ad
ad

Breaking News

Bhoot Chaturdashi

ভূত চতুর্দশী, ‘তেনাদের’ দিন, ভয় পায় তবু কেন ভূতের সিনেমা দেখতে ভালোবাসে দর্শক, কী বলছে বিজ্ঞান

মঙ্গলবার থেকে শুরু দীপাবলি উৎসব। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে পালন করা হয় ধনতেরাস। ঠিক তারপরদিন হয় নরক চতুর্দশী।

Bhoot Chaturdashi, the day of 'Tenader', is feared but why do the audience love to watch ghost movies, what science says

Bangla Jago Desk,মৌ বসু: মঙ্গলবার থেকে শুরু দীপাবলি উৎসব। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশী তিথিতে পালন করা হয় ধনতেরাস। ঠিক তারপরদিন হয় নরক চতুর্দশী। চতুর্দশী তিথিতে পালন করা এই বিশেষ দিনটি ভূত চতুর্দশী বলেও পরিচিত। ভূত শব্দের অর্থ অতীত। তেমনই এই দিনটি তেনাদের বা অশরীরীদের জন্য বিশেষ দিন হিসাবে পালন করা হয়৷ বিদেশে যেমন আছে হ্যালোউইন উদযাপন তেমনই ভূত চতুর্দশী বাঙালির নিজস্ব উৎসব। ভূতে ভয় পায় না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ভূত আছে কি না আছে তা নিয়ে চিরকালের এই বিতর্ক চলতেই থাকবে। প্রতি বছরই প্রায় বিভিন্ন ভাষায় হরর বা ভূতের সিনেমা রিলিজ হয়। ভয় পেলেও দর্শকরা দল বেঁধে সিনেমা হলে কিংবা নিজস্ব পরিসরে চ্যানেলে বা ওটিটি সিরিজে ভূতের সিনেমা দেখতে ভালোবাসেন।

[আরও পড়ুনঃ হিন্দুদের আলোর উৎসব দীপাবলি শিখদের কাছে স্বাধীনতার লড়াইয়ের উদযাপন

কিন্তু ভয় পেলেও কেন মানুষ এসব সুপারন্যাচারাল হরর সিনেমা দেখতে ভালোবাসে? কী বলছে বিজ্ঞান? আসলে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাধারা বিশ্লেষণ করলেই দেখা যায় এর উত্তর লুকিয়ে আছে মানুষের মনেই। বাস্তব জীবনে যে উত্তর আমরা চাই না বা এড়িয়ে যাই, সেই অন্ধকার দিকের উন্মোচন হয় ভূতের সিনেমার মাধ্যমে। এই ভয় পেতে গিয়ে কৌতুহল তৈরি হয় মনে। অ্যাড্রেলিন হরমোনের নিঃসরণ হয়। নিজস্ব চেনা পরিসরে মানুষ ভয় পেতে ভালোবাসে। এতে একরকমের মজা বা থ্রিল অনুভব হয়। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, মানুষ ভূতের সিনেমা দেখে ভয় পেতে ভালোবাসে কারণ তারা জানে তারা নিরাপদ সুরক্ষিত জায়গায় নিজস্ব চেনা পরিসরে বসে দেখছে।

কোনো বিপদ ভয় নেই। বিপদে না পড়েও বিপদের অনুভূতি অনুভব করার নেশা পেয়ে বসে দর্শকের মনে। ভয়ের ‘রোলার কোস্টার রাইডে’ চড়তে ভালোবাসে দর্শক। ভূতের সিনেমা দেখতে গিয়ে যে সাসপেন্স তৈরি হয় তাতে অ্যাড্রেলিন হরমোনের নিঃসরণ হয়। টেনশনে হৃদযন্ত্রের গতি বেড়ে যায়, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়, হাতের তালু, কপালে ঘাম ফুটে ওঠে, পেশি শক্ত হয়, পালস রেট বেড়ে যায়। জীবন যখন আছে তেমনই মৃত্যুও অবশ্যাম্ভাবী। কিন্তু মৃত্যু সম্পর্কে কৌতুহল আমাদের মনে প্রবল। এই অজানাকে জানার সুযোগ করে দেয় ভূতের সিনেমা। যারা জীবনে থ্রিলার পছন্দ করে তাদের কাছে রোমান্টিক সিনেমার কোনো দাম নেই তারা ভূতের সিনেমা দেখে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা ও থ্রিলারের অনুভূতি পেতে ভালোবাসে।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, ভয়ের সিনেমা আসলে এসকেপিজম বা বাস্তব জীবনের জটিলতা এড়ানোর সুযোগ খুঁজে দেয়। যাঁরা ভূতের সিনেমা দেখতে ভালোবাসেন বা পছন্দ করেন তাঁদের ইংরেজিতে বলে “horrorphile”। গ্রিক শব্দ phile থেকে এসেছে horrorphile কথাটি। এর মানে ভালোবাসা। হররফিল গোত্রের মানুষ ভূতের সিনেমা, গল্প দেখতে ও পড়তে ভালোবাসেন। ভয় পেতে পছন্দ করেন। আসলে ভূতের বা ভয়ের সিনেমা দেখার প্রবণতা এখনকার নয়। এই ভয় পাওয়ার প্রবণতা শতাব্দী প্রাচীন।

[আরও পড়ুনঃ মায়ের কাছে মন থেকে চাইলেই মেলে বেকারত্ব থেকে মুক্তি, জানুন সার্ভিস কালীর কী মাহাত্ম্য

প্রাচীন গ্রিক সাহিত্যে মনস্টার, ভূত, সুপারন্যাচারালের উল্লেখ আছে। তেমনই ১৮-১৯ শতকের গথিক সাহিত্যে ভয়ের বাতাবরণ আছে। আসলে ভয়ের সিনেমার সেটিং হয় এমন একটা সময় যা দেখলে মানুষ বাস্তবের মাটি থেকে হারিয়ে যায়। উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা, অবসাদ কাটিয়ে, জীবনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি না হয় মানুষকে অন্য জগতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিতে সাহায্য করে এসব সিনেমা। আবার অতীতের কোনো ট্রমাটিক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলেও মানুষ ভয় পেতে ভালোবাসে।