধূর গান শুনে মুগ্ধ হয়ে যান সর্পবেশী যমরাজ। এভাবেই সময় পেরিয়ে যায় রাজপুত্রের প্রাণ না নিয়েই খালি হাতে ফিরতে বাধ্য হন যমরাজ। স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হন রাজবধূ। তাই ধনতেরাসের দিন সন্ধ্যায় বাড়ির বাইরে যমদীপ জ্বালানোর প্রচলন আছে।