নিজস্ব ছবি
Bangla Jago Desk: দেবব্রত বাগ, ঝাড়গ্রাম: সুবর্ণরেখা নদী গর্ভ থেকে পাওয়া পিতলের প্রতিমা ও মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুরু হয় শ্মশান কালীর পুজো। ৪৩ বছর ধরে এই ঐতিহ্যপূর্ন পুজো হয়ে চলেছে। পাশে রয়েছে ওড়িশার এক ভক্তের দেওয়া তেরো ফুটের কষ্টি পাথরের শ্বশান কালীর মুর্তি। এখানে এখনও চলে বলি পর্ব। পুজোয় বলি দেওয়া পাঠার মাংস ও মদ দিয়ে তৈরি হয় দেবীর বিশেষ ধরনের ভোগ।
[আরও পড়ুন: হার মানছে অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিক আলো, দীপাবলিতে বাজার কাঁপাচ্ছে মাটির তৈরি প্রদীপ]
ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর দুই নম্বর ব্লকের বেলিয়াবেড়ার থানার আঁন্ধারিয়া গ্রামের বৈচিত্র্যপূর্ণ এই পুজো এখন পারিবারিক থেকে সার্বজনীন রূপ পেয়েছে। আঁন্ধারিয়া গ্রামের এই পুজোয় তিন প্রদেশের পূর্নার্থীরা আসেন। পুজোর দিন সীমান্ত বাংলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার ভক্তদের সমাগম হয়। এবার এই পুজো ৪৪ তম বর্ষে পড়ল। আঁন্ধারিয়া গ্রামের পানিগ্রাহী পরিবারের বয়স্ক কর্তা বিনোদ পানিগ্রাহী এবং তাঁর দুই ছেলে শিবশঙ্কর ও কালিশংঙ্কর পানিগ্রাহী দেবির পুজোপাঠ করেন।
আঁন্ধারিয়া শ্বশানকালি মন্দিরের প্রবীন পুরোহিত বিনোদ পানিগ্রাহী বলেন, সুবর্নরেখা নদীতে স্নান করতে গিয়ে পিতলের কালি মূর্তি পাই। এরপর স্বপ্নাদেশ পেয়ে মাটির কুঁড়ে ঘরে পুজো ও মায়ের আরাধনা শুরু হয়। এখন ভক্তদের দানে দেবীর পাকা মন্দির হয়েছে। এখন ৩৬৫ দিনই পুজো হয়ে আসছেন এই জাগ্রত মা কালীর। পুজোর দিন বাদ্যযন্ত্র সহকারে সংকীর্তন করে শ্বশান কালীর ঘট আনেন প্রধান পুরোহিত বিনোদ পানিগ্রাহী ও তাঁর সহযোগী পুরোহিতরা।
[আরও পড়ুন: অন্তর্বতী সরকারের নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু জানালেন আইন উপদেষ্টা]
এবারও পুজোর দিনে মা কে এখানে চামুণ্ডা রূপে, কালভৈরবী রূপে পুজো করা হয়। ঘট নিয়ে আসার সময় দর্শনার্থীদের নজরে পড়ার মতো ভিড় হয়। তারপর পুজো শুরু হয় দেবির। এছাড়াও পুজোয় ফল, মিষ্টি ছাড়াও ভক্তদের মানসিক করা পাঠার বলি দেওয়া হয়। সেই বলি দেওয়া পাঠার মাংস, চালকুমড়ো আর মদ ইত্যাদি দিয়ে দেবীর ভোগ হয়। বলি দেওয়া পাঠার মাংস দেওয়া ভোগ দিয়ে প্রায় পাঁচশো জনকে মন্দির প্রাঙ্গণে পংক্তি ভোজন করানো হয় পরের দিন। খাওয়ানো হয় খিচুড়ি ভোগও। আগে দু’তিন দিন ধরে যাত্রা সহ নানান স্বাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হত। এবারও জাঁকজমক ভাবে আয়োজন করা হয়েছে মায়ের পুজোর। জোর কদমে তারই প্রস্তুতি চলছে।