চিত্রঃ নিজস্ব গ্রাফিক্স
Bangla Jago Desk: দেবীর ৫১ পীঠের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান অসমের রাজধানী গুয়াহাটির নীলাচল পাহাড়ের ওপর অবস্থিত কামাখ্যা মন্দির(Kamakhya temple)। অপার রহস্যে ঢাকা এই মন্দির গোটা বিশ্বে সমাদৃত। অম্বুবাচীর সময় মন্দিরের দরজা সবার জন্য বন্ধ থাকে। এসময় দেবী ভগবতীর মন্দিরের গর্ভগৃহের দরজা আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যায়। এসময় দেবীদর্শন নিষিদ্ধ। চার দিনের মাথায় ফের মন্দির খোলে।
অম্বুবাচী শব্দের মধ্যে অম্বু শব্দের অর্থ জল আর বাচী শব্দের অর্থ প্রস্ফুটিত বা নারীর শারীরিক উর্বরতা বা সন্তান জন্ম দেওয়ার শক্তিকে বোঝায়। মহিলাদের ঋতুস্রাবজনিত অনেক নিষেধাজ্ঞা থাকে কিন্তু এই মন্দিরে মা ভগবতীর ঋতুস্রাব মহাসাড়ম্বরে পালন করা হয়।
[আরও পড়ুনঃ ISIS Kolkata Arrest: সিরিয়ায় সরাসরি যোগাযোগ কসবা থেকে! কলকাতায় থেকে গ্ৰেফতার ৩ সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি]
পুরাণ মতে, দেবী সতীর দেহের অঙ্গ যেখানে যেখানে পড়ে সেখানে একেকটা শক্তিপীঠ তৈরি হয়েছে।(Kamakhya temple) অসমের কামাখ্যা তেমনই এক গুরুত্বপূর্ণ শক্তিপীঠ তথা ১৮টি মহাশক্তিপীঠের অন্যতম। মনে করা হয়, অষ্টম শতকে তৈরি হয়েছে এই মন্দির। তবে এরপরে বেশ কয়েক বার মন্দির পুনর্নির্মিত হয়েছে। প্রজাপতি দক্ষ অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেয়ে সতীর সঙ্গে দেবাদিদেব মহাদেবের বিয়ে দেন। একবার যজ্ঞের আয়োজন করলেও জামাইকে অপমান করবেন বলে ইচ্ছাকৃত ভাবে আমন্ত্রণ জানাননি। শিবের বারণ সত্ত্বেও বিনা আমন্ত্রণে দক্ষের যজ্ঞ অনুষ্ঠানে যান সতী। শিবের অপমান সহ্য করতে না পেরে যজ্ঞের আগুনে আত্মাহুতি দেন। শোকে পাগল হয়ে যান দেবাদিদেব মহাদেব। সতীর দেহ কাঁধে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য শুরু করেন। রাগে উন্মত্ত দেবাদিদেব মহাদেবকে ঠান্ডা করতে ও পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সকল দেবতা ভগবান বিষ্ণুর শরণাপন্ন হন। শ্রীবিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ টুকরো টুকরো করেন। যেখানে সতীর দেহের অঙ্গ পড়ে সেখানে একেকটা শক্তিপীঠ গড়ে ওঠে। কামাখ্যায় সতীর যোনি পড়েছিল বলে মনে করা হয়।
[লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/Banglajagotvofficial/]
আষাঢ় মাসে সূর্যদেব আদ্রা নক্ষত্রে প্রবেশ করলে অম্বুবাচী উৎসব পালন করা হয়। অম্বুবাচীর সময় মনে করা হয় ব্রহ্মপুত্র নদের জল লাল হয়ে যায়। অম্বুবাচীর সময় কামাখ্যার মন্দিরের গর্ভগৃহের দরজা ৪ দিনের মাথায় ফের খুললে ব্রহ্ম মুহূর্তের সময় বিশেষ পুজো হয়। প্রথমে কামেশ্বরী দেবী ও কামেশ্বর শিব দর্শনের পর পুণ্যার্থীরা মহামুদ্রা দর্শন করেন। এখানে কোনো দেবী মূর্তি নেই। দেবীর যোনিরূপী একটি পাথরখণ্ড গুহার মধ্যে অবস্থিত। সেখানে অখণ্ড প্রদীপ জ্বলছে। কথিত, অম্বুবাচীর আগে গর্ভগৃহে দেবীর মহামুদ্রার চারপাশে সাদা কাপড় ভিজিয়ে দেওয়া হয়। মন্দির খুললেই দেখা যায় কাপড়ের রঙ লাল রঙে রঙিন। ভেজা থাকে সেই কাপড়। একে বলে অম্বুবাচী বস্ত্র।(Kamakhya temple)